মনের আলোয় পথ চলেন অন্ধ পারেছা খাতুন (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:৫৪, ২০ নভেম্বর ২০২০
পারেছা খাতুন। চোখে আলো না থাকলেও মনের আলোয় পথ চলেন তিনি। অভাবের সংসার। মানসিক ভারসাম্যহীন ননদ, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্বামী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে তার কষ্টের জীবন। চোখ নেই, তাকে কি- নিজেই সব কিছু সামলে নিচ্ছেন পারেছা।
ভোর থেকেই শুরু হয় পারেছার কাজ। স্বামীকে কাজে পাঠিয়ে নিজে নেমে পড়েন সংসারের কাজে। মনের আলোয় একাই রান্না, সন্তানদের গোসল, খাওয়ানোসহ সব কাজই করেন নিপুণ হাতে। নিজে অন্ধ, স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন। দুটি সন্তান, তারাও অন্ধ। এছাড়া মানসিক প্রতিবন্ধী আরেক ননদ। তাদের জন্য দুমুঠো ভাতের চিন্তা তাকেই করতে হয়।
পারেছা খাতুন বলেন, বাচ্চারা কিভাবে চলবে, খাওয়াবো, পড়াবো এই নিয়ে চিন্তা সব সময়। এই মুহূর্তে আমাদের সরকারের সাহায্য দরকার।
স্বামী আনিস বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় মজুরি পান অর্ধেক। থাকার জন্য একটা ঘর বানিয়ে দিয়েছে স্থানীয় ও প্রবাসী কয়েকজন যুবক। সম্বল বলতে কয়েকটা ছাগল আর হাঁস মুরগি।
স্থানীয় যুবক বলেন, বর্তমানে যে ঘরটা আমরা করে দিয়েছি সেটা সাময়িকভাবে বসবাসের যোগ্য। কিন্তু আসলে সেটা স্থায়ী নয়।
দৃষ্টিহীন দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পারেছা খাতুন। তবে সংগ্রাম করেই এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। এখনও পর্যন্ত কোনো সরকারি অনুদান পাননি তারা।
এলাকাবাসীরা জানান, এই পরিবারের সবাই প্রতিবন্ধী। সরকারি কোন অনুদান এরা পায়নি এবং কোন জনপ্রতিনিধি এদের কোন খোঁজও নেয়নি।
ভবানীপুর ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম বলেন, ওদের চাওয়া-পাওয়াটা সম্পূর্ণ করতে পারেনি। সামনে এদের জন্য যথাযথ চেষ্টা করবো।
এদিকে, জনপ্রতিনিধিরা নাম দিলে যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
গাংনী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান বলেন, জনপ্রতিনিধিরা যদি তাদের নাম আমাদের কাছে পাঠায় তাহলে যাছাই-বাছাই করে তাদেরকে সাহায্য করার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করবো।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, এদের ব্যাপারে খুব তাড়াতাড়ি যাতে একটি ব্যবস্থা করে দেয়া হয় সে ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানাবো।
একটু সহায়তা পেলে হয়তো কিছুটা সহজ হবে পারেছা ও তার পরিবারের পথ চলা। নয়তো এভাবেই কাটবে তাদের জীবন।
এএইচ/এসএ/
আরও পড়ুন