ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

করোনা ভাইরাস: আক্রান্ত ৫ লাখ, মৃত্যু ২৪ হাজার ছাড়ালো 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৫, ২৭ মার্চ ২০২০

প্রকোপ ঠেকানোর এখনো কার্যকরি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। ফলে, সারাবিশ্বে করোনায় প্রতি মিনিটে বাড়ছে আক্রান্ত ও প্রাণহানির সংখ্যা। 

যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে এবার যুক্তরাষ্ট্রে। উৎপত্তিস্থল চীনকে ছাড়িয়ে এতদিন ইউরোপী দেশ ইতালি সবার ওপরে থাকলেও এবার তাদের ছাড়িয়ে গেছে আমেরিকা। 

তবে অন্যান্য দেশও পিছিয়ে নেই। কম বেশি আক্রান্ত সব রাষ্ট্রেই বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ তালিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাড়ে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। যা গত ডিসেম্বর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত। এতে করে গোটাবিশ্বে সংক্রমিতের সংখ্যা ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। 

আর গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে নতুন করে প্রাণ ঝড়েছে ২ হাজার ৭৯০ জনের। যা একদিনে সর্বোচ্চ। যার অধিকাংশই ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে করোনার থাবায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হাজার ৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। 

অপরদিকে, গত ডিসেম্বরে শুর হওয়া ভাইরাসটিতে আশঙ্কাজনকহারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সুস্থ হওয়ার পরিমাণও কম নয়। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৪২ জন। যার অধিকাংশই চীনা নাগরিক। 

আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে। 

মহামারি আকার ধারণ করা ভাইরাসটিতে এতোদিন আক্রান্তের দিক থেকে ইউরোপের অবস্থা ভয়াবহ হলেও এবার তাদের অতিক্রম করে শীর্ষে উঠেছে ট্রাম্পের দেশ। যেখানে পাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে চিকিৎসকরাও ভাইরাসটির প্রকোপ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। 

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে একদিনে আরও ১৭ হাজার ২৩২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৪৩৫ জনে। 

অপরদিকে, কার্যকরি কোনো প্রতিষেধক না থাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ২৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ২৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য। সেখানে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

সংক্রমণের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে চীন থাকলেও অল্প সময়েই তাকে অতিক্রম করবে ইউরোপীয় দেশ ইতালি। উহানে শুরু হওয়া ভাইরাসটির দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ৮১ হাজার ৩৪০ জন। মারা গেছেন ৩ হাজার ২৯২ জন নাগরিক। 
 
মহামারি রূপ পাওয়া ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রাণহানি ইতালিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। ফলে মোট আক্রান্ত সংখ্যা ৮০ হাজার ৫৮৯ জনে পৌঁছেছে। মারা গেছে আরও আর ৭শ’র বেশি নাগরিক। এ নিয়ে সেখানে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি ৮ হাজার ২১৫ জন। 

ইতালির পথেই হাটছে ইউরোপের আরেক দেশ স্পেন। দেশটিতে ভাইরাসটির কালো থাবায় বিপর্যস্ত স্পেনে নতুন করে ৮ হাজার ২৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৫৭ হাজার পেরিয়েছে। যেখানে মারা গেছেন ৪ হাজার ৩৬৫ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭১৮ জনের।

সময় যত গড়াচ্ছে  ইউরোপের দেশটিতে করোনার তাণ্ডব ততই বেড়ে চলছে। দেশজুড়ে লকডাউন জারি করায় ৪ কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ এখন গৃহবন্দি রয়েছেন।

এদিকে জার্মানিতে প্রাণহানি তেমনটা না হলেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। দেশটিতে নতুন করে একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ। এতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার জনে। মারা গেছেন আরও ৬১ জন। এ নিয়ে ইউরোপের দেশটিতে ২৬৭ জনের মৃত্যু হল।   

এরপরই রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান। দেশটিতে প্রাণঘাতি ভাইরাসটিতে নতুন করে ১৫৭ জনের প্রাণ গেছে। এ নিয়ে ইসলামী প্রজাতান্ত্রিক দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ২৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪০৬। 

ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল ততটা প্রকোপ না হলেও একেবারেই পিছিয়ে নেই ফ্রান্স। ইউরোপের এই দেশটিতে আরও ৩৬৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে, ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত প্রাণ কেড়েছে ১ হাজার ৬৯৬ জনের। আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ১৫৫ জনে। 

এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্ত-৯ হাজার ২৪১ জনের বিপরীতে মৃত্যু হয়েছে ১৩১ জনের, যুক্তরাজ্যে ১১ হাজার ৬৫৮ জনের বিপরীতে মারা গেছেন ৫৭৮ জন। সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ১১ হাজার ৮১১ নাগরিক, সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯২ জন, নেদারল্যান্ডসে  সাড়ে ৭ হাজার জনের আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৪৩৪ জন। 

এদিকে, প্রাণঘাতি ভাইরাসটির বিস্তার রোধে নতুন আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনের জন্য পুরো ভারতজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

তারপরও ভারতে থেমে নেই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। যেখানে নতুন করে ৭০ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২৭ জনে। মারা গেছেন আরও ৮ জন। যা এখন একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এতে মোদির দেশে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০ জন। 

প্রকোপ থেমে নেই দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ বাংলাদেশেও। সংখ্যায় কম হলেও প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে চিকিৎসকসহ ৪ জনের শরীরের ভাইরাসটির সংক্রমণ পাওয়া গেছে। 

এতে সরকারের দেয়া তথ্যমতে দেশে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮ জন। তবে অপরিবর্তীত রয়েছে মৃতের সংখ্যা (৫ জন)। 

এআই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি