ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

মাগফিরাতের দশক শুরু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২, ৫ মে ২০২০

আল্লাহতায়ালার অপার কৃপায় রহমতের দশক শেষ করে আমরা প্রবেশ করছি মাহে রমজানের মাগফিরাতের দশকে, আলহামদুলিল্লাহ। মাগফিরাতের দশকে প্রতিটি মুমিনের কামনা থাকে আল্লাহপাক যেন তাকে মাগফিরাত দান করেন। এছাড়া প্রতিটি মুমিন হৃদয় এ মাসে যেমন লাভ করে আল্লাহপাকের জান্নাতের প্রশান্তি তেমনি তার আধ্যাত্মিক বাগান এ মাসে নানান ধরণের ফুলে ফলে সুশোভিত হয়ে ওঠে।

রহমতের দশক পার হয়ে এসেছি কিন্তু আমাদের হৃদয়ে কতটুকু রহমত ঠাঁই পেয়েছে? তা নিয়ে একান্তে ভাবুন আর মাগফিরাতকে আঁকড়ে ধরুন।

মহানবী (সা.) রমজানের প্রথম ভাগ (১-১০ দিন) রহমতের, মধ্যভাগ (১১-২০) মাগফিরাতের এবং (২১-৩০) নাজাতের বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি (রমজান) এমন একটি মাস, যার প্রথম ভাগে আল্লাহর রহমত, মধ্যভাগে গুনাহের মাগফিরাত এবং শেষ ভাগে দোজখের আগুন থেকে মুক্তিলাভ রয়েছে। (মিশকাত)

এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, রমজানের রোজা হলো গুনাহ মাফ এবং মাগফিরাত লাভের মধ্য দিয়ে চিরশান্তি, চিরমুক্তির একটি সুনিশ্চিত ব্যবস্থা, অতি নির্ভরযোগ্য এক সুযোগ। কিন্তু যে বা যারা এ সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে তার ধ্বংস অনিবার্য; তার বিপদ অবশ্যম্ভাবী। কেননা ইমাম বুখারি রচিত আল মুফরাদ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে— হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, জিবরাইল (আ.) এসে নবীজিকে (সা.) বললেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যে রমজান মাস পাওয়ার পরও নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে পারল না। তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘আমিন’।

আমাদের মনে রাখা দরকার, যে বিষয়ে মহানবী (সা.) দোয়া করেছেন তা কখনো বিফলে যাবে না। তাই আমাদের মাগফিরাতের এ দশকে সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ বিদায় নিয়েছে রহমতের প্রথম দশক। এক্ষণে আমাদের ভেবে দেখা দরকার, আত্মশুদ্ধি অর্জনে আমরা নিজেদের কতটুকু কাজে লাগাতে পেরেছি।

মহান রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন, ‘তোমাদের অন্তরে যা আছে, সে সম্পর্কে তোমাদের রবই অধিক জ্ঞাত। যদি তোমরা নেককার হও তবে তিনি তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারীদের প্রতি অধিক ক্ষমাশীল।’ (বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৫)

মাগফিরাত মানে ক্ষমা। নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া। খারাপ কাজগুলো পরিহার করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নিয়ম-কানুন মেনেই আমরা রোজা পালন করে আসছি। কিন্তু মিথ্যা কথা, কুটনামি করা, গিবত বা পরনিন্দা করা, মিথ্যা কসম খাওয়া, কুনজর বা কামুক দৃষ্টিতে তাকানো এসব খারাপ দিকগুলো কি আমরা পরিহার করতে পেরেছি? এ খারাপ বিষয়গুলো রোজারকে ধ্বংস করে দেয়। রমজানের প্রথম দশকে আমল শুদ্ধ করার ওপর নির্ভর করে ক্ষমার সুসংবাদ।

আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল। মন্দ কাজগুলো পরিহার করে খোদাভীতি হই। কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে বিনয়ের সঙ্গে ক্ষমা চাইতে থাকি। বেশি বেশি করে সৎআমল করতে থাকি।

মাগফেরাতের এই দশকে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহতালার নিকট ক্ষমা লাভে রোনাজারি, কান্না-কাটি করবে। মাগফিরাতের দশকে ক্ষমা লাভের একটি দোয়াও আমরা বেশি বেশি করতে পারি।

দোয়াটি হল-

‘আল্লাহুম্মা হাব্বিব ইলাইয়্যা ফিহিল ইহসান; ওয়া কাররিহ ফিহিল ফুসুক্বি ওয়াল ই’সইয়ান; ওয়া হাররিম আ’লাইয়্যা ফিহিস সাখাত্বা ওয়ান নিরানা বিআ’ওনিকা ইয়া গিয়াছাল মুসতাগিছিন।’

অর্থ : হে আল্লাহ! এ দিনে সৎ কাজকে আমার কাছে প্রিয় করে দাও আর অন্যায় ও নাফরমানীকে অপছন্দনীয় কর। তোমার অনুগ্রহের ওসিলায় আমার জন্য তোমার ক্রোধ ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হারাম করে দাও। হে আবেদনকারীদের আবেদন শ্রবণকারী।

আল্লাহর দরবারে আমাদের প্রার্থনা থাকবে তিনি যেন আমাদের দোয়া গ্রহণ করে আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন।

সেই সঙ্গে আমরা দানের পরিমাণ বাড়িয়ে দেই। প্রতিবেশির প্রতি দৃষ্টি দেই, তাদের পাশে দাঁড়াই। ফকির, মসকিন, অভাবী লোক আমাদেরই অংশ। তাদের কষ্টের ভাগিদার হই, হাত বাড়িয়ে দেই।

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি