ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

হাঁপানিতে কারা বেশি ভোগেন, পুরুষ নাকি নারী?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৬, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১০:৫১, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

আমাদের ফুসফুসে অক্সিজেন বহনকারী সরু সরু অজস্র নালি পথ রয়েছে। অ্যালার্জি, ধুলো বা অন্যান্য নানা কারণে শ্বাসনালীর পেশি ফুলে উঠলে তখন অক্সিজেন বহনকারী নালি পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে শরীর তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। তখন নিঃশ্বাসের কষ্টসহ নানা সমস্যা শুরু হয়। এই রোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বংশগত, তবে ইদানীং মাত্রাতিরিক্ত দূষণের ফলে বাড়ছে হাঁপানির সমস্যা। তবে পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই হাঁপানির সমস্যায় বেশি ভোগেন বলে দাবি গবেষকদের। 

টেস্টোস্টেরন হরমোন শরীরের রোগ প্রতিরোধক কোষের কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে যে কোন ভাইরাস সংক্রমণেও বাধা দেয় টেস্টোস্টেরন হরমোন। চিকিত্সকদের মতে, মহিলাদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন না থাকায় তারা অনেক সহজে অ্যাজমায় আক্রান্ত হন। তবে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, শৈশবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে। কিন্তু বয়ঃসন্ধির পর থেকে এই প্রবণতা বদলে যেতে থাকে।

সেল রিপোর্ট জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে সাইকোটিন প্রোটিন সৃষ্টিতে বাধা পায়। এই সাইটোকিনস প্রোটিন ফুসফুসে শ্লেষ্মা (মিউকাস) তৈরি করে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে বাধার সৃষ্টি করে। তাছাড়া, সাইটোকিনস প্রোটিনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রদাহের ফলে শ্বাসনালীর পেশি ফুলে ওঠে এবং অক্সিজেন বহনকারী নালী পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর থেকেই নিঃশ্বাসের কষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁপানি হল ডায়াবেটিস ও হাই ব্লাডপ্রেশারের মতো একটি অসুখ। যা সম্পূর্ণ রূপে নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে সতর্কতা অবলম্বন করে চললে আর সঠিক চিকিৎসায় এই রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই মহিলাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালি বেশি হয় তাই যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করা উচিত।  সেই সঙ্গে আর যে সতর্কতা নেওয়া যায় তাহলো ... 

* বিছানা ও বালিশ ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে।

* ধুলো ঝাড়াঝাড়ি করা চলবে না।

* ধোঁয়াযুক্ত বা খুব কড়া গন্ধওয়ালা পরিবেশে থাকা চলবে না।

* আলো-হাওয়া যুক্ত, দূষণমুক্ত খোলামেলা পরিবেশ থাকা দরকার। কারণ স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ফাঙ্গাল স্পোর অনেক সময় হাঁপানির কারণ হয়।

* হাঁপানি রোগীর আশেপাশে ধূমপান বর্জনীয় ও মশার কয়েল জ্বালানো যাবে না।

* অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্যও হাঁপানি রোগীরা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাই নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে পরিশ্রমের ঝুঁকি নেয়া উচিত।

* হালকা খাওয়া-দাওয়া করা উচিত যাতে হজমের কোনও অসুবিধে না হয়। কারণ, বদহজম এবং অম্বল থেকেও হাঁপানি হতে পারে। যে খাবারে এ্যালার্জি আছে তা বর্জন করে চলতে হবে।

সতর্ক জীবনযাপন ও চিকিৎসার মাধ্যমে শতকরা ৮০ ভাগ হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি