তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল ও সীমানা পুনর্নির্ধারণে সব দল একমত
প্রকাশিত : ২১:৪৮, ২ জুলাই ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে দেশের সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনায় তিনি এ তথ্য জানান। আলোচ্যসূচিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সীমানা পুনর্নির্ধারণ ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয় ছিল। এর মধ্যে প্রথম দুটি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, “নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আজ বড় ধরনের সাফল্য এসেছে। সব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে একমত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রক্রিয়া, আসন পুনর্বিন্যাস এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বিশ্লেষণ করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, প্রতি আদমশুমারির পর অনধিক ১০ বছরের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে সংবিধানে একটি আইন সংযুক্ত করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এর আওতায় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের বিধান রাখা হবে। এ সংক্রান্ত আইনের কাঠামো, কমিটির পরিধি ও কার্যপ্রণালি সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করার জন্যও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
আলী রীয়াজ বলেন, “বর্তমানে বিদ্যমান কমিটির পরিবর্তে দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নতুন কমিটি গঠন করা হবে। যাতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটে এবং নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল এ ব্যবস্থার পুনর্বহালের পক্ষে অভিন্ন মত পোষণ করেছে। এর কাঠামো, কার্যকাল ও প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।”
আলোচনায় সময়সীমা নিয়েও মতভেদ রয়েছে বলে জানান তিনি। সংবিধান সংস্কার কমিশন ৯০ দিনের এবং নির্বাচন কমিশন ১২০ দিনের মেয়াদের প্রস্তাব দিয়েছে। এই ব্যবধান নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে রাজনৈতিক দলগুলো অনেকটাই কাছাকাছি এসেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আশা করছি, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতায় চলতি জুলাই মাসের মধ্যেই একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই অগ্রগতি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আশাবাদের জন্ম দিয়েছে। বহুদিন ধরে আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল ও নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে একসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান গ্রহণ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এসএস//
আরও পড়ুন