ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

শখের অ্যাকুরিয়াম: পর্ব-২

মো: আতিকুর রহমান

প্রকাশিত : ০৯:২২, ৫ জুন ২০২১

আমাদের শহর কেন্দ্রিক জীবনধারায় ড্রইংরুমে একটি অ্যাকুরিয়াম সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তোলে নিঃসন্দেহে। কিন্তু এই সৌখিনতার পাশাপাশি চলে আসে সেই জিনিসটার প্রতি যত্ন এবং রক্ষণাবেক্ষণ। প্রথম পর্বে আমরা জেনেছিলাম কীভাবে এই অ্যাকুরিয়াম তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে। আর আজ জানবো- নতুন সৌখিন মাছ প্রেমিদের কিছু কমন প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে। আসুন, তাহলে জেনে নেয়া যাক-

১. অ্যাকুরিয়াম কিভাবে সাজাবো?
উত্তর: অ্যাকুরিয়াম সাজানো হচ্ছে- নিজের শৈল্পিকতা। মানে, আমি আমার অ্যাকুরিয়াম কিভাবে সাজাবো, সেটা আমার নিজের কাছে। মাটি-বালি দিয়ে অ্যাকুরিয়াম সাজাবো? নাকি পাথর দিয়ে করবো। যেভাবে আমার দেখতে ভালো লাগে সেভাবে সাজাবো। তবে সাধারণত অ্যাকুরিয়ামের মাঝখানে একটা বা কয়েকটা বড় পাথর রাখা যেতে পারে। এতে করে সৌখিন মাছ লুকাতে পারে। বড় বড় পাথর আবার পানিকে ঠান্ডা রাখে। আবার পাথরে শেওলা জমে যা মাছেরা খাবার হিসেবে খেয়ে থাকে। অ্যাকুরিয়ামের ঢাকনার সাথে লাইট লাগানো হয়, যাতে এর পানি পরিস্কার ভাবে দেখা যায়। অনেকে আবার রঙ বেরঙের ছোট ছোট পাথর দিয়ে থাকেন। ফলে অ্যাকুরিয়াম দেখতে আরও সুন্দর দেখায়।

২. অ্যাকুরিয়ামে কি অক্সিজেন বা ফিল্টার দেব?
উত্তর: অ্যাকুরিয়ামে অক্সিজেন লাগবেই। কারণ অক্সিজেন ছাড়া মাছ বাঁচে না। এবার ফিল্টারের কাজ কি? পানিতে অনেক ধরণের ময়লা থাকে যা অ্যাকুরিয়ামের পানি ঘোলা করে ফেলে। পানিতে ফিল্টার ব্যবহার করলে পানি থেকে ময়লা আলাদা হয়ে যায়। ফিল্টার মাঝে মাঝে খুলে ভালো পানি দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। 

৩. অ্যাকুরিয়ামের পানি কিছু দিন পর ঘোলা হয়ে যায় কেন?
উত্তর: অ্যাকুরিয়ামের পানি ঘোলা হওয়ার অন্যতম কারণ হলো- মাছের বিষ্ঠা। এ সমস্যা সমাধানে অ্যাকুরিয়ামের পানিতে কিছু শামুক দেয়া যেতে পারে। এত করে মাছের বিষ্ঠা শামুক খেয়ে ফেলবে ফলে পানি কম ঘোলা হবে। আবার সাকার নামক মাছ দেয়া যেতে পারে, এরা অ্যাকুরিয়ামের গ্লাসে পড়া শেওলা খেয়ে অ্যাকুরিয়ামের গ্লাস পরিষ্কার রাখে। 

তবে আরেকটি কাজ করলে পানি ঘোলা হওয়ার সম্ভাবনা ৯০ ভাগ কমে যাবে। সেটা হলো- মাটি। মানে, অ্যাকুরিয়ামে মাটি রাখতে হবে। অনেকে বলবেন, অ্যাকুরিয়ামে মাটি দিলে পানি আরও বেশি ঘোলা হয়ে যাবে। আমি বলবো, অ্যাকুরিয়ামে মাটি ঠিকভাবে দিলে পানি ঘোলা হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে একটা নিয়ম মানতে হবে। সেটা হলো- খালি অ্যাকুরিয়ামে প্রথমে খাড়া দুই আংগুল পরিমাণ সমান্তরালভাবে মাটি বিছিয়ে দিবেন। তারপর সিলেটি বালি বা লাল বালি এক আংগুল করে বিছিয়ে দিবেন। তারপর সাদা বালি এক আংগুল পরিমাণ বিছিয়ে দিবেন। এরপর এক আংগুল গুড়া পাথর বিছিয়ে দেন। এতে করে পানি ঘোলা ৯০ ভাগ কমে যাবে।

৪. অ্যাকুরিয়ামে কি কি অ্যাকুয়াটিক গাছ লাগাব?
উত্তর: অ্যাকুরিয়ামে গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। অ্যাকুরিয়ামে গাছ থাকলে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। অ্যাকুরিয়ামে গাছ থাকলে তাতে শেওলা জমে যা মাছের খাদ্যের যোগান দেয়। মাছের বাচ্চাগুলো লুকানোর জায়গা পায়। অ্যাকুরিয়ামের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পায়।

৫. সৌখিন মাছ মারা যায় কেন?
উত্তর: অ্যাকুরিয়ামে সৌখিন মাছ মারা যাওয়ার মূল কারণ হলো- পানি। পানি বিষাক্ত হয়ে গেলে মাছ মারা যায় বেশী। পানিতে মাঝে মাঝে মোটা লবন একমুঠ পরিমাণ ছিটিয়ে দেয়া ভালো। এছাড়াও আরও কিছু কারণ আছে। অনেক সময় অ্যাকুরিয়ামের ঢাকনা পুরো আটকে রাখি আমরা। এতে করেও মাছ মারা যায়। পানিতে কিছু শামুক রাখা যেতে পারে। ফলে এরা পানি পরিষ্কার রাখতে ও মাছের রোগ কমাতে অনেক কাজে আসে। অ্যাকুরিয়ামে সাধারণত আমরা একমাস পর পর পানি চেঞ্জ করে থাকি। পানি চেঞ্জ করার সময় মনে রাখতে হবে, পুরো পানি একসাথে চেঞ্জ করা যাবে না। তিন ভাগের দুই ভাগ বা অর্ধেক পানি চেঞ্জ করা ভালো।

চলবে...

লেখক- একুয়ারিস্ট ও গণমাধ্যম কর্মী।
ফেসবুক গ্রুপ: https://www.facebook.com/groups/aquariumfishprice

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি