ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

‘কফি রাস্ট’ রোগে বন্ধ হচ্ছে কফি উৎপাদন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪৩, ৭ নভেম্বর ২০১৭

কফি রাস্ট রোগের কারণে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে কফি চাষ। এতে কফি উৎপাদন ও রপ্তানিতে শীর্ষ দেশগুলোও ক্রমান্বয়ে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়ছে। এতে কফির দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। সম্প্রতি কানাডার একদল গবেষক এমন তথ্য দেন। কফি রাস্ট রোগের কারণ ও তা প্রতিরোধে করণীয় বিষয় নির্বাচনে বহু বছর ধরে তারা গবেষণা চালিয়ে আসছেন।

৬০ এর দশকে কানাডার বোগোটায় বিমানবন্দরের পাশে টাঙ্গানো বড় বড় বিলবোর্ড দেখা যেতো। এতে বড় অক্ষরে লেখা থাকতো, কফি রাস্ট (কফির এক ধরণের রোগ) হলো আমাদের শত্রু, বিদেশ থেকে কফির কোন বীজ আনবেন না ।

কলম্বিয়ার কফি ব্যবসাকে সমৃদ্ধ করা ও তাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিদেশ থেকে কফির বীজ বা চারা আমদানি নিষিদ্ধ ছিল তখন।

কফি রাস্ট হলো এমন একটি রোগ যেটি দেশের জাতীয় সম্পদ কফির বাজারকে সঙ্কুচিত করে ফেলতে পারে। কফি রপ্তানি করে বিদেশি মুদ্রা আয় করা কানাডা অর্থনৈতির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।

গত বছর কানাডা কফি রপ্তানি করে ২.৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে, যা তার রপ্তানি আয়ের ৭.৭ শতাংশ। এতে কফি রপ্তানিতে কানাডা বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে।

বলা হচ্ছে, কানাডার কফি উৎপাদন রাস্ট (কফির পাতা বিবর্ণ হওয়া রোগ) রোগে আক্রান্ত হলে বিশ্বে কফির প্রবাহ কমে যাবে। এতে বিশ্বে কফির মূল্য অনেকগুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আর এ রোগটির কারণ সনাক্ত ও তা প্রতিরোধকল্পে  কলম্বিয়ার বিজ্ঞানীরা কয়েক যুগ ধরে গবেষণা চালিয়ে আসছে। কলম্বিয়ার এক কফি উৎপাদনের পাহাড়ে তারা এ গবেষণাকর্ম চালিয়ে আসছিলেন। তাঁদের প্রশ্নের বিষয় ছিল, কলম্বিয়া কফির স্বাদ কি, তারা ঠিকিয়ে রাখতে পারবে?

কফি রাস্ট দেখতে অনেকটা ধূসর বর্ণের পাওডারের মতো যেটি পাতার উপর পড়ে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কফি রাস্ট কৃষকদের ভোগাচ্ছে। যখন একটি গাছ এ রোগে আক্রান্ত হয়, তখন এর পাতা বাদামী ও পাতলা পাওডার উৎপাদন করে, যা অনেকটা জং এর মতো দেখায়। রোগটি এক ধরনের ছত্রাক (হেমেলিয়া ভ্যাসটাটিক্স) এর কারণে হয়ে থাকে। ছত্রাকটি পাতাকে গাঢ় সবুজ থেকে ধূসর হলুদ বর্ণের করে ফেলে। শেষে সব পাতা ঝরে যায় এবং শস্য উৎপাদনের ক্ষমতা হারায়।

এ রোগটির প্রতি নজর দেওয়া না হলে, এর মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে বিশ্বকে। ১৯ শতকে শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো  কফি রপ্তানিতে শীর্ষে ছিল। কিন্তু এ রোগটির মারাত্মক পরিণতির কারণে তারা ধীরে ধীরে কফি উৎপাদন বন্ধ করে চা উৎপাদনের দিকে নজর দেয়। এমনকি যুক্তরাজ্যও কফি উৎপাদন ছেড়ে চায়ের দিকে মনোনিবেশ করে।

কলম্বিয়ায় দুধরণের কফি উৎপাদন হয় । এক ধরণের নাম কফি বিউটি আরেক ধরণের নাম কফি বিস্ট। কফি বিউটির চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক বেশি হলেও এটিই রাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।

সুত্র: বিবিসি

/ এআর /

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি