ঢাকা, রবিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

‘মামা গরম আইছে, গরম’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩৪, ৬ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১০:১২, ৬ মার্চ ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

রাজধানীর পান্থপথ সিগন্যাল। ভোরের সূর্য কিছুটা তাপ দিতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে চোখ পড়লো ডাব বিক্রেতার দিকে। বিক্রেতার চারদিকে ঘিরে রাখছে অফিসগামী লোকজন। এগিয়ে যেতেই ‘মামা, ডাব লাগবে, ডাব।’ দাম জিজ্ঞেস করতেই চক্ষু চড়কগাছ। এক ডাবের মূল্য ৫০ টাকা। চড়া দামে ডাব বিক্রির কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা বলেন, ‘মামা গরম আইছে, গরম। হের লাইগ্গা ডাবের দামও বাড়ছে।’

রাজধানীর কেবল পান্থপথ সিগন্যাল-ই নয় গরমের প্রভাব পড়েছে কারওয়ান বাজারের ডাব বিক্রেতাদের মধ্যেও। পাইকারি বাজারখ্যাত কারওয়ান বাজারে এখন প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা ধরে। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে ডাব বিক্রেতা হারুন বলেন, ‘আগের তুলনায় ডাবের চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খুচরা বিক্রেতারা এখানে ভিড় করছেন। একেকজন বিক্রেতা আগের তুলনায় বেশি ডাব নিচ্ছে। তাই দামও বেড়েছে।’

শীতের আবহ কাটতে না কাটতেই তাপদাহ শুরু হয়েছে। যদিও বসন্তের বাতায়নে গরমের পরিমাণ কিছুটা হলেও কম অনুভূত হচ্ছে। তবে সকাল গড়িয়ে যতই দুপুরের দিকে যাচ্ছে, সূর্য যতোটা মাথার উপর আসছে, তাপদাহও যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। দিনের তাপমাত্রাও প্রতিদিনই অল্প অল্প করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে এই মাসেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এ বছর তাপমাত্রা রেকর্ডসংখ্যক হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডাব খেতে খেতেই কথা হয় এক ব্যাংকারের সঙ্গে। আরেফিন শামস নামের ওই ব্যাংকার জানায়, যানজটের কারণে সকালে হেঁটেই অফিসে আসেন তিনি। শীতের মধ্যে এভাবেই অফিস করেছেন। তবে গরম শুরু হওয়ায় এখন হেঁটে আসা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। এদিকে ডাব খাওয়া প্রসঙ্গে রসিকতা করে তিনি বলেন, ‘ভাই গরমে আসছে তো, না খাইলে ঠাণ্ডা হমো না’। শুধু শামস নয়, কথা হয় অরিন্দ, জহির, লিঙ্কনের সঙ্গে। ডাব খেতে খেতে তারাও একই কথা বলছেন। তবে তাদের শঙ্কা পুরোদমে গরম শুরু হলে, রাজধানীর জীবন অসহনীয় হয়ে উঠবে।

এরই মধ্যে অরিন্দ জানান, গরম আসলেই শুরু হয়ে লোড শোডিং। ধানমণ্ডি এলাকায় বসবাসরত অরিন্দ জানান, ‘গতকাল সন্ধ্যার পরপরই লোডি শেডিং দেখা দেয়। তা এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুতের কোন দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। তখনই টের পাই গরম এসেছে, গরম। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে জীবন আরও একটু দুর্বিষহ হয়ে ওঠবে।’

এদিকে রাজধানীতে ক্রমশই তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। ভোরে সূর্যের আলো ফুটতে না ফুটতেই উষ্ণ হয়ে উঠছে রাজধানী। এতে নিম্ন আয়ের মানুষজনের উপর গরমের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে দিন মজুর, নির্মাণ শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাসহ খেটে খাওয়া মানুষকে গরমের চোখ রাঙানিতে কিছুটা হলেও শঙ্কিত মনে হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মার্চ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে ৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে। তবে এবার এর চেয়ে আরও ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে এ মাসের গড় তাপমাত্রা দাঁড়াতে পারে ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।

 এদিকে মার্চ মাসের শেষের দিকে দেশের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে একটি মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং একটি মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মাত্রার তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। গরমের সঙ্গে সঙ্গে কালবৈশাখীর ঝাপ্টাও আসতে পারে এ মাসে।

 এমজে/

 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি