ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪

আদিলুরের হাত থেকে ‘অধিকার’ ফিরে পেতে চান এর প্রতিষ্ঠাতা (ভিডিও)

দিপু সিকদার

প্রকাশিত : ১৩:৫০, ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | আপডেট: ১৩:৫২, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

যার হাত ধরে জায়গা পেয়েছিলেন, সুযোগ বুঝে অস্ত্রের মুখে তার কাছ থেকেই কেড়ে নিয়েছিল মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। বলছিলাম, হেফাজতের পক্ষ নিয়ে গুজব ছড়ানোর দায়ে দণ্ডিত আদিলুর রহমান খান শুভ্রের কথা। এতদিন ধরে ভয়ে নিশ্চুপ থাকলেও এখন আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সংগঠনটি ফিরে পেতে চান অধিকারের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ হাসান সিদ্দিকী। বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা একুশে টেলিভিশন বন্ধের পেছনেও ভূমিকা রেখেছিলেন আদিলুর। 

২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতের যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, সে দৃশ্য এখনও ভোলেনি জাতি। 

কিন্তু বাস্তবতা পাশ কাটিয়ে হেফাজতের পক্ষ নিয়ে গুজব এবং মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছিলেন আদিলুর রহমান খান। প্ল্যাটফর্ম বানিয়েছিলেন তারই দখল করে নেওয়া মানবাধিকার সংগঠন অধিকারকে। আর সেই মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে সম্প্রতি দণ্ডিতও হয়েছেন আদিলুর। 

কিন্তু কিভাবে দখল হয়েছিল অধিকার? 

একরাশ স্বপ্ন নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাসুদ হাসান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, “দেড় বছর লেগেছে এর রেজিস্ট্রেশন করাতে। কারণ এর প্রসেসের মধ্যে অনেকগুলো ধাপ অতিক্রিম করতে হয়েছে।”

আরও পরিচিত অনেককে নিয়ে কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করেন। জায়গা করে দেন আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে। 

ইউএসএআইডির আমন্ত্রণে একটি ইভেন্টে ওই সময় কিছুদিনের জন্য বিদেশ যান মাসুদ। এই সুযোগে আচমকা অধিকার দখল করে নেওয়া খবর পান তিনি। 

অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, “ফোন করে আমাকে জানানো হল যে অধিকার তো দখল হয়ে গেছে। তখন সে আমাকে বিস্তারিত বলেছে এতো সমস্ত জিনিসপত্র দেখে যে এর ভয়ে সমস্ত স্টাফরা অফিস ছেড়ে পালিয়েছে। যাদের নেতৃত্বে এই কাজটি হয়েছে এর মধ্যে অবশ্য আদিলুর রহমান খান ছিল একজন, আরেকজন হাসান আরিফ।”

দেশে ফিরে নিজ অফিসে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়লে প্রাণ ভয়ে আর সামনে এগুননি বলে জানান তিনি। 

মাসুদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, “আমেরিকা থেকে ফিরে এসে অফিসে ঢুকতে গেলাম, গার্ড রাখা ছিল আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বারান্দায় দু’তিনটি টেবিলে অজানা কিছু লোককে বসে থাকতে দেখলাম, এই দেখে আমি আর না ঢুকে ফিরে এলাম।”

প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর সন্তান আসিফ মুনীরও ছিলেন। আদিল তাকেও ক্ষমতার দাপটে  সরিয়ে দেন।

অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আসিফ মুনীর বলেন, “আমরা বেশ কিছু মানবাধিকার কর্মি এক আদর্শিক অবস্থান থেকে সেটার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অধিকার সংগঠনটিকে বিতর্কিত করে ফেলা হয়েছে।”

শুধু অধিকারই দখল নয়, একুশে টেলিভিশন বন্ধের পেছনেও তৎপর ছিলেন আদিলুর। সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খানও প্রতিষ্ঠানটি বন্ধে আদিলুর চক্রের কুটচালকে দায়ী করেন।

সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, “স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলোর সঙ্গে তাদের অসম্ভব অদ্ভুত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কটা প্রথম কাজ করেছে একুশে টেলিভিশন বন্ধে। তারেক রহমান ও তার বন্ধু মামুন তারা সবকিছুকে তছনচ করে দিল। কাজেই আদিলুর রহমান শুভ এরা আইন ব্যবসাটাকে নষ্ট করেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নষ্ট করেছে।”

মানবাধিকারের নামে মিথ্যা তথ্য আর বাকস্বাধীনতার নামে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের দায়ে অভিযুক্ত আদিলুর রহমানের হাত থেকে নিজের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন অধিকার ফিরে পেতে চান মাসুদ হাসান। প্রয়োজনে এরজন্য আইনি প্রক্রিয়াতেই যাবেন তিনি। 

মাসুদ হাসান বলেন, “ফিরে পেতে প্রয়োজনে আইনী প্রক্রিয়াতে যাব।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি