রসিক মেয়রের সংগ্রামী পথচলা

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (রসিক) মেয়র হয়েছেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ঘোষিত ১৯৩ কেন্দ্রের সব বেসরকারি ফল অনুযায়ী বিপুল ভোটে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির এই সংগ্রামী নেতা।

এর আগে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর নবগঠিত রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে দলীয় সমর্থন ছাড়াই দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।

দুই সন্তানের জনক মোস্তাফিজার রহমানের জন্ম ১৯৫৯ সালে। ১৯৭৯ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন তিনি। এর পর বেশ কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন।

ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে তার হাতে খড়ি। রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত আছেন মোস্তফা।

দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কারাবাসের সময় রাজপথে সক্রিয় ছিলেন এই নেতা। নির্যাতনের শিকার হয়ে খেটেছেন জেলও। কিন্তু কখনো আপস করেননি।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা দায়িত্ব পালন করছেন দলের মহানগর কমিটির সভাপতি হিসেবেও।

১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রংপুরবাসী। সেই সময় নির্যাতনের শিকার হন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০০৯ সালে বিপুল ভোটে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গত ১৮ মার্চ রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে মহানগর জাতীয় পার্টির সমাবেশে রসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণা করেন। এরপর তিনি রংপুর নগরীর বিভিন্ন সমাবেশে সিটি নির্বাচনে মোস্তফাকে ভোট দেয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ১৯৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টায় ভোট দেওয়া শেষে শুরু হয় গণনা। পরে দিবাগত রাত ১২টায় শহরের কাছারিবাজার এলাকায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার সুভাষ চন্দ্র সরকার। কেন্দ্রভিত্তিক বেসরকারি ফল ঘোষণা শেষে তিনি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। মোস্তফার প্রাপ্ত ভোট ১,৬০,৪৮৯। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী শরফ উদ্দিন ঝন্টু পেয়েছেন ৬২,৪০০ ভোট। দুইজনের ভোটের ব্যবধান হচ্ছে ৯৮ হাজার ৮৯।

নির্বাচনে জয়ের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় মোস্তফা বলেন, ‘রংপুরে কোনও দলীয় বিভেদ থাকবে না। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করব।’

একে/