১ বিলিয়ন ডলার পাচার: এস আলম পরিবারের হিসাব ও শেয়ার জব্দ
প্রকাশিত : ২০:৪৯, ১০ জুলাই ২০২৫

সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলার অর্থপাচারের অভিযোগে আলোচিত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের নামে থাকা ৬৪টি ব্যাংক হিসাব এবং ১০টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এই আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. তানজির আহমেদের তথ্য অনুযায়ী, এস আলমের একার ৪০টি ব্যাংক হিসাব, স্ত্রী ফারজানা পারভীনের ছয়টি ব্যাংক হিসাব ও আটটি কোম্পানির শেয়ার, ছেলেরা আশরাফুল, আহসানুল ও আসাদুল আলম মাহির মোট ১৫টি ব্যাংক হিসাব ও দুটি কোম্পানির শেয়ার, শ্যালক ও বোনের নামে আরও চারটি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হকের করা আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগেও এস আলম ও পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক পর্যায়ে অর্থ ও সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
গত ২৪ জুন সাইপ্রাসে এস আলমের বাড়ি জব্দ=
ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড ও জার্সিতে থাকা ২৫টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ
১৬ জানুয়ারি: ৩৫৬৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ
৩ ফেব্রুয়ারি: ১৭৫ বিঘা সম্পদ (মূল্য ৩৬৮ কোটি টাকা) জব্দ
১২ ফেব্রুয়ারি: ৫১০৯ কোটি টাকার ৪৩৭ কোটি শেয়ার অবরুদ্ধ
২৩ ফেব্রুয়ারি: ৮১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ
১০ মার্চ ও ৯ এপ্রিল: এক হাজারের বেশি বিঘা জমি জব্দ
৯ এপ্রিল: ঘনিষ্ঠজনদের ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
১৭ এপ্রিল: আরও ১৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
এস আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, অবৈধ ঋণ গ্রহণ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের নামে অর্থপাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায়। ২০২৩ সালে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত ‘S Alam’s Aladdin’s Lamp’ শিরোনামের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য গড়লেও তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই অর্থ সরিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেন এস আলম।
গত বছর অক্টোবরে তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। এরপর হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা ও আপিল বিভাগের রায় শেষে আবারও সক্রিয়ভাবে তদন্ত শুরু করেছে দুদক এবং বিএফআইইউ।
চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা আলোচনায় আসে ব্যাংক লুট ও অর্থপাচারের অভিযোগে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে।
এই ঘটনা দেশের আর্থিক খাতে নজিরবিহীন এক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
আরও পড়ুন