ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

চীনের ভয়ংকর সাত ট্যুরিস্ট স্পট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৩, ১৯ জুন ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩৬, ১ জুলাই ২০১৮

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশ চীন। শুধু অর্থনৈতিক শক্তিই না বরং দেশটি এখন জানান দিচ্ছে পর্যটকবান্ধব দেশ হিসেবেও। এমনিতেই ব্যবসার কাজে প্রতিবছর বহু বিদেশী চীন ভ্রমণ করেন। এসব পর্যটকদের জন্য বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান তৈরি করেছে চীন যা খুবই ভয়ংকর; আপনার বুকের পানি শুকিয়ে দিতে যথেষ্ট। এমনই ৭টি ট্যুরিস্ট স্পটের খবর থাকছে এই প্রতিবেদনে।

১) পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ ইউ-শেপ কাঁচের ব্রীজ

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, চীনের হেনান প্রদেশের ফুজি পাহাড়ের ওপর নির্মিত কাঁচের ব্রীজটি পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ ইউ-শেপ কাঁচের ব্রীজ। তিন হাজার টনের এই ব্রীজটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে আট মাস। গত ১৬ জুন ব্রীজটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

ব্রীজটিতে হাটার সাহস যাদের হবে তারা সেখান থেকে ৩৬০ মিটার নিচের গভীর খাঁদ দেখতে পাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ওপর যে ইউ-শেপ ব্রীজটি আছে তার থেকেও চীনের এই ব্রীজটি ৩০ মিটার দীর্ঘ।

২) হুনানের তিয়ানমেন পর্বত

দক্ষিণ চীনের হুনান প্রদেশের একটি পাহাড়ের নাম তিয়ানমেন। এই পাহাড়ে ওঠার পথ স্বাভাবিক কোন পথ না। পাহাড়ের দেয়াল ঘেঁষে নির্মাণ করা সরু পথে হেটে উঠতে হবে এই পাহাড়ে। এখানে বলে রাখা ভালো যে, সরু পথ বলতে পাহাড়ের সঙ্গে নাট-বল্টু দিয়ে যুক্ত করা কয়েক ফুট প্রশস্ত কাঁচের পথের কথা বলা হচ্ছে।

আঁকানো বাঁকানো এই পথকে যদি সরলরেখায় মাপা হয় তাহলে তা হতে পারে বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সড়ক বা ব্রীজ। এতে আছে আড়াই ইঞ্চি পুরু কাচ যার দৈর্ঘ্য পাক্কা দেড় কিলোমিটার।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে চার হাজার ফুট উচ্চতায় এই পথে আছে ৯৯টি সরু ও বিপজ্জনক বাঁক। এসব বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করার সাহস যার হবে তার সুযোগ হবে টংটিয়ান অ্যাভিনিউ থেকে মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্য দেখার। এই পথের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কুলিং ড্রাগন ক্লিফ ওয়াক’। স্থানীয়ভাবে এটিকে ডাকা হয় ‘বেন্ডিং রোড’ নামে।

৩) দীর্ঘতম সরলরৈখিক কাঁচের ব্রীজ

চীনের হেবেই প্রদেশের হোংইয়াগু পর্যটন স্পটে যে ব্রীজটি আছে তা পৃথিবীর দীর্ঘতন সরলরৈখিক কাঁচের ব্রীজ। প্রায় আধা কিলোমিটার (৪৮৮ মিটার) দীর্ঘ এই ব্রীজটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২১৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। ১.৬ ইঞ্চির পুরু কাঁচের মোট এক হাজার ৭৭টি কাঁচের প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে এতে। পাশাপাশি দুইটি পাহাড়ের চূড়ার সংযোগ করেছে এই ব্রীজটি।

ব্রীজটি একসঙ্গে দুই হাজার ব্যক্তির ওজন ধারণ করতে সক্ষম হলেও প্রতিবার মাত্র ৬০০ জন পর্যটককে এতে ওঠার সুযোগ দেওয়া হয়। আর সুযোগ পাওয়া ব্যক্তিদের বিশেষ একধরনের জুতা পরতে হয় কাঁচের নিরাপত্তার জন্য।

 ৪) পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গ্লাস ভিউইং প্ল্যাটফর্ম

বেইজিং এর শিলিনজিয়া এলাকায় জুটিং নামের একটি গ্লাস ভিউইং প্ল্যাটফর্ম আছে। শূণ্যের ওপর ভেসে থাকা এই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে অবলোকন করা যাবে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের। উপত্যকার ৩৯৬ মিটার উঁচুতে পাহাড় থেকে ৩২.৮ মিটার বাইরে শূণ্যের ওপর এই প্ল্যাটফর্মটি অবস্থিত।

এই প্ল্যাটফর্মটি যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন স্কাইওয়াক থেকে ১১ মিটার আর চীনের ফুজি পর্বতের স্কাইওয়াক থেকে অন্তত তিন মিটার দীর্ঘ এই প্ল্যাটফর্ম।

বৃত্তাকার এই প্ল্যাটফর্মটিকে ডাকা হয় ‘স্কাই সসার’ নামে। বিমান ও মহাকাশ যানে ব্যবহৃত হওয়া টাইটেনিয়াম অ্যালয় কাঁচ থেকে নির্মাণ করা হয়েছে এই স্কাই সসার। একসাথে দুই হাজার মানুষের ওজন নিতে সক্ষম এই প্ল্যাটফর্ম।

৫) শানজির ভয়ানক পর্বত হুয়াসান

পাহাড় চড়া বা হাইকিং অনেকের কাছেই প্রিয়। কিন্তু চীনের হুয়াসান পর্বতে যদি হাইকিং করতে বলা হয় তাহলে জিভের জল শুকিয়ে যেতে অনেক দক্ষ হাইকারেরও। এই পাহাড়ে ওঠার যে পথ বা ট্রেইল সেটিকে বিশ্বের সবথেকে বিপজ্জনক ট্রেইলগুলোর মধ্যে একটা হিসেবে বিবেচিত হয়।

শানজি প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর হুয়ানে অবস্থিত এই পর্বতে আছে পাঁচটি চূড়া। এসব চূড়ার সংযোগ করেই ট্রেইলটি তৈরি করা হয়েছে। দুই হাজার ৯০ মিটার উঁচু পাহাড়ের পাথর কেটে কেটে তৈরি করা হয় এই ট্রেইল। পর্বতের দেয়ালের সাথে লোহার প্লেট নাট বল্টু দিয়ে আটকানো হয়েছে এটিতে। আর এই ট্রেইলের প্রশস্ততা মাত্র ১ ফুট!

৬) ক্রাকিং গ্লাস ওয়াকওয়ে

হেবেই প্রদেশে আরেকটি গ্লাস ওয়াকওয়ে আছে চীনে। পূর্ব তাইহাং শহরের এই ক্রাকিং গ্লাস ওয়াকওয়ে ভয় পাইয়ে দিতে পারে অনেক সাহসী ব্যক্তিদেরও। গত বছর এই ওয়াকওয়ের একটি কাঁচ ভেঙ্গে এক ট্যুরিস্ট পরে গেলে বিশ্বব্যাপী ‘ক্রাকিং গ্লাস ওয়াকওয়ে’ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেন এটি।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ১৯০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এই ওয়াকওয়ে।

৭) দ্য রিকেটি স্কাই ল্যাডার

এটা আসলে এক ধরণের মই। তবে অবশ্যই যেনো তেনো কোন মই না। বরং খবরের আসার জন্য বেশ উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য আছে এটির। এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই মইটির উচ্চতা তিন হাজার ৭৯০ মিটার অর্থ্যাত প্রায় পৌনে চার কিলোমিটার!

চীনের ইউনান প্রদেশের টাইগার লিপিং জর্জ পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে হলে বাইতে হবে এই মই। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্কাই ল্যাডার’। কোন ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় ঠান্ডা মাথা আর একাগ্রতাই বাঁচিয়ে রাখতে পারে যিনি মই বেয়ে উঠবেন। আর হ্যাঁ, সাথে দরকার হবে মানানসই এক জুতা।

সূত্র : সিএনএন।

/ এসএইচএস / এআর  


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি