ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

পটিয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মুফতি আজিজুল হক শাহ (র:)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫১, ২ মার্চ ২০২৩

পটিয়া আল-জামেয়া আল ইসলামিয়া (জমিরিয়া কাছেমুল উলুম) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পীরে কামেল হযরত আল্লামা মুফতি আযীযুল হক শাহ (রাঃ) ছিলেন একজন দ্বীনিশিক্ষার স্তম্ভ ও দ্বীন আলেম। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী, জ্ঞানী, তেজস্বী ব্যক্তি। দ্বীনিশিক্ষার আলোক-বর্তিকার দ্যুতি ছড়াতে তিনি সুদূর ভারতে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।

নিজের জন্মস্থানে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে যে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন তা আজ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ মাদ্রাসার অধীনে বর্তমানে অর্ধ-শতাধিক মাদ্রাসা ও মসজিদ বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত হয়ে আসছে। যেখান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার আলেম, ওলামা, মাশায়েক সৃষ্টি হয়ে তারা সারা দেশে দ্বীনিশিক্ষার প্রচার ও প্রসার ঘটাছে।

হযরত আল্লামা মুফতি আযীযুল হক শাহ্ (রাঃ) পটিয়া থানার অন্তর্গত চরকানাই গ্রামের প্রসিদ্ধ শহরআলী মুন্সির বাড়ীর স্বনামধন্য পরিবারের ১৮৯৫ সালের ১৩১৭ হিজরীর এক শুভমুহূর্তে জন্মগ্রহণ করেন। মুফতি আজিজুল হক শাহ উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের চরকানাই গ্রামের প্রথম ইউনিয়ন পঞ্চায়েত চেয়ারম্যান সুরত আলী চৌধুরীর পৌত্র। তাঁর পিতার নাম মাওলানা নুর আহমদ। মাতার নাম গুলজার বেগম। মাতা গুলজার বেগম ছিলেন একজন। সহজাত মেধাসম্পন্ন ধর্মপরায়ণ ও সতী সাধ্বী গৃহিণী নারী। মুফতি আযীযুল হক (রাঃ) ছিলেন। ছিদ্দিকী বংশীয়। তারা প্রাচীন যুগ থেকে শেখ ছিদ্দিকী হিসাবে প্রসিদ্ধ। ১৯০৬ সালে ১৩২৮ হিজরীতে প্রতিষ্ঠা হয় জিরি মাদ্রাসা। জিরি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আহমদ হাসান সাহেব মুফতি সাহেবের পিতা মাওলানা নুর আহমদের ফুফাতো ভাই ছিলেন। মুফতি সাহেব ১০ বছর বয়সে স্কুলে লেখাপড়া করছিলেন। কিন্তু মাওলানা আহমদ হাসান তাঁকে স্কুলে পড়তে না দিয়ে জিরি মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। জিরি মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিসের শেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে হিন্দুস্তানের (ভারত) বিখ্যাত দ্বীনিশিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে তৎকালীন শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আবদুর রহমান কেম্বলপুরী সাহেবের সান্নিধ্যে থেকে তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্ব বিষয়ে পারদর্শিতা ও দক্ষতা অর্জন করে আরবী, উর্দু, ফার্সী ভাষায় কাব্য রচনা লেখার মধ্যে খ্যাতি লাভ করেন। পরে তিনি জিরি মাদ্রাসার শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৩১ সালে ১৩৫৩ হিজরীতে হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক, পীরে কামেল শায়খুল মাশায়েখ হযরত জমির উদ্দীন (রাঃ) সাহেবের হাতে বায়াত হন। পরবর্তীকালে তিনি পটিয়া আল-জামেয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসাকে ভারতের দেওবন্দের উস্তাদুল ওলামা আল্লামা আবুল কাসেম সাহেব ও তাঁর পীর শায়খুল মাশায়েক হযরত জমির উদ্দীনের নামকরণে পটিয়া আল-জামেয়া আল-ইসলামীয়া (জমিরিয়া কাছেমুল উলুম মাদ্রাসায় রূপান্তর করেন। তিনি ১৪/১৫ বছরের মধ্যে মুফতির পদ অলংকৃত করেন। ১৯৬১ সালে ৩রা মার্চ এ দ্বীনিশিক্ষার মহামনীষী হাজার হাজার আলেম, বক্ত ও অনুরক্ত রেখে ইস্তেকাল করেন।

মুফতি আযীযুল হক শাহ্ (রাঃ) ৬৭ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। পটিয়া আল-জামেয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর তিনি অনেকগুলো মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এ মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রনে ও তাঁর উত্তরাধিকারগণের সহযোগিতায় পটিয়াতে প্রায় ১৫টি মাদ্রাসা ও ১০টি মসজিদ, এছাড়াও চন্দনাইশ, রাঙ্গুনিয়া, আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও বান্দরবান জেলায় প্রায় ৩০টির অধিক মাদ্রাসায় ও ৫০-এর অধিক মসজিদ এবং শতাধিক নূরানী মাদ্রাসা পরিচালিত হয়ে আসছে।
এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি