ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যে কারণে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫১, ২৯ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ২১:২৮, ৪ আগস্ট ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

পৃথিবীতে সব জীবের মৃত্যু সুনিশ্চিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।প্রত্যেক জীবের শেষ পরিণতি হলো মৃত্যু; এমনকি পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘ পৃথিবীতে সবকিছুই ধ্বংসশীল।’ (সুরা আর-রহমান : আয়াত ২৬)

সেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনিও মৃত্যু বরণ করবেন এবং তারাও মরবে।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৩০)

শুধু মানুষই নয় পৃথিবীর প্রথম থেকে আজ অবদি কোনো জাতির জীবনকেই চিরস্থায়ীত্ব দেয়া হয়নি। আল্লাহ বলেন, ‘চিরন্তনতা তো তোমার পূর্বে কোনো মানুষের জন্য সাব্যস্ত করিনি। (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৩৪)

যে কারণে মৃত্যুকে বেশি স্মরণ করবেন: মহান রাব্বুল আলামামিন মৃত্যুকে একটি সুনিশ্চিত বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। একজন মুসলিমের জন্য করণীয় হলো বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরণ করা, সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা। দুনিয়ার জীবনেই পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করা।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের আগে মর্যাদা দাও। (যার প্রথমটিই হলো) তোমার জীবনকে মৃত্যুর আগে মর্যাদা দাও।’ (মুসনাদে আহমদ)। এ কারণেই বেশি বেশি মৃত্যুর স্মরণ এবং মৃত্যুর প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

১. কোনো মানুষই জানেনা দুনিয়ায় তার জীবন কতদিনের। এটি এমন এক গোপন রহস্য যে, সে কখন কোথায় কিভাবে মরবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আর তা জেনে কেউ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিবে সে সুযোগও। এ কারণেই সব সময় মৃত্যুর স্মরণ করা।

২. মৃত্যু এমন এক জিনিস; যা দমন বা প্রতিহত করা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি তা থেকে পলায়ন করাও সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না সামনে অগ্রসর হতে পারবে। (সুরা আ’রাফ : আয়াত ৩৪)

৩. মুমিনের মৃত্যুর সময় মৃত্যুর ফেরেশতা সুন্দর সুঘ্রাণ, রূপ ও আকৃতি নিয়ে আসে। তাঁর সঙ্গে থাকে রহমতের ফেরেশতা; যারা মুমিন ব্যক্তিকে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেন। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ; অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের জন্য প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ। (সুরা হামীম সিজদা : আয়াত ৩০)

৪. আর যখন বেঈমানের কাছে মৃত্যুর আসে ফেরেশতা ভীতিকর আকৃতি ও কালো চেহারায় এবং তার সাথে থাকে আজাবের ফেরেশতা; যারা তাকে আজাবের দুঃসংবাদ দেয়।

আল্লাহ বলেন, ‘যদি আপনি দেখেন যখন জালেমরা মৃত্যু যন্ত্রণায় থাকে এবং ফেরেশতারা স্বীয় হাত প্রসারিত করে বলে, বের কর স্বীয় আত্মা! আজ তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি প্রদান করা হবে। কারণ, তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তাঁর আয়াতের মোকাবিলায় অহংকার ও বিদ্রোহ করতে।’ (সুরা আনআম : আয়াত ৯৩)

৫. মৃত্যুর আগে মানুষের ঈমানি কালেমার আকাঙ্ক্ষা ও প্রচেষ্টা থাকা কল্যাণের। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মৃত্যুর আগে যার শেষ বাক্য হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’; সে জান্নাত লাভ করবে।’ (আবু দাউদ)

তাই মানুষের উচিত সব সময় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা। তা সংঘটিত হতে পারে যে কোনো সময়, যে কোন মুর্হুতে। আর মৃত্যুর সময় প্রতিটি মানুষই ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হয়। এমনি সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি ও মুমূর্ষু অবস্থায় এক মুমিনের প্রতি অপর মুমিনের দায়িত্ব কর্তব্য হলো ঈমানি কালেমার তালকিন দেয়া। আর নিষ্ঠাবান ব্যক্তি ছাড়া এ কালিমা উচ্চারণ করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।

এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুমুখে পতিত ব্যক্তিকে কালিমা স্মরণ করে দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের মৃত্যুমুখে পতিত ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়তে বলো।’ (মুসলিম)

আর//এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি