ঢাকা, রবিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

একজন হাজেরার গল্প

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২০:৩৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

হাজেরা খাতুন। বয়স ৯০ ছুঁই ছুঁই। থাকেন রাজধানীর রামপুরা হাতিরঝিল সংলগ্ন উলুন বস্তিতে। এ পৃথিবীতে হাজেরা খাতুনের আপন বলতে তেমন কেউ নেই। একমাত্র মেয়ে সেও মারা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। মৃত্যুর সময় রেখে যান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক মেয়েকে। ১৩ বছরের নাতনীকে নিয়ে হাজেরা খাতুনের অভাবের সংসার।

এক সময় মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হাজের এখন আর কাজ করতে পারছেন না। তাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নাতনী ও নিজের ক্ষুধার অন্ন যোগাতে জীবন সায়াহ্নে এসে ভিক্ষার থালা হাতে নিতে হয়েছে হাজেরা খাতুনকে।

অন্যদের মত চিৎকার করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন না তিনি। তাই রাস্তার পাশে জরো সরো করে বসে থাকেন। ফলে দিন শেষে তেমন রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয় না। অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হয় তাকে। মাস শেষে বস্তির ঘর  ভাড়া ১৫০০ টাকা দিতে পারেন না তিনি।

হাজেরা খাতুনের এমন পরিস্থিতি দেখে এগিয়ে আসেন দুই কলেজ ছাত্র মাহবুব হাসান রাতুল এবং তার বন্ধু মিরাজুল ইসলাম। প্রায়শ তারা হাজেরা খাতুনের পাশে দাঁড়িয়ে “নানীর জন্য সাহায্য করুন” বলে ভিক্ষার থালা নিয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চান।

রাতুল এবং মিরাজ ইটিভি অনলাইনকে জানান, “গত তিন মাস আগে হাতিরঝিলে তাকে (হাজেরা খাতুনকে) অসহায় অবস্থায় দেখতে পাই। এরপর থেকে আমরা নিয়মিতভাবেই তাঁকে দেখাশুনা করি। এই শীত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য হাত মোজা ও চাদর কিনে দিয়েছি।”

তারা  আরও বলেন, ফেসবুকে এই নিয়ে পোস্ট দিলে অনেকে লাইক কমেন্ট`স করেন। কিন্তু কেউ তেমন সাহায্য করেন না। হাজেরা খাতুনের পাশে প্রতিদিন থালা নিয়ে বসেন আরেক জন বয়োবৃদ্ধ নারী রহিমা। তিনিও বয়সের ভারে নুব্জ।

রাতুল এবং মিরাজ লেখাপড়ার পাশাপাশি হাজেরা খাতুনসহ অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করেন।  ‘হেল্প দ্যা পুউর` নামে তাদের একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপের উদ্যোগে আগামী ১৪ জানুয়ারি রাজধানীতে তারা শীত বস্র বিতরণ করবেন।

 

কেআই/টিকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি