ঢাকা, রবিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

নূরুল হক কতদূর যাবেন?

প্রকাশিত : ১৭:০৮, ১১ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ১৭:১১, ১১ এপ্রিল ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

মানুষ অভিজ্ঞতার আলোকে কথা বলে। ডাকসুর নির্বাচন ও নেতৃত্ব নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে। সে কথায় যেমন আশা আছে, তেমনি আছে আশঙ্কা। সাম্প্রতিক সময়ে দুটি আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রদের ভূমিকা জনগণের মধ্যে আশার আলো ছড়িয়ে দেয়।

ডাকসু নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে তখন সেই আশার প্রতিফলন তথা আন্দোলনের নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠা দেখতে চায় সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। সবাই আশঙ্কা করছিল জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব পড়বে ডাকসু নির্বাচনে। তাদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। শেষ রক্ষা হিসেবে ডাকসু ভিপিসহ আরও কয়েকটি হলে ক্ষমতাসীন দলের বিরোধী নেতৃত্ব হওয়ায় মানুষ তা ‘মন্দের ভালো’ হিসেবে মেনে নেয়।

দ্বিধাদ্বন্দ্ব অতিক্রম করে অবশেষে ভিপি হিসেবে শপথ নিয়েছেন নূরুল হক এবং অন্যরা। তখন ক্ষমতাসীন দলের অনুগামীরা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেও এক মাস যেতে না যেতেই তার ব্যতিক্রম ঘটে। এ মাসের প্রথম দিকে ভিপি নূরুল হক এসএম হলে গেলে তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়। এ সময়ে সম্ভবত নূরুল হককে অসম্ভব দ্বিমুখী চাপের মোকাবেলা করে পথ চলতে হচ্ছে।

নেতৃত্ব সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। তবে ম্যাক্সওয়েলের সংজ্ঞাটিকে সবাই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ‘এ লিডার ইজ ওয়ান হু নোজ দি ওয়ে, গোজ দি ওয়ে, অ্যান্ড শোজ দি ওয়ে’। সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ণীত হয় অনেকটা নেতৃত্বের গুণে। সততা, স্বচ্ছতা, আত্মবিশ্বাস, উদ্দীপ্ত করার ক্ষমতা, দৃঢ়তা, নিষ্ঠা, ধৈর্য, যোগাযোগ সক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে দক্ষতা ইত্যাদি হচ্ছে- নেতৃত্বের গতানুগতিক গুণাবলি। একজন নেতার ভালো গুণ হচ্ছে তিনি পরিস্থিতিকে সতর্কতা, দায়িত্ববোধ ও দূরদৃষ্টি দ্বারা পরিচালনা করেন। ব্যর্থতা, শত প্রতিকূলতা ও অনেক প্রতিরোধ অগ্রাহ্য করে যখন নেতা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছান- তখন নেতৃত্বের সফলতা প্রমাণিত হয়। বিশেষ করে ব্যক্তি যখন অন্যায়, অনাচার, নিপীড়ন, নির্যাতনকে সহ্য করে, ধারণ করে অকুতোভয়ে এগিয়ে যান তখন স্বাভাবিকভাবেই জনগণ বা তার নিজস্ব পরিমণ্ডল তার পক্ষে দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো কাজ করে। বিজ্ঞজনরা নেতার এ গুণকে একটি শব্দ দ্বারা ব্যাখ্যা করেন, আর তা হচ্ছে ‘স্ট্রেসর’। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে, চাপ ধারণ করার ক্ষমতা, কষ্টকর এবং বিপদের সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা। এসব কথা প্রযোজ্য হতে পারে সাধারণ ঘরের অসাধারণ সন্তান ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর সম্পর্কে। ইতিমধ্যে সরকারি দলের চাপ এবং বিরোধী দলের আশার মাঝে তাকে সমন্বয় করতে হচ্ছে। নেতৃত্বের ক্ষেত্রে যদি পরিবেশের কোনো মূল্য থাকে, তা নূরুল হকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে। ঝড়-ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগর সৈকতে তার জন্ম। পটুয়াখালীর সুদূর চরবিশ্বাসে তার বাড়ি। তাব বাড়ির অদূরে আগুনমুখা নদী।

ওই এলাকার মানুষের স্বভাব চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য গড়নে আগুনমুখা তথা প্রকৃতির রুদ্র রোষের প্রভাব রয়েছে। মধ্য যুগের সমাজতত্ত্ববিদ ইবনে খলদুন তার ‘আল মুকাদ্দীমা’য় ভৌগোলিক প্রভাবের বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। হয়তো নূরুল হকের মানস গঠনে ওই প্রভাব ক্রিয়াশীল হয়ে থাকবে। আমার বাড়িও ওর বাড়ির কাছাকাছি। ওর সঙ্গে দেখা হয়নি কখনও। কোটা আন্দোলনের আগে ওর নামও শুনিনি। হতদরিদ্র না হলেও গরিব পরিবারই বলা যায়। দারিদ্র্য মানুষকে মহৎ করে- একথা একমাত্র কবিরাই বলতে পারেন। আর মার্কস বলেন, ‘দারিদ্র্য মানুষকে সংগ্রামশীল করে তোলে।’

নূরুল হকের ব্যাপারে একথাও হয়তো সত্য। তবে সে স্বপ্ন দেখতে পারত। তার শৈশবের লেখাপড়া ওই চরেই। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। সংশ্লিষ্ট হন ছাত্রলীগের সঙ্গে। তিনি ছিলেন মুহসীন হল ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক উপসম্পাদক; ছাত্রলীগ অবশ্য তাকে শিবির বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে তার স্পষ্টবাদিতা, সাহস ও দৃঢ়তা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। একই সময়ে ছাত্রলীগের একাধিক হামলার শিকার হন তিনি। হামলা ও মামলার মধ্য দিয়ে প্রথম সারির নেতায় পরিণত হন নূরুল হক।

গত বছরের ৩০ জুন ছাত্রলীগের বেদম মার খেয়ে বাঁচার আকুতি জানান এক শিক্ষকের কাছে। তার সেই আকুতি ভরা ছবি সারা দেশে বিবেকবান মানুষের সহানুভূতি অর্জন করে। আন্দোলনের তীব্রতার মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। পরবর্তীকালে ঘোষণাটি আনুষ্ঠানিকতা না পাওয়ায় আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি সরকার। তাদের পেটোয়া বাহিনী বার কয়েক আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করে। সেসব আক্রমণ থেকেও রেহাই পায়নি নূরুল হক। আন্দোলন থেমে থাকেনি। সরকার তার গদি রক্ষার কৌশল হিসেবে গত বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে।

আন্দোলনের সফলতায় হিরো বনে যান বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নেতারা। সেক্ষেত্রে নূরুল হকের সঙ্গে ছিলেন মোহম্মদ রাশেদ খান, ফারুক হোসেন প্রমুখ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছিলেন যে, এই পরিষদ যেহেতু আন্দোলন করে সফল হয়েছে, সেহেতু সাধারণ ছাত্রদের অকুণ্ঠ ও একরকম নিরঙ্কুশ সমর্থন এদের প্রতি অব্যাহত থাকবে।

ডাকসু নির্বাচন যখন ঘোষিত হল তখন এ ধারণা দৃঢ়তা পায় যে নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ হয় তাহলে এদের বিজয় অনিবার্য। ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলও তার প্রমাণ দেয়; যা ঘটেছে সবাই তা জানেন। নূরুল হকের বিজয় এ পরিস্থিতিতে বিস্ময়কর! এর মানে হল নূরুল হকের জনপ্রিয়তা ও প্রাধান্য এতটাই প্রবল ছিল যে সেখানে সরকারি দলের কারসাজি কাজে আসেনি।

ডাকসুতে ভিপি পদে নূরুল হকের বিজয় একটি জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। সরকারি দল কোনোক্রমেই তার বিজয়কে মেনে নিতে পারেনি। নির্বাচিত হওয়ার পরদিন যখন তিনি ক্যাম্পাসে আসেন ছাত্রলীগ তাকে অপমান-অপদস্ত করেছে। কিন্তু যখন ‘উপরের নির্দেশ’ এসেছে তখন ভবিষ্যতে সবকিছু হারানোর চেয়ে তারা নূরুল হককে মেনে নেয়াকেই বুদ্ধিমানের কাজ মনে করেছে।

নূরুল হক যদি নির্বাচিত না হতো তাহলে চলমান ডাকসু নির্বাচন বাতিলের আন্দোলনের সাফল্যের শতভাগ নিশ্চয়তা সম্ভব ছিল। এখন ডাকসু সহসভাপতি ও আরেকটি পদে অর্থাৎ ২৫ পদের মধ্যে দুটি পদে নির্বাচনের ফলে সরকারি দল আইনগত ভিত্তি পেয়েছে। এটি ব্যক্তি হিসেবে নূরুল হকের অবস্থানকেও নড়বড়ে করেছে। ছাত্রলীগের কোলাকুলির পর পদ গ্রহণের আগ্রহ এবং আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা নূরুল হককে তার সঙ্গীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে।

চাপের মুখে নূরুল হক সমগ্র নির্বাচন বাতিল আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। অবশ্য মানসিকভাবে দৃঢ় থাকার কারণে ছাত্রলীগের সামনেই তিনি বলতে পারেন যে, ‘ক্ষমতাসীনরা যখন সুবিধাজনক মনে করে, আমাদের লাগে, তখন বুকে টেনে নেয়। আবার যখন মনে করে আমরা শত্রু তখন মার দেয়।’ একপর্যায়ে নূরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভিপির দায়িত্ব নেবেন এবং সবার সঙ্গে মাঠে থেকে ভবিষ্যৎ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। নূরুল হক তার কর্মধারার মাধ্যমে গত এক মাসে তার প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রেখেছেন। তবে ক্ষমতার বাস্তবতাও তাকে মেনে নিতে হয়।

১৬ মার্চ বিকালে গণভবনে তাদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিধা-দ্বন্দ্বকে অতিক্রম করে এ অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত ভিপি নূরুল হক যোগদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে মায়ের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পেয়েছেন ভিপি নূরুল হক। শেখ হাসিনার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন তিনি। এসময় তিনি ভিপি নূরুল হকের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। গণভবনে যাওয়ার আগে নূরুল হক বলেছিলেন তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তার সঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি তা করেছিলেন কিনা তা জানা যায়নি।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তিনি যে সৌজন্য ও সম্মান প্রদর্শন করেছেন তা বাংলাদেশের কালচারে স্বাভাবিক। পুনরায় ডাকসু নির্বাচনের জন্য যে আন্দোলন সূচিত হয়েছিল, প্রোভিসির আশ্বাস এবং ছাত্রছাত্রীদের অনশন ভঙ্গের মাধ্যমে আপাতত তার পরিসমাপ্তি ঘটেছে বলে বিশ্বাস করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নূরুল হকের দৃশ্যমান শুভেচ্ছা এক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে পর্যবেক্ষকরা মনে করেছিলেন। এমনকি তার সংগ্রামী সঙ্গীরাও হয়তো দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। কিন্তু নুরুল হক ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আন্দোলনের সঙ্গী থেকে যান। তার এসএম হলে যাওয়া তারই প্রমাণ বহন করে।

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ ১ এপ্রিল এসএম হলে এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। হল সংসদের নির্বাচনে জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ফরিদ হাসান। এর জের ধরে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তাকে মারধর করে। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন নূরুল হক নূর। তাকে ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদককে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে রাখে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। পরে প্রাধ্যক্ষের সহায়তায় তারা বেরিয়ে এলেও তাদের ওপর ডিম ছুড়ে মারা হয়। হল প্রাধ্যক্ষের গায়েও ডিম ছোড়া হয়েছে। হামলা হয়েছে হলের গেটে অবস্থানরত বিরোধী ছাত্রনেতাদের ওপর।

ঘটনার প্রতিবাদে নূরুল হক নূরের নেতৃত্বে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ডাকসুর সভাপতি প্রফেসর মো. আক্তারুজ্জামান বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান ধর্মঘট স্থগিত করেন। ইতিমধ্যে হলের আবাসিক শিক্ষক প্রফেসর সাব্বির আহমেদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ভিপি নূরুল হক এবং আন্দোলনকারীরা কর্তৃপক্ষকে আলটিমেটাম দেন।

ওই সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ফের আন্দোলন কর্মসূচিতে যাবেন তারা- এ ঘোষণাও দেন। এদিকে ভিপির ওপর ডিম নিক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন। তবে তিনি বলেন, ডিম ছোড়া আধুনিক গণতন্ত্রের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, একটি নীতিগর্হিত ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করার কারণে ডাকসুর ভিপিকে এমন অবমাননাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।

একইসঙ্গে তিনি এসএম হলে ছাত্রীদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনার অভিযোগকে কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, এসব বলে ছাত্রলীগের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি ভিপি নূরুল হকের সমালোচনা করে বলেন, তিনি নৈরাজ্যবাদীদের মতো মিছিল নিয়ে গেছেন, ডাকসু ভিপি পদটির ধারাবাহিক অবমাননা করছেন এবং এর ঐতিহ্যবাহী গুরুত্বকে হাস্যকর করে তুলছেন। এর আগে শপথগ্রহণের পরের মিঠেকথা ভুলে ভিপিকে প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ছাত্রলীগ। এসব আলামত থেকে বোঝাই যায়, সামনের দিনগুলো আরও কঠিন হবে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা মুখে বললেও কার্যত তার বিপরীতটি হচ্ছে এবং করবে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। নূরুল হক নূরের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

ডাকসু বাংলাদেশের রাজনীতির সূতিকাগার বলে পরিচিত। বিগত তিন দশকে এ পরিচয়ে মরিচা ধরেছে। সব শাসক এ থেকে আন্দোলনের শঙ্কায় থেকেছে। তাই জাতীয় নির্বাচনের আদলে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে যদি সত্যি সত্যি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো তাহলে বর্তমান ফলাফলের উল্টোটাই ঘটত। এক নূরুল হককে সামলানোর জন্য সরকারকে হিমশিম খেতে হয়েছে। গণভবন, এসএম হল-পরবর্তী ঘটনাবলি এবং নূরুল হকের নেতৃত্বের গুণাবলি ও দোষাবলির ওপর নির্ভর করবে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ। ডাকসুর ভিপি আওয়াজটিই আলাদা।

যেহেতু তার সঙ্গে সাধারণ ছাত্রসমাজ রয়েছে, সুতরাং আশা করা অন্যায় নয় যে, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নূরুল হকের ভিপি পদ একটি ভূমিকা রাখবে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নৈতিকভাবে নূরুল হকের দিকেই রয়েছে। তাদের আশায় গুড়েবালি পড়তে পারে যদি নূরুল সুবিধাবাদী চরিত্র গ্রহণ করে। বাংলাদেশের বড় বড় নেতার ক্ষেত্রে বিশ্বাসভঙ্গের কারণ ঘটেছে।

নূরুল হক যদি তা করেন তাহলে তিনি অনেক সম্পদ ও সুখের মালিক হতে পারবেন বটে, তবে এর বিনিময়ে মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসার সম্পদ তিনি নিশ্চিতভাবেই হারাবেন। নূরুল হক নিকট অতীতে দেখিয়েছেন, ‘চলতে চলতে মার খাবে, মচকাবে কিন্তু ভাঙবে না’- এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

ড. আবদুল লতিফ মাসুম : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি