ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪

নারীদের বিশেষ দুটি দোষ সংশোধনের তাগিদ দেয় ইসলাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৮, ২৯ মে ২০২০

মুসলিম নর-নারীর জীবন পরিচালিত হবে আল্লাহর দেওয়া গ্রন্থ কোরআনের আলোকে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এর মধ্যেও নারীদের মধ্যে দুটি দোষ বেশি পরিলক্ষিত হয়। এক. বেশি বেশি অভিশাপ দেয়া। দুই. না শোকরীর মনোভাব বেশি। এগুলো পরিহারের জোড় তাগিদ দিয়েছে ইসলাম।

বোখারী শরীফের এক হাদীছে এসেছে, একবার রাসূল সাল্লাল্হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের এক মজলিসে ওয়াজ করছিলেন। ওয়াজের এক পর্যায়ে নারীদের উদ্দেশ্যে বললেন : ‘হে নারীরা! তোমরা বেশি বেশি করে দান-সদকা কর। কারণ জাহান্নামে দেখেছি তোমাদের সংখ্যা বেশি। দান-সদকার কারণে তোমাদের পাপ মোচন হবে। এভাবে তোমরা জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে।’

তখন এক বুদ্ধিমতী মহিলা জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা নারীরা জাহান্নামে সংখ্যায় বেশি থাকব, তার কারণ কী? তখন রাসূল (সা.) বললেন : ‘তার বিশেষ দুটো কারণ- এক হলো তোমরা বেশি বেশি অভিশাপ দাও। আর এক হলো তোমরা স্বামীর না শোকরী কর।’

বাস্তবেও আমরা দেখতে পাই নারীদের মধ্যে এই দুটো বদ-অভ্যাস খুব বেশি। তারা মানুষকে খুব বেশি অভিশাপ দেয়। কথায় কথায় অভিশাপ দেয়। কোন ব্যাপারে ধৈর্য্যহারা হয়ে নিজের ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজনকেও অভিশাপ দেয়। এমনকি আদরের সন্তানকেও কথায় কথায় অভিশাপ দেয়। কোন ব্যাপারে সন্তান অন্যায় করলে অতিষ্ঠ হয়ে বলতে থাকে- ‘তুই মর, আজরাইল তোকে চোখে দেখে না? তোর কলেরা হোক, মরতে পারিস না’ ইত্যাদি ভাষায় অভিশাপ দিতে থাকে। 

এরকম অভিশাপ দেওয়া মহিলাদের একটা বদ-অভ্যাস। এগুলো আল্লাহ পছন্দ করেন না। দিনের এমন কিছু সময় আছে, সেসব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া কবুল হয়ে
যায়। আপনার এই অভিশাপ যদি আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যায়, তাহলে সন্তান ও ভাইবোনের ক্ষতি মানেই তো আপনার নিজেরই ক্ষতি। ধৈর্য্যহারা ও অতিষ্ঠ হওয়া তো সাময়িক ব্যাপার। এর জন্য বড় কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হওয়াই ভালো। আর অপরের ক্ষতির কারণ যদি আপনি হয়ে যান, তাহলে এর দায়-ভার আপনাকেই টানতে হবে। কিয়ামতের দিন এর জবাবদিহি করতে হবে।

নারীদের আরেকটি বদ-অভ্যাস হলো স্বামীর না শোকরী করা। একজন স্বামী সারা জীবন তার স্ত্রীকে পছন্দসই কাপড়-চোপড় দিবে, এরপর কোন একবার যদি আর্থিক টানাটানি বা কোন কারণে এমন কিছু দিল যা স্ত্রীর তেমন পছন্দ হলো না, ব্যস! বলে বসবে জীবনে কোন দিন পছন্দসই কিছু দিলে না, সারা জীবন এই রকম বাজে জিনিস দাও, যা কোন মানুষের রুচিতে ধরে না ইত্যাদি। 

এছাড়া আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে যদি কেউ খারাপ অবস্থায় থাকে, তাকে যদি কিছু সাহায্য-সহযোগিতা স্বামীর পক্ষ থেকে করা হয়। তাহলেও নারীরা বিভিন্ন রকম না শোকরী কথাবার্তা বলে থাকেন। কিন্তু আত্মীয়-স্বজনেরও আপনাদের ওপর হক আছে। এই হক আদায় করার জোড় তাগিদ রয়েছে ইসলামে। শুধু নিজেরা ভোগ-বিলাস করলাম, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশির দিকে তাকালাম না, ইসলাম কিন্তু তা নয়। এর জন্যও আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

অপরদিকে এই না শোকরীর মনোভাব থেকে আল্লাহর নেয়ামতের না শোকরী পয়দা হবে। মানুষের না শোকরী করার মনোভাব থেকে আল্লাহ পাকের না শোকরী করার মনোভাব এসে যাবে। আল্লাহর বান্দা আমাকে সারা জীবন কি দিল তা দেখলাম না, বরং একবার কি দিল না তাই দেখলাম- এ থেকে এই অভ্যাস আসবে যে, আল্লাহ আমাকে কত নেয়ামত দিয়েছেন, সেগুলো দেখব না, বরং কি দেননি শুধু সেটা দেখব। এর থেকেই আল্লাহর না শোকরী আসবে। আল্লাহ এই না শোকরী পছন্দ করেন না।

হাদীছে এসেছে, ‘যে মানুষের শোকর আদায় করে না, সে আল্লাহর শোকরও আদায় করতে পারে না।’

না শোকরী করা মারাত্মক গোনাহ। আল্লাহর না শোকরী করা কবীরা গোনাহ, বান্দার না শোকরী করাও কবীরা গোনাহ। আর শোকর আদায় করা ওয়াজিব। আল্লাহর নেয়ামত বা অনুগ্রহের শোকর আদায় করা ওয়াজিব। এমননিভাবে যে কোন মানুষ অনুগ্রহ করলে তার শোকর আদায় করা ওয়াজিব।

নারীদের এই দুই ধরনের দোষ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য জোড় তাগিদ দিয়েছেন নবী করীম সাল্লাল্হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি