ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

মানসিক চাপ কমানের যেভাবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৪, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

কর্মক্ষেত্র বা পরিবারে নানা সমস্যা, প্রিয়জনের সঙ্গে সম্পর্কের দোলাচল, সংসারে টানাপোড়েন, অর্থকষ্ট,  অসুস্থতা, এমনকি ঘনিষ্ঠ কারো মৃত্যু— এসব বিভিন্ন কারণে আমরা মানসিক চাপের মধ্যে থাকি। এই চাপ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে চাপ কমানো জরুরি।    


মানসিক চাপ কমাতে হলে শুরুতে চাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলো জানতে হবে। এরপর সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানসিক চাপ একা একা সমাধান করার চেষ্টা করবেন না। চাপ নিয়ন্ত্রণে বন্ধু,পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সাহায্য নিন। খোলামেলা কথা বলুন। প্রয়োজনে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।


মানসিক চাপ দূর করার কিছু দাওয়াই নিচে দেওয়া হলো-    


নিয়মিত ব্যায়াম
ব্যায়াম মানসিক চাপ তৈরিকারী হরমোনের নিঃসরণ কমায়।সুখি হরমোন হিসেবে পরিচিত এনডোরফিনের মাত্রা বাড়ায়।তাই যত ব্যস্তই থাকুন না কেন একটু সময় বের করে ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।যদি জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার সময় না হয় তবে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন। সেটিও চাপ কমাতে কাজে দেবে।
নিয়মিত ঘুম
ঘুম শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে উঠার একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন। নিয়মিত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
ভ্রমণ
চাপ বেশি অনুভব করতে হলে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। দেখবেন মন ভালো হয়ে গেছে। সঙ্গে নিতে পারেন প্রিয়জনদের।
সঠিক খাবার দাবার
মানসিক চাপে থাকলে খাওয়ার প্রতি অনেকেরই অনীহা হতে পারে। মনে রাখবেন, না খেয়ে থাকা চাপকে বা সমস্যাগুলোকে কমিয়ে দেবে না বরং খাবার আপনার শরীরকে কর্মক্ষম রাখবে এবং চাপ দূর করার পদক্ষেপগুলো নিতে সাহায্য করবে। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ক্যাফেইন গ্রহণ কমিয়ে দিন।
সকালের নাস্তা ভালোভাবে করুন। দিনে অন্তত ছোটবড় মিলিয়ে ছয় বেলা খাবার খান। গমে রুটি, পাস্তা ইত্যাদি খান। ভিটামিন এ এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান। পাশাপাশি গ্রিন টি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান।
যোগ ব্যায়াম
মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান করতে পারেন। ধ্যানের সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম শরীরকে শিথিল করে। ধ্যান আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি চাপ কমাতে যোগব্যায়ামও করতে পারেন।
পছন্দের কাজগুলো করুন
হয়তো ছোটো বেলায় গান শিখতেন বা ছবি আঁকতেন আপনি। বড় হওয়ার পর কাজের চাপে বা সংসারের বিভিন্ন ঝক্কি-ঝামেলায় এগুলো করা হয়ে উঠে না আর। মানসিক চাপের সময় এই পছন্দের কাজগুলো আবার শুরু করুন এবং কাজগুলোর মাধ্যমে নিজেকে সময় দিন।
ইতিবাচক হওয়ার চেষ্টা করুন
খারাপ চিন্তা হয়তো সবসময় এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে চেষ্টা করুন ইতিবাচক চিন্তা করতে। ভাবুন যা চাইছেন তা ইতিবাচকভাবেই পাবেন। এটা আপনাকে মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করবে।
নিজেকে গুছান
জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে গুছান। জীবনযাপনকে একটি রুটিনের ভেতরে নিয়ে আসুন। খাওয়া, ঘুমানো, কাজ এবং নিজের পছন্দের কাজ-সবকিছুর জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন।
কাছের বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন
মানসিক চাপের কারণ নিয়ে কাছের বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন। বন্ধুকে বলুন, আপনাকে সাহায্য করতে। তবে এমন বন্ধুকে বলবেন না, যে আপনাকে বুঝবে না অথবা একপর্যায়ে আপনাকে উপহাস করবে।
নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া
সর্বোপরি নিজের সঙ্গে কথা বলুন। কোন বিষয়গুলো আপনাকে মানসিক চাপে ফেলছে? কী করলে চাপ কম হতো? বর্তমানে কী অবস্থা? এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনি কী করতে পারনে- এগুলো ভাবুন।
চাপ দূর করতে কী করা প্রয়োজন, এর জন্য একটি তালিকা তৈরি করুন। আপনার চাহিদা অনুসারে তালিকাটি সাজান এবং সেই তালিকা অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এই পদক্ষেপগুলোর চর্চা মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করবে।
ইতিবাচক চিন্তা
নেতিবাচক চিন্তা এড়িয়ে ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে। ভাবুন, যা চাইছেন তা ইতিবাচকভাবেই পাবেন। এটা আপনাকে মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করবে।
মেনে নেওয়া
হয়তো খুব কাছের কারো বিপর্যয়, মৃত্যু বা চলে যাওয়া  আপনাকে বিপর্যস্ত করেছে। এতে দুঃখিত হলেও বিষয়টি নিয়ে ভাবা বন্ধ করুন। অতীত ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। তাই মেনে নিন।
পরিবার বা কর্মক্ষেত্রে সমস্যা, সম্পর্কে অবনতি, প্রিয়জনের সঙ্গে সম্পর্কের দোলাচল, অর্থনৈতিক সংকট, অসুস্থতা— এসব বিভিন্ন কারণে আমরা মানসিক চাপের মধ্যে থাকি। এই মানসিক চাপ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই নিজেকে ভালো রাখতে চাপ কমানো জরুরি।    
সূত্র : ওইকিহাউ
/  এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি