আরও ছয় মাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে নিউমুরিং টার্মিনাল : অর্থ উপদেষ্টা
প্রকাশিত : ২০:৩২, ১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ২০:৫২, ১ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আগামী ছয় মাসের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এসময় নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রাম বন্দরই সিদ্ধান্ত নেবে, কারা এটি পরিচালনা করবে। তবে দরপত্র আহ্বান হবে না। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এবং ছয় মাসের জন্য এটি পারিচালিত হবে। আগামীকাল বুধবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালটি ১৭ বছর ধরে পরিচালনা করে আসছে। আগামী ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনীকে এই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বন্দরের সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আগামী ছয় মাস টার্মিনালটি পরিচালনা করবে।
জানা গেছে, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে পাঁচটি জেটি আছে। এসব জেটিতে চারটি সমুদ্রগ্রামী জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী একটি জাহাজ ভিড়তে পারে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল এটি। জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তরসহ নানা কাজ হয় এই টার্মিনালে।
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠানর ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসে এ বিষয়ে চুক্তি হতে পারে বলে জানা গেছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এই টার্মিনালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৫ জুন নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের ৪ ও ৫ নম্বর জেটি পরিচালনার জন্য বন্দরের সঙ্গে চুক্তি করে সাইফ পাওয়ার টেক এবং এর দুই অংশীদার কোম্পানি। এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর এনসিটির ২ ও ৩ নম্বর জেটি পরিচালনায় চুক্তি করে একই প্রতিষ্ঠান।
দরপত্রের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য কোম্পানিটি এনসিটি পরিচালনার ওই দায়িত্ব পেয়েছিল। ২০১৫ সালের ১৭ অক্টোবর এনসিটিতে কন্টেইনার ওঠানামার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। পরে এনসিটি পরিচালনায় আর দরপত্র ডাকা হয়নি।
সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) প্রতিবার ছয় মাসের জন্য এনসিটির টার্মিনালগুলো পরিচালনা করে আসছিল সাইফ পাওয়ার। টানা ১১ বার সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত টার্মিনালটি পরিচালনা করে কোম্পানিটি। এরপর ১২ বারের মতো আরও ছয় মাসের জন্য তাদের এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
শুরু থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এনসিটি পরিচালনায় কী-গ্যান্ট্রি ক্রেন ও রাবার টায়ারড গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কিনতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ খরচ করেছে প্রায় ২,০০০ কোটি টাকা। এনসিটিতে বছরে ১০ লাখ একক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা আছে। ২০২৪ সালে দেশি বেসরকারি অপারেটর এনসিটিতে ১২ লাখ ৮১ হাজার একক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে।
এসএস//
আরও পড়ুন