ঢাকা, শনিবার   ৩১ মে ২০২৫

তাজউদ্দীন কলেজের নাম পরিবর্তন করায় সোহেল তাজের ক্ষোভ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৩, ২৯ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দেশের ৬৮টি কলেজের নাম পরিবর্তন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দু-একটি বাদে প্রায় সব কটিই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ছিল। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এসব কলেজের নাম পরিবর্তনের কথা জানানো হয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নামও।

এই কলেজের নাম পরিবর্তন করে কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ রাখা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। 

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু বলার নাই। কারণ, আমার বাবা এবং মা এই দেশের জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন কিছু পাওয়ার জন্য না।

তাই ওনাদের কর্মের স্বীকৃতি এই দেশ কোনোদিন যদি নাও দেয়, ইটস ওকে। বাংলাদেশ ভাল থাকলেই হলো।

এরপর ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজে’র সাবেক এক ছাত্রের পোস্ট শেয়ার করেন তিনি।  

পোস্টে লেখা ছিল, শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ আমাদের কাপাসিয়ার গর্ব ও অহংকারের নাম। বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ সাহেবের পরিবার এবং ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ্ সাহেবের পরিবার এটা আমাদের কাপাসিয়ার ঐতিহ্য। আজ ৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে তালিকার ৩৬ নম্বর কলেজের নামটি ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’ এই নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম ঠিক করা হয়েছে, ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ।’

বোঝার সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি, কলেজটি অবস্থিত গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের গ্রামে বাড়ি দরদরিয়া থেকে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে হাইলজোর গ্রামে। কলেজটি যখন সরকারিকরণ করা হয় তারও আরও অনেক আগে থেকেই এই কলেজের নামকরণ করা হয় ‘শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’ এবং এই নামেই কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়, যার আগে নাম ছিল ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজ হাইলজোর।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার ৯ মাসের মাথায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেছে বর্তমান সরকার। যার ফলে আমরা এখন নতুন নাম পেয়েছি ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ।’ 

আপনাদের সুবিধার্থে আরও একটি তথ্য জানিয়ে রাখি, কাপাসিয়া সদরে কিন্তু আরও একটি ডিগ্রি কলেজ আছে। তার নামও ‘কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ’ (সরকারি হয় নাই এখনো)। কথা হচ্ছে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের নাম বাদ দিয়ে নতুন নামের কারণে কী কী সুবিধা আমরা পাবো। স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহানায়কের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যই বা কি? কর্তৃপক্ষ কি এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারবে?

আসলে নাম পরিবর্তনেই বা কি আসে যায়। যেখানে আমাদের নেতা তাজউদ্দীন আহমদ বলে গিয়েছেন, ‘মুছে যাক আমার নাম, তবু বেঁচে থাকুক বাংলাদেশ।’ আর এইটা তো একটা কলেজ মাত্র। তবে দুঃখ লাগে! তাও লাগতো না, যদি না কলেজটি অন্য কোনো জায়গায় হতো। কলেজটি যে তাজউদ্দীন আহমদের নিজ ইউনিয়নে। সারা দেশে যখন শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল  ভাঙা হচ্ছিল তখন তাজউদ্দীন আহমদ চত্বরে উনার ম্যুরালে মালা পরিয়েছিল ছাত্র-জনতা! বিগত ৫৪ বছরের নাম নিয়ে কোনো অপরাজনীতির ইতিহাস নেই কাপাসিয়ায়। কেবল চোখে পড়ছে। 

এরা কারা; কি স্বার্থ তাদের? আমি এতো কিছু জানি না, এতো কিছু বুঝি না। তবে আমি এই কলেজের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ধন্যবাদ।’’

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি