ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

করোনা ও জীবন

মো. মাহমুদুল হাসান

প্রকাশিত : ১৩:২০, ২৪ নভেম্বর ২০২০

হাসি, কান্না, আনন্দ ও বেদনা নিয়েই মানুষের জীবন। হতাশা আসবেই, তাই বলে কি জীবনের হাল ছেড়ে দিতে হবে? কখনোই না, আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে আলোর পথে।

আজ ‘করোনা ও জীবন’ শিরোনামে আমার কিছু বাস্তব অবিজ্ঞতা এবং জীবনের গতি প্রকৃতি নিয়ে আলোকপাত করছি। কারণ আমি মনে করি আমার মত অনেকেই আছেন যারা এমন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। তাই নিজের অবস্থান থেকে সবার কাছে একটি বার্তা দিতে চাই।

চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে মহামরী করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের দেশে লকডাউন শুরু হয়। এখনো সেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এর প্রভাব আমার জীবনেও পড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ দুই বছরের মতো একুশে টিভিতে কাজ করেছি। কিন্তু ইচ্ছে ছিল আরও ভালো কিছু করার। এরই মধ্যে একটি কলেজ থেকে কাজের সুযোগ পাই এবং সেখানে কাজ শুরু করি। সেই সঙ্গে শিক্ষাকতার পাশাপাশি কানাডা যাওয়ার একটি সুযোগ আাসে। কিন্তু মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে কানাডা যাওয়ার সেই রাস্তাটিও বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে লকডাউনের কারণে কলেজও বন্ধ। তিন থেকে চার মাস কলেজ থেকে অল্প পরিসরে বেতন পেয়েছি, পরে সে বেতনও বন্ধ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে কিছুটা ঝামেলাতেই পড়ে যাই। কারণ এরই মধ্যে আমি সংসার পেতেছি। শুধু একার চিন্তা নয়, আরও কয়েকজন আমার উপর নির্ভরশীল। তাই দশ পাঁচ না ভেবে আবার ঢাকায় চলে আসি। আসার পর এক বড় ভাইয়ের বাসায় উঠলাম। সেখানে তার দুজন ছেলেমেয়েকে পড়াতাম। ওখানেই থাকলাম তিন মাসের মত। পরে অন্য আরেকটা বাসায় উঠলাম। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্যারের সাথে কথা হল। 

স্যার বলল, তুমি আমার কিছু অনুবাদের কাজ করে দাও। অনুবাদের কাজ শুরু করলাম। এখন এভাবেই চলছে জীবন। আশা করছি ভালো কিছুর অপেক্ষা করছে আমার জন্য।

তবে স্থায়ী কাজ না থাকায় অনেক সময় হতাশ হয়ে যাই। আরো বেশি কষ্ট হয় যখন শুনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমুক ভাই হতাশার কারণে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আমি জানি- এ আত্মহত্যা কখনো সমাধান হতে পারে না।

মহান প্রভু আমাদের একটি শক্তিশালী মস্তিষ্ক দিয়েছেন। এটির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমারা সহজেই সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারি। আমাদের রয়েছে ইগো প্রবলেম, তা দূর করতে না পারলে ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব নয়। উন্নত দেশ সমূহে কোন কাজেরই অগ্রাহ্য করা হয় না এবং হেয় প্রতিপন্ন করা হয় না। 

তাই জীবনে সফল হতে হলে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন-
- কোনো কাজকেই ছোট মনে করা যাবে না।
- ভয় দূর করতে হবে।
- নিজের উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে। 
- নিজের যে দায়িত্ব আছে ‘তা যথাযথ পালন করাই হচ্ছে প্রকৃত দেশ প্রেম’ এটি মাথায় রাখতে হবে।
- অপরের কল্যাণে এগিয়ে যেতে হবে। তাতে প্রকৃত আনন্দ পাওয়া যায়।
- আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
- জীবনে যত খারাপ পরিস্থিতি আসুক না কেন হতাশ হওয়া যাবে না।
- বুদ্ধিমত্ত্বার সাথে সকল বাঁধা দূর করতে হবে।
- অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে নিজের কি ঘাটতি আছে তা বের করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বপরি বর্তমান সরকার যুব সমাজের জন্য ঘরে বসে অনলাইনে আয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। সরকার ‘Learning and Earning Development Project’ এর মাধ্যমে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। তাই হতাশ হওয়া যাবে না কোনভাবেই। চোখ কান খোলা রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে। তাহলেই সুনিশ্চিত বিজয় সম্ভব।
লেখক : সংবাদকর্মী 
এসএ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি