ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

দি ডক্টরস্ (ভিডিও)

কণ্ঠের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০১, ১৬ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ২১:৩০, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

আমাদের পারস্পারিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে কণ্ঠ বা কথা বলা। আমরা কণ্ঠস্বর নিয়ে খুব বেশী সচেতন নই। মারাত্মক কণ্ঠনালীর রোগ বা ক্যান্সারে আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই না।

প্রতি বছর ১৬ এপ্রিল বিশ্ব কণ্ঠ দিবস পালন করা হয়। কণ্ঠ ও কণ্ঠনালির সমস্যা এবং কণ্ঠকে সুস্থ রাখার উপায় সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিই দিবসটির মূল উদ্দেশ্য। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মেক দ্য ভয়েস, টু চেরিশ ইউর ভয়েস’। বিশ্বের অন্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে এই দিবস।

২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্ব কণ্ঠ দিবস উদযাপন করে আসছে। সমগ্র বিশ্বে ২০০২ সাল হতে বিশ্ব কণ্ঠ দিবস পালিত হচ্ছে। ব্রাজিলে ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম মানুষের কণ্ঠ ও কণ্ঠনালীর সমস্যা এবং নাক কান গলা রোগ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্য জাতীয় কণ্ঠ সপ্তাহ পালিত হয়।

একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) ‘দি ডক্টরস্’ অনুষ্ঠানে আজকের আলোচনার বিষয়- ‘কণ্ঠের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকার

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন- অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু (বিভাগীয় প্রধান, নাক, কান, গলা বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল)

দি ডক্টরস্ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন- অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ

শ্রুতিলিখন করেছেন- সোহাগ আশরাফ

প্রশ্ন : আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব কণ্ঠ দিবস। কণ্ঠ নিয়ে এতো আলোচনা কেনো?

উত্তর : আমরা আমাদের ঘুম নিয়ে চিন্তা করি। আমরা আমাদের কান নিয়ে চিন্তা করি। আমরা আমাদের চোখ নিয়ে চিন্তা করি। আমরা আমাদের হার্ট নিয়ে চিন্তা করি। কিন্তু আমরা কি কখনও আমাদের কণ্ঠ নিয়ে চিন্তা করি? কণ্ঠও যে আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা হয়তো ভাবি না।

আপনি জানেন যে- কণ্ঠের মাধ্যমে মানুষ একজন আরেক জনের সঙ্গে কথা বলে। কণ্ঠ শুধু কণ্ঠ না। এটি কিন্তু মানুষের ব্যাক্তিত্বেরও পরিচায়ক। যারা কণ্ঠকে ব্যবহার করেন, যেমন শিক্ষক, অ্যাডভোকেট, রাজনীতিবিদ, সঙ্গীতশিল্পী, আবৃত্তিকার, অভিনয় শিল্পী, উপস্থাপক, এমনকি আমরাও যারা কণ্ঠ ব্যবহার করছি তাদের কিন্তু কণ্ঠের যদি কোন সামান্য ত্রুটিও হয় তখনই বোঝা যায় কণ্ঠের গুরুত্ব কি! এই কণ্ঠ কিন্তু প্রতিটি মানুষের জন্য ইউনিক। এটি কিন্তু বংশগত একটা প্রাপ্তি। আমরা অনুশিলনের মাধ্যমে কিছুটা পরিমার্জিত করতে পারি।

প্রশ্ন : এবারের কণ্ঠ দিবসে একটা বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে, তা হচ্ছে- শিক্ষকদের কণ্ঠ। অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষকদের কণ্ঠ খুবই দুর্বল। অর্থাৎ তাদের কথা শিক্ষার্থীরা শুনতে পারেন না যারা ক্লাসে থাকেন। এতে তো শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতিও হচ্ছে। আপনি কি মনে করেন?

উত্তর : কণ্ঠস্বর কিন্তু তার ব্যক্তিত্ব ও তার কমান্ডকে এনশিওর করে। যারা কণ্ঠ কেন্দ্রীক কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের কিন্তু অবশ্যই ভালো কণ্ঠের অধিকারি হতে হয়। তার কণ্ঠ যারা শুনছেন তাদের কাছে স্পষ্ট পৌঁছাতে হবে। শুধু শিক্ষক নয়, সবার কণ্ঠেরই যত্ন নেওয়া জরুরী। কণ্ঠের যত্ন না নেওয়া ছাড়া আপনি কখনও সমাজে নিজেকে বিকশিত করতে পারবেন না।

প্রশ্ন : একজন বয়স্ক লোকের খুব ভালো কণ্ঠস্বর ছিল। হঠাৎ করে কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আসলো। কি করাণে হতে পারে?

উত্তর : আসলে এটি আমি একটু ভিন্ন ভাবে বলতে চাই। সেটা হলো বাচ্চাদের হতে পারে। বয়স্কদের হতে পারে। বিভিন্ন বয়সে আমরা বিভিন্ন ভাবে চিন্তা করি। সাধারণ বিষয় হচ্ছে সকল বয়সের মানুষের কেনো কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়?

ভোকাল কর্ড বা ল্যারিংসের নার্ভের দুর্বলতা বা কোন সমস্যার জন্য কণ্ঠনালীর পরিবর্তন হতে পারে। ভাইরাস জনিত প্রদাহের জন্য নার্ভের দুর্বলতা হয়। সাধারণত এক দিকের নার্ভ-ই প্যারালাইসিস হয়, দুই দিকের নার্ভ একই সঙ্গে আক্রান্ত হওয়া খুবই বিরল। এক দিকের নার্ভ প্যারালাইসিসের কারণ হচ্ছে ভাইরাল ইনফেকশন, টিউমার, ক্যান্সার ও থাইরয়েড অপারেশন। কণ্ঠনালীর প্যারালাইসিসের জন্য ফেঁসফেঁসে আওয়াজ হয় এবং এটি নিঃশ্বাসের সঙ্গে জড়িত।

প্রশ্ন : কণ্ঠনালীর ক্যান্সার বিষয়টি কি?

উত্তর : আমাদের দেশে গলার ক্যান্সার বা কণ্ঠনালীর ক্যান্সারের প্রকোপ অনেক বেশি। গলার স্বর পরিবর্তনের পনের দিনের মধ্যে ভালো না হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। রোগীর ইতিহাস, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে প্রাথমিকপর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গলার ক্যান্সার বা কণ্ঠনালীর ক্যান্সারকে মোটেও অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ কণ্ঠনালীর ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করে চিকিৎসা করলে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায় এবং এ রোগের সব ধরণের চিকিৎসা যেমন- সার্জারী, কেমোথেরাপী ও রেডিওথেরাপী আমাদের দেশে বিদ্যমান।

বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন :

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি