ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মনের কোরবানি সবচেয়ে বড় কোরবানি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২০, ১১ আগস্ট ২০১৯

কোরবানি অর্থ ত্যাগ। ইসলামে অনেক ধরনের কোরবানি বা ত্যাগের বিধান রয়েছে।  কিন্তু আসল কোরবানি হলো মনের কোরবানি। এর মাধ্যমেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব হয়।

অনেক ধরনের কোরবানি মধ্যে একটি হল জানের কোরবানি। যেমন- নামাজ, রাজা, হজ, জেহাদ ইত্যাদির বিধান। এগুলো পালন করতে গেলে কিছুটা জানকে কষ্ট দিতে হয়, দেহকে কষ্ট দিতে হয়। এমনকি জেহাদে গেলে নিজের পূর্ণ জীবনটাও চলে যেতে পারে। যার ফলে এগুলো হলো জানের কোরবানি।

আর এক ধরনের কোরবানী হল মালের কোরবানি। যেমন-যাকাত, ফিতরা, কোরবানি, দান-সদকা ইত্যাদির বিধান। এসব বিধান পালনের মাধ্যমে মালের কোরবানি দেয়া হয়। হজের মধ্যে জানের কোরবানিও হয়, মালের কোরবানিও হয়। 

অন্য এক ধরনের কোরবানি হল মনের কোরবানি অর্থাৎ মনের চাহিদার কোরবানি, মনের খায়েশ এবং চাহাতের কোরবানি। এই কোরবানিই হল সবচেয়ে বড় কোরবানি। কারণ মানুষের পক্ষে জানমাল ব্যয় করা সহজ অর্থাৎ জান-মালের কোরবানি দেয়া সহজ। কিন্তু মনের কোরবানি দেয়া কঠিন। 

মানুষ অকাতরে নিজের সম্পদ ব্যয় করতেও সহজে প্রস্তুত হয়ে যায় কিন্তু নিজের মনের ধ্যান-ধারণা, নিজের মনের বুঝ, নিজের মনের যুক্তি সহজে ছাড়তে প্রস্তুত হয় না। রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে কাফেররা তাদের প্রচুর সম্পদ ব্যয় করেছে, এমনকি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে নিজেদের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছে, তবুও নিজেদের মনে কুফর-শিরকের যে ধ্যান-ধারণা ছিল সেটা ত্যাগ করতে রাজী হয়নি।

অর্থাৎ সবকিছু কোরবানি দিতে তারা রাজি হয়েছে কিন্তু মনের কোরবানি দিতে তারা রাজি হয়নি। দেখা গেল মনের কোরবানিই হল সবচেয়ে কঠিন।

মনের কোরবানি হল সবচেয়ে বড় কোরবানি। ঈদুল আজহার সময় যে কোরবানি হয় সেখানে পশু জবাই করার মাধ্যমে মালেরও কোরবানি হয় সেই সঙ্গে মনেরও কোরবানি হয়। এই কোরবানির জন্তু জবাই করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, এই অর্থের প্রতি মনের যে মায়া, সেই মায়াকে ত্যাগ করে কোরবানি করতে হবে।

কোরবানি করতে গেলে মনের মধ্যে গোশত খাওয়ার চেতনাটাই মূল হয়ে দাঁড়াতে চাইবে, মনের এই চেতনাকেও কোরবানি দিতে হবে এবং সম্পূর্ণ আল্লাহকে রাজি-খুশী করার নিয়তেই কোরবানি করতে হবে।

কোরবানির পশু ক্রয় করার সময় মনের মধ্যে আসবে সবচেয়ে দামী পশুটা ক্রয় করব, কিংবা যেটা ক্রয় করবো সেটাকে সাজিয়ে-পরিয়ে মহড়া দিব, তাহলে মানুষ জানবে যে অমুকে এই পশুটা কোরবানি দিতে যাচ্ছে। এভাবে মনের মধ্যে নাম প্রচারের চেতনা এসে যেতে চাইবে। মনের এই চেতনাকেও কোরবানি দিতে হবে।

পশু কোরবানির সঙ্গে সঙ্গে মনেরও কোরবানি দিতে হবে। বরং মনের কোরবানিটাই হল আসল। কারণ মনের এসব গলদ খেয়াল ত্যাগ না করলে এই পশু কোরবানির আমলে এখলাস থাকবে না। আর কোন আমলে এখলাস না থাকলে সেই আমলের কোনই মূল্য নেই। তাই মনের কোরবানি না করে শুধু রক্ত-মাংসের পশু কোরবানি করলে তাতে কোন ফায়দা হবে না।

তথ্যসূত্র : মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দীন

এএইচ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি