ঢাকা, সোমবার   ০৪ আগস্ট ২০২৫

ছাত্রলীগের হয়ে নির্যাতন চালাতো ছাত্রশিবির, অভিযোগ কাদেরের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৯, ৪ আগস্ট ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগ পরিচয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। 

রোববার রাতে নিজের ফেসবুক পোস্টে এ অভিযোগ তোলেন তিনি।

পোস্টে আবদুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ছাত্রলীগের হয়ে যেসব শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের অনেকেই আগে ছিলেন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার পর নিজেদের ‘বিশ্বস্ত’ প্রমাণ করতে তারা হয়ে ওঠেন অতি উৎসাহী।’ 

তিনি লিখেছেন, ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে বিজয় একাত্তর হলের শাহরিয়াদ নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। সেখানে নেতৃত্বে দেওয়া মাজেদুর রহমান ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন আবদুল কাদের। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বনে বনে যান ভয়ংকর নিপীড়ক, নির্যাতক।

কাদেরের দাবি, শুধু মাজেদুর রহমানই নয়, ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সর্বশেষ কমিটির দপ্তর সম্পাদক মুসাদ্দিক বিল্লাহও ছিলেন শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। তবে পদ–পদবির জন্য তিনিও হয়ে গেলেন কট্টর ছাত্রলীগ। ওই পোস্টে আরও বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন যাদের মধ্যে আছেন, জসীমউদ্দীন হলের আফজালুন নাঈম, মুজিব হলের ইলিয়াস হোসাইন, স্যার এ এফ রহমান হলের রায়হান উদ্দিন।  যারা ছাত্রলীগের হয়ে ভয়ংকর নির্যাতন চালিয়েছেন। ক্ষমতার পালাবদলের পর তাঁরা প্রকাশ্যে শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন। এইসব ‘গুপ্ত শিবির’ সদস্যরা তদবির, তেলবাজি ও ছাত্রলীগের কালচার অনুকরণ করে পদ–পদবি আদায়ের জন্য কাজ করতেন।

আবদুল কাদের তার ওই পোস্টে ছাত্রলীগের হয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো এমন কয়েকজনের বিষয়ে শিবিরের তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও বর্তমানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম ফোন দিয়ে তদবির করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে হলগুলোতে গঠিত ব্যাচ প্রতিনিধি ও শৃঙ্খলা কমিটিগুলো মূলত ‘শিবিরের প্রেসক্রিপশনে’ হয়েছে। অনলাইন ভোটাভুটির মাধ্যমে নিজেদের লোকদের নির্বাচিত করে তাঁরা পরবর্তীতে হলগুলোর একপ্রকার ‘ছায়া প্রশাসক’ হয়ে ওঠেন। তিনি লিখেছেন, এই ব্যাচ প্রতিনিধিরাই পরে ছাত্রলীগের নামের তালিকা তৈরি করে; সেখানে নিজেদের ‘সাথি ভাইদের’ নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।

তবে, আব্দুল কাদেরের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন সাদিক কায়েম। তিনি তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে সাদিক কায়েম এসব অভিযোগের বিস্তারিত জবাব দেন।

এতে সাদিক কায়েম লিখেছেন, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার যে ন্যারেটিভ তৈরি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যারা নিরপরাধ অথচ ব্যক্তিগত আক্রোশে মামলার শিকার হচ্ছেন—তাদের ব্যাপারে তিনি দায়িত্বশীলভাবে তথ্য যাচাইয়ের জন্য এনসিপির নেতা আরমান হোসেন ও মাহিনকে কয়েকটি নাম ফরওয়ার্ড করেন। এটা ছিল অপরাধী শনাক্তে সচেতন প্রক্রিয়ার অংশ।

তিনি আরও বলেন, তিনি কোনো অভিযুক্তকে বাঁচাতে কোনো তদবির করিনি। বরং সে অপরাধী এবং তাকে আইনের আওতায় আনা উচিত—এমনটাই ছিল আমার অবস্থান। যাদের নাম স্ক্রিনশটে রয়েছে, তারা কেউই শিবিরের সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত নন, এমনকি ৫ আগস্টের পর থেকে শিবিরের কোনো কার্যক্রমেও ছিলেন না।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি