ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক বঙ্গবন্ধু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪০, ৩ আগস্ট ২০২০

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মাত্র ৫৫ বছরের জীবন তাঁর। কিন্তু এত কম সময়ে কত বড় কাজ করে গেছেন তিনি তা কল্পনাও করা যাবে না। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালিকে একতাবদ্ধ করে স্বাধীনতার স্বর্ণদ্বারে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাঙালির প্রথম জাতিরাষ্ট্র— স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। কৃতজ্ঞ জাতি সঙ্গতভাবেই তাঁকে স্বীকৃতি দেয় জাতির পিতা হিসেবে, বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে। আর বাংলার মানুষ ভালোবেসে তাঁকে অভিহিত করে ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে।

অসাম্প্রদায়িকতা ছিল বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের একটা বিশেষ গুণ। ১৯৪৬ সালে যখন কলকাতায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হলো, তখন বঙ্গবন্ধু দাঙ্গাপীড়িত এলাকায় গিয়ে কাজ করেছেন, হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সহায়তা করেছেন। পাকিস্তান আন্দোলন করলেও তিনি কখনো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেননি। ১৯৫৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দেওয়া এবং ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে সেটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুুয়ারি বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে তার প্রথম ভাষণেই বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মীয় ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।’ তাই স্বাভাবিকভাবেই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে জাতীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতাকেও যুক্ত করা হয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনে বঙ্গবন্ধু সত্যিকার অর্থে ধার্মিক ছিলেন, কিন্তু কখনো সাম্প্রদায়িক ছিলেন না। কোনো প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক হতে পারেন না।

বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে তার মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নের মহাসোপানে স্থাপন করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অভাবিত উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য করা গেছে, যে ক্ষেত্রেই উন্নয়ন করা হচ্ছে- বঙ্গবন্ধু কিন্তু তার দূরদৃষ্টি দিয়ে সব ক্ষেত্রেই কাজের সূচনা করে গেছেন, স্বপ্নের বীজ বপন করে গেছেন। ভেবে বিস্মিত হতে হয়, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে ধ্বংস্তূপ থেকে গড়ে তোলার সময়েই বঙ্গবন্ধু কল্পনা করেছিলেন, একদিন বাংলাদেশ আদর্শ একটি দেশ হবে। তাই কল্যাণকর সকল ক্ষেত্রে কাজের শুভ সূচনা করেছিলেন। কিন্তু নিষ্ঠুর ঘাতকেরা তাকে সুযোগ দিল না তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার। এভাবে যে তাকে বাঙালির হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হবে— এটা তিনি যেমন কোনোদিন কল্পনা করেননি, আমরাও তা ভাবতে পারিনি।

বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার জন্য মিথ্যার জাল বুনে তাকে আড়াল করে রাখার অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সকল মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র নস্যাত করে বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে তার স্মৃতি দিন দিনই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছে। নতুন প্রজন্ম তার জীবনের কথা, অবদানের কথা জেনে হূদয়ঙ্গম করতে পারছে কেন বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বলা হয়।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি