ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

এ বিজয় জনগণের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০৭, ৯ মার্চ ২০২০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনে এই বিজয় আমার নয়, আমার দলেরও নয়, এই বিজয় বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের যাঁহারা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করিয়াছেন। ১৯৭৩ সালের ৮ মার্চ গণভবনের সবুজ চত্বরে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সহিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে তাঁহার দলের ঐতিহাসিক বিজয় সম্পর্কে আলোচনাকালে এই মন্তব্য করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

এক প্রত্যয়দৃঢ় সহাস্য কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসি এবং তাঁহারা আমাকে ভালোবাসেন- অতীতের মতো এবারের নির্বাচনেও তাহা আবার প্রমাণ হইয়া গেল। আমার সরকার যে নীতি গ্রহণ করিয়াছে এবং ভবিষ্যতে যে নীতি গ্রহণ করিবে জনগণ তাহার প্রতি তাঁহাদের সমর্থন ঘোষণা করিয়াছেন।

তিনি আরও বলেন, জনগণ ৪টি রাষ্ট্রীয় নীতি, সংবিধান এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতির প্রশ্নে তাঁহাদের রায় ঘোষণা করিয়াছেন। তাঁহার সরকারের নির্বাচনোত্তর কর্মসূচি কি হইবে জানিতে চাহিলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুধা হইতে মানুষকে মুক্ত করাই হইবে প্রথম কাজ। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকেরা যেসব সমস্যার সৃষ্টি করিয়া গিয়াছে তাহা হইতে দেশকে মুক্ত করিতে হইবে। তিনি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার আয়ত্তে আনয়নের ব্যাপারে সরকারের সহিত সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বিরোধী দল প্রসঙ্গে
নির্বাচনে বিরোধী দলসমূহের পরাজয় সম্পর্কে তাঁহার মন্তব্য জানিতে চাওয়া হইলে তিনি বলেন, জনগণের আস্থা অর্জন করিতে হইলে তাহাদের জন্য দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করিতে হয়। জনগণের পার্শ্বে থাকিয়া তাঁহাদের জন্য কাজ করিতে হয়। হঠাৎ করিয়া জনগণের সমর্থন পাওয়া যায় না।

তিনি দৃঢ়তার সহিত বলেন যে, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হইয়াছে এবং নির্বাচন উপলক্ষে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা সঙ্ঘটিত হয় নাই। তিনি আরও বলেন যে, সকল দলই তাঁহাদের বক্তব্য যথাযথভাবে জনগণের নিকট তুলিয়া ধরিয়াছেন। এমন কি, স্বাধীনতার পর পরই গণতন্ত্র চালু এবং সরকারের নীতির সমালোচনা করার অধিকার দিতেও কুণ্ঠিত হয় নাই সরকার। ইহার পরও যদি তাঁহারা ভোট না পান তবে আমি কি করিতে পারি? তবে কি আমাকে ভোট দিতে বলেন?

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে
পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু সুদৃঢ় কণ্ঠে বলেন যে, খুব শীঘ্রই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হইবে।

জনৈক বিদেশি সাংবাদিক দালাল আইনে আটক ব্যক্তিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হইবে কিনা জিজ্ঞাসা করিলে প্রধানমন্ত্রী তাঁহাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন : আপনাদিগকে তো পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের অবস্থা সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করিতে শুনি না। তিনি বলেন, কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা তো আটক বাঙালিদের দেখাশোনা করে না। আটক বাঙালিগণ বন্দি শিবিরে অনাহারে-অনিদ্রায় এক দুঃসহ জীবন যাপন করিতেছে। অথচ পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য ঘোষণাকারী অবাঙালিদের আন্তর্জাতিক রেডক্রস সমিতি যথাযথভাবে দেখাশোনা করিতেছে।

সূত্র : এই দেশ এই মাটি গ্রন্থ (গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ের বক্তৃতা, বাণী, নির্দেশ ও সাক্ষাৎকার নিয়ে রচিত)

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি