একযোগে আজান ও উলুধ্বনি আতঙ্কে মানুষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গভীর রাতে মসজিদে আজান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়িতে উলুধ্বনি দেয়ার কথা শোনা গেছে। গতকাল রাত ১০টা থেকে আজান ও উলুধ্বনি শুরু হয়। থেমে থেমে চলে রাত ৩টা পর্যন্ত। 

পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আকস্মিক এ আযান ও উলুধ্বনির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা ফোন করে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে এর সঠিক কারণ জানতে চায়। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও হতবাক এঘটনায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে বৃহস্পতিবার রাতে ১২টার দিকে ভূমিকম্পের আঘাতে পৃথিবী কেয়ামত হয়ে যাবে এমন বিশ্বাসে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। 

আতঙ্কিত মানুষ আজানের পরই বিভিন্ন এলাকায় শুরু করে করোনা বিরোধী মিছিল। মিছিলে উচ্চারিত হতে থাকে ‘করোনা থেকে সাবধান’, ‘আল্লাহ আকবার’। আর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ ঘরে উলুধ্বনি দিতে থাকেন।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি মেসেজ ছড়ানো হয়। এরপরই সারাদেশের ন্যায় নাসিরনগর উপজেলার প্রায় সকল মসজিদে আজান দেয়া হয়। সেই সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরে শংখ ও কাঁসার ধ্বনি এবং নিজ নিজ বাড়িতে উলুধ্বনি দেয়। সাধারণ মানুষের ধারণা করোনা ভাইরাসের মহামারির সময় একযোগে আজান দিলে সকল আপদ-বিপদ দূর হয়ে যায়।

বুড়িশ্বর ইউনিয়নের সিংহগ্রামের নিত্তলাল জানান, আমাদের পাড়ার মহিলারা রাত দুইটার সময় পুকুরে স্নান করে এসে প্রতিমার সামনে উলুধ্বনি দিচ্ছেন। কেন দিচ্ছেন আমরা কিছুই জানিনা। এ অবস্থায় আমাদের কি করণীয় তাও বুঝতে পারছিনা।

এদিকে নাসিরনগরে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা মসজিদে আযানের পর দলবেঁধে মিছিল করছেন বলেও শুনা গেছে। এ চিত্র উপজেলার সর্বত্র। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ফেসবুক পেইজে সর্তকর্তামূলক বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। নিজ নিজ ঘরে থেকে করোনা প্রতিরোধে সহায়তা করতে অনুরোধ করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা আশরাফী জানান, সরকারিভাবে মসজিদে একযোগে আযান দেয়ার কোন নির্দেশনা ছিলনা। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে এসব করেছে বলে তিনি যোগ করেন।

কেআই/এসি