ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

মানসিক রোগাক্রান্ত হওয়ার ৯ লক্ষণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:১১, ২২ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৩:১২, ২২ নভেম্বর ২০১৭

অনেকেই ‘মানসিক চাপ’কে রোগ-বালাই মনে করে থাকেন। যখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন, তখনই তাঁরা মনে করেন যে, তাঁরা মানসিক রোগে আক্রান্ত। এই ধারণাকে এবার মিথ্যা প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো প্রাথমিকভাবে ধরা পড়লে সহজেই আমরা মুক্তি পেতে পারি এ ভয়াবহ রোগ থেকে। আসুন মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক ৯টি লক্ষণ জেনে নিই-
১.    ভুলে যাওয়ার প্রবণতা: স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, মানসিক রোগ মস্তিস্কের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি মস্তিস্কে গ্লুকোরটিকইডসের জন্ম দেয়। এতে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। গ্লুকোরটিকইডস কেবল নতুন স্মৃতি ধরে রাখে। জমা থাকা তথ্য ক্রমান্বয়ে ভুলিয়ে দেয়। যদি কারও ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়, দেরি না করে আজই চিকিৎসকের পরার্মশ নিন।
২.    ওজনের হ্রাস-বৃদ্ধি: মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের অস্বাভাবিকভাবে ওজনের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে পারে । তবে সাধারণত মানসিক চাপে আক্রান্ত হলে, ওজন ক্রমাগত কমতে থাকে। মানসিক চাপ হরমোনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি হরমোনে রাসায়নিক উপাদান এডারনেলাইন ও কর্টিসলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা হরমোনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে।
৩.    খাবার গ্রহণে অস্বাভাবিকতা:  মানষিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খাবার গ্রহণ করতে পারেন। এতে স্থূল হয়ে পড়েন।
৪.    পরিপাকতন্ত্রে গোলযোগ: ভারতের বিখ্যাত ডাক্তার কেনেথ কোচ বলেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের পরিপাকতন্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি লিভারকে সংক্রমিত করতে পারে। শুধু তাই নয়, এটি পাকস্থলিতে এসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বদহজম দেখা দেয়। এতে ডায়রিয়া ও আমাশয়ে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
৫. চুল পড়া: মানষিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল পড়া শুরু হয়ে যায়। এসময় চুলের বৃদ্ধি কমে যায়। চুলের রং ফ্যাকাশে হতে থাকে। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছে, দেহে হরমোনের উপর প্রভাব পড়ার কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়।
৬.    চামড়ার সমস্যা: মানষিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চামড়ায় বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকের লাবণ্য কমে যাবে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে। এছাড়া ত্বকে দাদ, খুজলি ও পাঁচড়া দেখা দিতে পারে।  অন্যদিকে চেজমা নামক একটি রোগে আক্রান্ত হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছে মানসিক চাপ দেহে রাসায়নিক উপাদানের চলাচলের উপর বাধা আরোপ করে।
৭.     মাথা ব্যথা: প্রাপ্ত বয়স্কদের মাথা-ব্যথার অন্যতম কারণ মানষিক রোগ। তবে এটাকে অনেকেই টেনশান, স্ট্রেস ও মাথা ব্যথা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের মাথার খুলি ও ঘাড়ের পেশিগুলো সংকুচিত হতে থাকে, তখন মাথা ব্যথা অনুভূত হয়। তবে মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ ঘুম না হওয়া, আলোর সংবেদনশীলতাও দায়ী।
৮.    ঘন ঘন অসুস্থতা: অমানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছে, এটি মানুষের ইম্যুনো সিস্টেমে প্রভাব ফেলে। এটি দেহের প্রোটিনের সঙ্গে ইম্যোনো কোষের সংযোগে বাধা দেয়। এতে মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় । বিশেষ করে ঠান্ডা ও ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করতে পারে না।
৯.    হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বেড়ে যাওয়া: মানষিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বেড়ে যায়। এতে খুব দ্রুত শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় আক্রান্ত ব্যক্তিকে। রোগীর পেশিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। একইসঙ্গে রক্তচাপও বেড়ে যায়।
তাই মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পেতে উপরের লক্ষণগুলো দেখামাত্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমজে/ এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি