ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পথ হারায় দেশের অর্থনীতি (ভিডিও)

তৌহিদুর রহমান

প্রকাশিত : ১১:৫৮, ২১ আগস্ট ২০২১

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশে শুধু রাজনৈতিক শূন্যতাই সৃষ্টি হয়নি। অর্থনীতিও ঢেকে গিয়েছিল ঘোর অন্ধকারে। দেশে জনগণের সরকার না থাকায় শাসকদের ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ চলে যায় মুষ্টিমেয় লোকের হাতে। পথ হারায় বাংলাদেশের অর্থনীতি। অপমৃত্যু ঘটে বঙ্গবন্ধুর কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। 

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ, চারদিকে ধ্বংসযজ্ঞ। রাষ্ট্রীয় তহবিল শূন্যপ্রায়। এমন বাস্তবতায় ১৯৭২ সালে দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে পরিণত করার কাজ শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয় দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ ও সমবায় অর্থনীতিও বিশেষ গুরুত্ব পায় তাতে। পাট, চা, চিনি, বস্ত্রসহ জাতীয়করণের আওতায় আসে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। 

অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, তিনি জাতির মনে যুদ্ধ করে জয় করার যে মানসিকতা দিয়ে গিয়েছিলেন সেটি অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামেও ব্যবহার করেছেন। আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে স্বদেশি উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ান, বিশেষ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত কৃষি অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি খুব জোড় দিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শনে সুফলও আসে খুব কম সময়ে। কৃষির পাশাপাশি বিকশিত হতে থাকে শিল্পখাতও। পাট ও চা হয়ে ওঠে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যম। গতি ফিরে বৈদেশিক বাণিজ্যে। আয় বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের। 

ড. আতিউর রহমান বলেন, শিল্পখাতটাকে তিনি জাতীয়করণ করেছিলেন, রাষ্ট্রের অধীনে নিয়ে এসেছিলেন। এরকম একটি সময়ে অর্থনীতি কিন্তু সাড়া দিচ্ছিল।

১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৩ ডলার। মাত্র তিন বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭৩ ডলারে। কিন্তু ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর পথ হারায় দেশের অর্থনীতি। ’৭৭-এ মাথাপিচু আয় কমে ১২৮ মার্কিন ডলারে নেমে আসে।    

অর্থনীতি ড. আতিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে মাথাপিছু আয় রেখে গিয়েছিলেন সেখানে পৌঁছুতে ১৩ বছর সময় লেগে গিয়েছিল। ১৯৮৮ সালে এসে ২৭০ ডলার হয়েছিল মাথাপিছু আয়।

সমবায়ভিত্তিক অর্থনীতির যে যাত্রা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শুরু হয়েছিল, ’৭৫-এর পর তাও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। জনগণের মালিকানাধীন রাষ্ট্রীয় শিল্পকারখানায় গুটিকয়েক মানুষ প্রাধান্য পায়। আর এতে বঙ্গবন্ধুর কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের চূড়ান্ত অপমৃত্যু ঘটে।

ড. আতিউর রহমান বলেন, জনকল্যাণমূলক যে অর্থনীতি তিনি চালু করতে চেয়েছিলেন সেটা আর থাকলো না। মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে সম্পদ জমা হতে শুরু করলো।

তবে দীর্ঘসময় পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও পথ খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। বাংলাদেশ এখন শীর্ষ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশগুলোর একটি। মাথাপিছু আয়েও দক্ষিণ এশিয়ায় ওপরের দিকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন কেবলই এগিয়ে যাওয়ার সময়।

ভিডিও-

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি