ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘কঠিন পরিস্থিতিতে শান্তভাবে আগানোর শিক্ষা দিয়েছেন তিনি’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৫৬, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২৩:১১, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

স্যার ফজলে হাসান আবেদ- ফাইল ছবি

স্যার ফজলে হাসান আবেদ- ফাইল ছবি

ব্রাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যুতে বাংলাদেশ এক মহান ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে। তার প্রতিষ্ঠান ব্রাক বলছে, ‘এ মুহূর্তে, কোনো সমবেদনা বা সান্ত্বনার ভাষাই তাকে হারানোর কষ্ট কমাতে পারবে না। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে শান্ত থাকা ও এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষাই তিনি সবসময় আমাদের দিয়েছেন। জীবনভর যে সাহস আর ধৈর্যের প্রতিচ্ছবি আমরা তার মাঝে দেখেছি, সেই শক্তি নিয়েই আমরা তাঁর স্মৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান জানাব।'

১৯৭২ সালে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাকালে সিলেটের মার্কুলিতে ফজলে হাসান আবেদ। ছবি: ব্র্যাকের সৌজন্যে


শুক্রবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে অ্যাপোলো হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে এবং তিন নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।

২০০২ সালে ব্র্যাকের মাঠ কার্যক্রম পরিদর্শনকালে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তাঁর স্ত্রী চেরি ব্লেয়ারের সঙ্গে ফজলে হাসান আবেদ। ছবি: ব্র্যাকের সৌজন্যে

ব্র্যাক সূত্রে জানা যায়, আগামী পরশু ২২ ডিসেম্বর (রোববার) সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তাঁর মরদেহ ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। দুপুর সাড়ে বারোটায় আর্মি স্টেডিয়ামেই নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজার পর ঢাকার বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। ফজলে হাসান আবেদ গত নভেম্বর থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। 

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের বাবা সিদ্দিক হাসান (বাঁয়ে বসা), চাচা আতিকুল হাসান (ডানে বসা) এবং তাঁদের (সিদ্দিক হাসান ও আতিকুল হাসান) মামা নওয়াব জাস্টিস স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা কেসিআইই (মাঝে বসা)। ছবি: পারিবারিক অ্যালবাম থেকে

ব্র্যাক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন এবং দারিদ্র বিমোচনে কাজ করে এটি।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ গত বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। তিনি গত অগাস্টে ব্র্যাকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তবে এরপর তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ার এমেরিটাস হিসেবে ছিলেন।

২০০৫ সালে ব্র্যাকের কর্মসূচি পরিদর্শনকালে মাইক্রোসফট করপোরেশনের কর্ণধার বিল গেটস, তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস এবং গ্রাম সংগঠনের নারীদের সঙ্গে ফজলে হাসান আবেদ। ছবি: ব্র্যাকের সৌজন্যে

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের জন্ম হয় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সিলেটের শাল্লায় যুদ্ধে বিধ্বস্ত একটি জনপদের মানুষজনের জন্য ত্রাণ সহায়তা দিতে কাজ শুরু করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিটি বা ব্র্যাকের। তবে ১৯৭৩ সালে যখন পুরোদস্তুর উন্নয়ন সংস্থা হিসাবে ব্র্যাক কার্যক্রম শুরু করে, তখন তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি।' তবে সংক্ষিপ্ত নাম ব্র্যাকই থাকে।

২০১০ সালে নাইটহুড উপাধি গ্রহণ। ছবি: সংগৃহীত

রীতিমত বর্ণিল কর্মজীবন ছিল স্যার ফজলে হাসান আবেদের। তার প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক ক্রমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংস্থায় পরিণত হয়। ক্ষুদ্র ঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন এবং বাল্যবিবাহ রোধসহ সহ নানা খাতে কাজ করেছেন তিনি।

২০১৬ সালে রোমে টাইম ম্যাগাজিনের সহকারী ম্যানেজিং এডিটর রানা ফরুহারের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ছবি-সংগৃহীত

১৯৩৬ সালে বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেল অয়েলে কয়েক বছর কাজ করেন।

এমএস/আরকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি