ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪

আমার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা মনে পড়ে :সুলতানা কামাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আমরা আজকে উদ্বিগ্ন এই কারণে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নাম করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা, দায়িত্ব নিয়ে সেটা পারছেন না। সেজন্য আমাদের আরও বড় করে উদ্বেগটা প্রকাশ করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে `রাষ্ট্র-নাগরিক সম্পর্ক : দায় দায়িত্ব` শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। `উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ` এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।

সুলতানা কামাল আরও বলেন, তাদেরকে আমাদের বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে তারা অঙ্গীকার করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আরেকটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি যে শহিদুল আলমকে ধরে নিল, তার স্ত্রী এতেই সন্তুষ্ট যে সে কারাগারে আছে। এই বাচ্চাগুলোকে ধরে নিলো, অনেকদিন ধরে তাদের কোনও খবর নেই। অমানবিক, নিষ্ঠুর যন্ত্রণার মধ্যে অভিভাবকরা যখন দেখলেন বাচ্চাগুলো ডিবি অফিসে আছে, সেই অভিভাবকরা এতেই সন্তুষ্ট হয়ে বলছেন তারা ডিবি অফিসে আছেন, তাদের মেরে ফেলা হয়নি। একটা জাতি যখন শুধু প্রাণে বেঁচে আছে, এটুকুতেই সন্তোষ। প্রকাশ করে সেই জাতির অবস্থান কোথায় গেছে? সেই জাতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এসব দেখলে আমার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা মনে পড়ে।

শহিদুল আলমের সহধর্মিণী ও শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ বলেন, এদেশের একজন লোককে হাত বেঁধে, চোখ বেঁধে নিয়ে যেয়ে আমাদের সাহসী বাহিনীর জোয়ানরা খুশি হন। আমি শুনেছি যে চারটি বাহিনীর জোয়ানরা এই অভিযানে ছিলেন। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তো তারা এই ট্রেনিংগুলো পান। যখন অন্য প্রশ্ন ওঠে তখন এটার সঙ্গে এই ট্রেনিংয়ের বিষয়টিও তোলা উচিৎ। আরেকটি বিষয় জানতে পেরেছি আমাদের দেশে নাকি ইসরাইল থেকে থার্ড পার্টির মাধ্যমে সফটওয়্যার আমদানি করা হচ্ছে যার মাধ্যমে একটি সর্বগ্রাসী সার্ভেইলেন্স ব্যবস্থা চালু করা হবে।

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, আমাদের দেশে সাম্প্রতিক আইন এবং রাষ্ট্রের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে রাষ্ট্র এবং নাগরিক বিরোধী একটা জিনিস তৈরি হয়ে গেছে। সরকারের মনমানসিকতা এরকম যে নাগরিককে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং তার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করতে হবে। সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি বিষয় নিয়ে আসা হয়েছে তা হলো অফিশিয়াল সিক্রেসি এক্ট। এটা মূলত অনেক আগে থেকেই অকার্যকর ছিল। এর মধ্য দিয়ে সরকার আমাদের একটা বার্তা দিতে চায়। সুস্থ মানুষের পক্ষে এবং রাজনৈতিক দলের পক্ষে এই আইন করা সম্ভব না।

গবেষক অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন যারা তারা চেতনাটিকে কতটুকু বুঝেছেন সেটা একটা প্রশ্নের বিষয়। যেখানে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই সেখানে কিসের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। রাষ্ট্রকে মানবিক হতে হবে, রাষ্ট্র দিন দিন ক্রমেই দানবে পরিণত হচ্ছে।
মানবাধিকার কর্মী খুশি কবিরের সঞ্চালনায় এবং অজয় রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ছাত্রনেতা বাকি বিল্লাহ, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

আআ// এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি