ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪

স্রষ্টার দেওয়া আশীর্বাদ হলো সুস্থতা: ডা. নিজাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ

ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ

আমরা কি কখনো ভেবেছি সুস্থতা আমাদের জীবনের কতো প্রয়োজন। ধরুন আপনার যশ খ্যাতি, প্রতিপত্তি সবই আছে কিন্তু আপনি অসুস্থ । সুস্থ না থাকলে জীবনকে আপনি উপভোগ করবেন কীভাবে? জীবনকে কি উপভোগ করা যায়? না যায় না। তাই আমরা বলি স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল। স্রষ্টার দেওয়া একটা বড় আশীর্বাদ হলো সুস্থতা।

সব থাকার পরও নিজেকে যদি আপনি অসুস্থ মনে করেন আপনার মধ্যে যদি প্রাণবন্ততা না থাকে, আপনার মধ্যে যদি টেনশন আতঙ্ক, ভয় দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকেন তাহলে জীবন অর্থহীন। এখন প্রশ্ন হলো আমরা অসুস্থ হই কেন?

এই প্রসঙ্গে পৃথিবীর বিখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা কি বলছেন? হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের  হারবাট বেনসন, ড. ডিন অরনিশ, ড. দীপক চোপড়া, ড. লেরিদসি ড. জন রবিন্সসহ বিখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, আধুনিক মানুষের অধিকাংশ রোগ হলো সাইকোসোমাটিক, মনোদৈহিক।

অধ্যাপক ড. হারবাট বেনসন, হারবাডের মাইন বডি ইন্সিটিটিউডের প্রতিষ্ঠাতা। মেডিটেশনের নিরাময় ক্ষমতা নিয়ে তিনি অর্ধ শতক ধরে গবেষণা করছেন।  এই প্রসঙ্গে তিনি এক বক্তব্যে বলেন, যে সব কারণে মানুষ ডাক্তারের কাছে যায় তার ৬০ থেকে ৯০ ভাগ দায়ী হলো স্ট্রেস। ও অন্যান্য মানসিক চাপ যা কোন ওষুধ দিয়ে বা অপারেশনের দ্বারা সারানো সম্ভব নয়। আসলে সুখের অভাবই হল অসুখ। মনে সুখের অভাব হলেই টার প্রভাব পড়ে দেহে। মনের দুঃখ, কষ্ট, ক্ষোভ, হতাশা গ্লানি তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যাথা বেদনা রূপে দেখা দেয়। মাথা ব্যাথা, মাইগ্রেন, ব্যাক পেইন, বাত ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, এজমা অধিকাংশ রোগের লক্ষণই তাই।

এখন যদি ভেতরটা যদি প্রশান্ত রাখতে পারি, প্রফুল্ল রাখতে পারি, যদি আনন্দ প্রশান্তির সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারি তাহলে সুস্থতাই হবে আমাদের জন্য স্বাভাবিক। প্রতি মুহূর্তে, প্রতি নিঃশ্বাসে অনুভব করবো সুস্থতা। বুঝতে পারব জীবন কতো আনন্দময়। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে আমরা কি আচরণ করি, কতো অল্পতেই রেগে যাই। উৎকণ্ঠা দুরচিন্তা ছাড়া কি একদিনও কি পার করতে পারি? নিজেকে নিয়ে ভাবলে আমরা দেখবো আতঙ্ক, হতাশা, আর যন্ত্রণা আমাদের মনের ভিতরে জট পাকাতে থাকে। যার ফলাফল এসব রোগ ব্যাধি আর এসব অজান্তেই অনেক রোগের কারণ আমি নিজেই। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এই রোগ থেকে মুক্তি লাভের উপায় কিন্তু আমার কাছে আছে। নিজেদের শরীর হচ্ছে সেরা ফার্মেসি।   

আর মন হল সেরা ডাক্তার। কিন্তু মন কে প্রশান্ত করবো কীভাবে? যেভাবে আমাদের নবী রসূল অলি বুজরগ গণ করেছে। যে কথা হাজার বছর ধরে ধর্ম বলেছে, সেটা হল ধ্যান বা মেডিটেশন। মেডিটেশন করলে শরীর হালকা হয়। মনে প্রশান্তি আসে। হার্ট বিট ও রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়। টেনশন আতঙ্ক, ভয় দুশ্চিন্তায় দূর হয়। মন ও শরীরে লাভ করে এক অনাবিল আনন্দ ও প্রশান্তি। বাংলাদেশে এই চর্চার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কোয়ান্টাম । কোয়ান্টাম মেডিটেশন চর্চা করে লাখো মানুষ বদলে ফেলেছেন তাদের জীবন। ছিলেন অসুস্থ, হয়েছেন সুস্থ। কত বিচিত্র রোগ থেকে যে তারা মুক্ত হয়েছেন টার কোন ইয়াত্তা নেই। আসলে নিজেদের সৃষ্ট মনোজাগতিক শৃঙ্খলায় বন্দী হয়ে আছি আমরা। মেডিটেশন এই শৃঙ্খল মুক্তির প্রধান উপায়। তাই সুস্থ জীবনের পথে আপনার প্রথম পদক্ষেপটি নিন। তাই প্রতিদিন মেডিটেশন করুন। আর মুখে শত বার বলুন ‘ সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন, কর্ম ব্যস্ত সুখী জীবন। দেখবেন জীবন কতো আনন্দের। কতো প্রশান্তির।   

লেখক: এম ডি এফসিপিএস, অধ্যাপক, সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার।

কোয়ান্টাম থেকে সংগৃহীত।

এসএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি