ঢাকা, মঙ্গলবার   ১১ নভেম্বর ২০২৫

রোজার বিশেষত্ব

প্রকাশিত : ১১:৪৪, ১৪ মে ২০১৯ | আপডেট: ১১:৪৮, ১৪ মে ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ইসলামের স্তম্ভসমূহের মধ্যে রোজা একটি অন্যতম স্তম্ভ। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন যে, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন: ‘প্রত্যেক নেক কাজের সওয়াব দশ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত প্রদান করে থাকেন। কিন্তু রোজা কেবল আমারই উদ্দেশ্যে রাখা হয় বলে এর প্রতিদান আমি স্বয়ং দিব।’

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, ‘যারা রিপুগুলোকে দমন করে খাঁটি পথে অটল থাকবে, তাদেরকে অগণিত সওয়াব প্রদান করা হবে।’ (সূরা যুমার ১০)

রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘ছবর ঈমানের অর্ধেক আর ছবরের অর্ধেক রোযা। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন : রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আমার কাছে মৃগনাভীর সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক প্রিয়। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন : ‘আমার বান্দা কেবল আমার সন্তুষ্টির জন্যই পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস বর্জন করেছে। আমি স্বয়ং এর বিনিময় বা সওয়াব প্রদান করব।’

রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের নিদ্রা ইবাদতের তুল্য আর প্রত্যেকটি শ্বাস-প্রশ্বাস তাসবীহ পাঠের তুল্য এবং প্রার্থনা নির্ঘাত কবুলযোগ্য।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘পবিত্র রমজান মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে বেহেশতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। শয়তানকে তার দলবলসহ বন্দী করা হয়। তখন ঘোষণা করা হয় : ‘হে কল্যাণকামী! শীঘ্র আস, এখন তোমাদের সময় অর্থাৎ কল্যাণ গ্রহণে দ্রুত অগ্রসর হও। ইহা তোমাদের জন্য সুসময়। আর হে পাপী, থাম- এখানে তোমার স্থান নয়। অর্থাৎ তোমাদের পাপের পথ রুদ্ধ হয়েছে।’ আর রোজার গৌরব ও মর্যাদা এই যে, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রোজাকে নিজের দিকে ইশারা করে বলেছেন : রোজা আমারই উদ্দেশ্যে রাখা হয় এবং আমি উহার পুরস্কার প্রদান করবো।’

যদিও প্রত্যেক ইবাদতই আল্লাহতায়ালার উদ্দেশ্যেই করা হয়। তথাপিও রোজা বিশেষ করে তাঁর জন্য নির্ধারিত। যেমন- সারা বিশ্বজগত তাঁর রাজ্য হলেও পবিত্র কাবা শরীফকে তাঁর ঘর বলা হয়। রোজা সম্পর্কেও অনুরূপ বুঝানো হয়েছে।

রোজার প্রকৃত অর্থ- খায়েশ অর্থাৎ প্রবৃত্তিসমূহ বর্জন করা। ইহা অন্তরের কাজ যা মানুষের দৃষ্টির অগোচর। কাজেই এতে রিয়ার সম্ভাবনা নেই। শয়তান আল্লাহতায়ালার শত্রু আর এই প্রবৃত্তি শয়তানের সৈন্য। রোজা শয়তানের সৈন্যকে পরাজিত করে। যেহেতু রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য প্রবৃত্তিসমূহ বর্জন করা। এই প্রসঙ্গে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষের শরীরের শিরায় শিরায় রক্ত যেরূপ সঞ্চারণ করে, তদ্রূপ শয়তান মানুষের অন্তরের মধ্যে অতি সংগোপনে চলাচল করেছে, ক্ষুধার্ত থেকে শয়তানের চলাচলের পথ দুর্গম করে দাও।’

রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ।’ উম্মুল মোমেনিন হযরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘তোমরা জান্নাতের কপাটে খটখটি দাও।’ আরজ করা হল : কেমন করে, তিনি বললেন, ‘ক্ষুধার দ্বারা’। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রোজা অন্য সব ইবাদতের প্রবেশদ্বার।’

রোজার এসব গৌরব ও বিশেষত্ব এ কারণে যে, প্রবৃত্তি সব ইবাদতের প্রতিবন্ধক। উদরপূর্তি ভোজনে প্রবৃত্তি প্রবল হয় আর অনাহার ও উপবাস প্রবৃত্তিকে দমন করে।

তথ্যসূত্র : মাওলানা হারুনুর রশিদের রমজানে করণীয় ও বর্জনীয় গ্রন্থ

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি