ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আজ হানাদার মুক্ত হয় আশুগঞ্জ, হিলি ও কুষ্টিয়া

প্রতিনিধিদের খবর

প্রকাশিত : ১০:২১, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, দিনাজপুরের হিলি ও কুষ্টিয়া। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। শত্রুমুক্ত হলে এলাকার জনতা আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ১শ’ ৪৭ জন সেনাবাহিনী স্বশস্ত্র অবস্থায় কুষ্টিয়ায় এসে অবস্থান গ্রহণ করে। ২৬ মার্চ সান্ধ্য আইন ভাঙ্গায় চারজন নিরিহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং ২৭ মার্চ একজন ছাত্র শহীদ হয়। 

এ ঘটনার পর সাধারণ ১০ ডিসেম্বর শহরের চৌড়হাসে মুক্তিবাহিনী-মিত্রবাহিনীর যৌথভাবে পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ হয়। এতে পাকিস্তান বাহিনীর ৩০ জন, মিত্রবাহিনীর ৭০ জন এবং মুক্তিবাহিনী ৭ জন নিহত হয়। 

শত্রু মুক্ত হয় কুষ্টিয়া। 

সন্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয় ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হিলিতে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দিনাজপুরের হিলিতে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা পাক সেনাদের বিরুদ্ধে স্থল ও আকাশপথে একযোগে হামলা চালায়। 

এসময় ৩৪৫ জন ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্য ও দেড় শতাধিক নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। 

প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ১১ ডিসেম্বর ৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় ভারত সীমান্তবর্তী হিলি শত্রু মুক্ত হয়।

১৯৭১ সালের এদিনেই পাক হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে আশুগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যরা।

তৎকালীন লে. কর্ণেল কে.এম. সফিউল্লাহ, লে. মো. হেলাল মোর্শেদ খান, মেজর আইন উদ্দিন ও মেজর নাসির প্রমুখ বীর সেনানীর সুসংগঠিত নেতৃত্ব সর্বস্তরের বীর জনতা পাক হানাদরদের হাত থেকে আশুগঞ্জকে মুক্ত করেছিলেন।

আশুগঞ্জকে মুক্ত করতে গিয়ে সেদিন পাক হানাদারদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন সুবেদার মেজর সিরাজুল ইসলাম, ল্যান্সনায়েক আব্দুল হাই, সিপাহী কফিল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরসহ আরও অনেকে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অধিকাংশ এলাকা শত্রুমুক্ত হওয়ার পর একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্র বাহিনী বর্তমান আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রাম দিয়ে আশুগঞ্জ সদরে প্রবেশ করে। সর্বশেষ যুদ্ধ সংগঠিত হয় আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুরে। 

তিনদিন তুমুল সম্মুখযুদ্ধে অর্ধ সহস্রাধিক মিত্রবাহিনী ও পাকবাহিনীর সদস্য নিহত হয়। ভয়াবহ যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর তিনটি ট্যাংক ধ্বংস হয়। শেষ পর্যন্ত মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর ভয়াবহ আক্রমণে টিকতে না পেরে ১০ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে আশুগঞ্জ থেকে পাক সেনারা পালিয়ে যেতে শুরু করে। 

পালিয়ে ভৈরব যাওয়ার সময় মেঘনা নদীর উপর রেল সেতুটির একাংশ ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এতে সেতুটির দুটি স্প্যান ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। ১১ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ উপজেলা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়।

প্রতিবছরের মত এবারও দিবসটি পালন উপলক্ষে আশুগঞ্জ উপজেলা মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটি ১১ ডিসেম্বর দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে র‌্যালি, বিকালে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি