ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঐতিহ্যবাহী মিঠাপুকুর, জেনে নিন ইতিহাস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০২, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

উত্তরের জেলা রংপুরের অন্যতম উপজেলা মিঠাপুকুর। রাজধানী ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহর রংপুরে  প্রবেশের ঠিক ২০ কিলোমিটার আগেই এর অবস্থান। এই উপজেলার নামটি মূলত মুঘল আমলে খনন করা একটি পুকুরের নাম থেকেই এসেছে। 

কথিত আছে ১৬৬২সালে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আদেশে সেনাপতি মীর জুমলা কোচ বিহার ও আসাম অভিযান কালে মিঠাপুকুরে এসে অবস্থান নেন। 

এ সময় মীর জুমলা তার বিশাল সৈন্য বাহিনীর সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। অবশেষে মিঠাপুকুর মৌজায় শাহ ইসমাইল গাজীর আমলের (৪৫৯-১৪৭৪ইং) খনন করা চারটি ছোট ছোট পুকুরের অস্তিত্ব পান তিনি। সেই চারটি পুকুর নতুন করে খনন করে বড় একটি পুকুরে রূপান্তর করে মীর জুমলার ন্যৈ বাহিনী। যার আয়তন ৩০ একর। 

পুকুরটি অবস্থান বর্তমান মিঠাপুকুর থানা ও কলেজের ঠিক পেছনে। খননের পর পুকুরের পানি খাওয়ার উপযোগী ও সুস্বাদু হওয়ায় মীর জুমলা পুকুরটির নাম রেখেছিলেন মিঠাপুকুর।

পুকুরকে ঘিরে ঐ এলাকায় ধীরে ধীরে জনবসতি গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পুরো এলাকার এবং এক পর্যায়ে উপজেলার নামটিও মিঠাপুকুর হয়ে যায়।

শুধু মিঠাপুকুরের কারণেই নয় আরও কিছু কারণে বাংলার ইতিহাসে জড়িয়ে আছে এই উপজেলা। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মও এই উপজেলারই পায়রাবন্দ গ্রামে। 

বেগম রোকেয়ার বাড়ির পাশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩.১৫ একর ভূমির উপর বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে আছে নান্দানিক বাগান, অফিস ভবন, ৪ তলা ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি, আধুনিক গেস্ট হাউজ এবং পিতলের তৈরি বেগম রোকেয়ার ভাষ্কর্য। এই জায়গাটিও ঘুরে দেখতে পারেন। তবে বেগম রোকেয়ার পৈত্রিক বাড়িতে বর্তমানে ইটের দেয়ালের গাথুনি ছাড়া কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।

যারা ঐহিত্যবাহী উপজেলা মিঠাপুকুর ঘুরতে যাবেন তারা অবশ্যই আরেকটি জায়গাও ঘুরে দেখবেন, সেটি হল মোঘল স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি তিন গম্বুজ মসজিদ, যা বড় মসজিদ নামে পরিচিত। 

১৮১০ সাল কিংবা তারও আগে নির্মিত এই মসজিদে চার কোণে চারটি স্তম্ভ যা ছাদের কোণা থেকে বেশ উপরে উঠে গেছে। আর ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি গোলাকার গম্বুজ। মসজিদের পূর্ব দিক দিয়ে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশ পথ থাকলেও এখন পূর্ব দিকের মাঝের পথটি ব্যবহার করা হয়। আয়তনে ছোট হলেও মসজিদটিতে এখনও তিন কাতারে নামাজ আদায় হয়। 

নির্মাণের পর থেকে বেশ কয়েকবার সংস্কার হয়েছে মসজিদটি। তবে ঐহিত্য ধরে রাখতে এখনও লালচে সুরকি রঙেই রাঙানো রয়েছে পুরো মসজিদ।  

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি