ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা আঘাত হানে বাঙালি সত্ত্বায় (ভিডিও)

আকবর হোসেন সুমন

প্রকাশিত : ১২:১৬, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৩:১৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

বাংলার পরিবর্তে উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা- ব্যাপারটিকে দাসত্ব মনে করেছিল অসাম্প্রদায়িক বাঙালিরা। আর তাই ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার লড়াইয়ে যুথবদ্ধ হয়েছিলেন বাংলার দামালেরা। 

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ বিভাজিত ভারতবর্ষে প্রথম বিতর্ক উঠেছিল ভাষা নিয়ে। বাংলা-উর্দু-আরবি ও ইংরেজির প্রবাহমানতায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছিল একটি পক্ষের। যাদের উদ্দেশ্যই ছিল রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টি।

পাকিস্তান রাষ্ট্রগঠনের পর ঘোষিত রাষ্ট্রভাষা উর্দুর সুবিধাভোগীরা রাজনীতি ও অর্থনীতির অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। এতে উদ্বেগ বাড়তে থাকে বাংলাভাষীদের। দু’হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভুখণ্ডের মানুষের সংস্কৃতির পার্থক্য নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। 

আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন। অতপর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর জোরালো ঘোষণা আঘাত হানে বাঙালি সত্ত্বায়। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ এবং তমুদ্দুন মজলিসের প্রাতিষ্ঠানিক আন্দোলনের পাশাপাশি ব্যক্তি বিশেষও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের আগেই উচ্চারিত হয়েছিলো মাতৃভাষা বাংলায় বিনা খরচে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিকারের প্রসঙ্গ। অভিন্ন দাবিতে প্রথম বৈঠকটি হয়েছিলো কোলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের একটি কক্ষে। যে বৈঠকের অন্যতম নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য। পাকিস্তান সৃষ্টির ৬ মাস পর ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি করাচিতে গণপরিষদের অধিবেশনে উর্দু এবং ইংরেজি ভাষার ব্যবহার শুরু হলে তার প্রতিবাদ করেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। 

বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়ে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন অলি আহাদ। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্তও জানিয়েছিলেন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। 

আরেকজন ভাষাসৈনিক আবু নছর মোহাম্মদ গাজীউল হক। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। 

২৪শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সমাবর্তনে জিন্নাহর উচ্চারণে প্রথম উচ্চকণ্ঠের প্রতিবাদ ‘নো নো’ ধ্বনিত হয়েছিল। দুঃসাহসিক এই কাজটি যিনি করেছিলেন তাঁর নাম আবদুল মতিন। 

একুশে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙা ছাত্রনেতাদের অন্যতম রওশন আরা বাচ্চু। তাঁর নেতৃত্বেই ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমাবেশস্থলে সমবেত হন।

ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের ভিপি এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন ডা. গোলাম মাওলা।  প্রথম শহীদ মিনারের ভিত্তি স্থাপনকারী ভাষা সৈনিকদের অন্যতম ডা. গোলাম মাওলা। 

সরদার ফজলুল করিম, অধ্যাপক অজিত কুমার গুহ, পুলিন দে, অধ্যাপক পৃথিশ চক্রবর্তী, কাজী গোলাম মাহবুবসহ ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিকদের ভূমিকা স্বাধীন বাংলাদেশের পথ পরিক্রমায় আজও আহ্বান। 

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি