ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

এতিমদের একটি টাকাও অপচয় হয়নি : খালেদা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৪, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ওই ট্রাস্টে এতিমদের জন্য আসা একটি টাকাও অপচয় করা হয়নি। টাকা এখনও  ব্যাংকে গচ্ছিত আছে। বিচারাধীন এই মামলা নিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করেছেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়েই গতকাল বুধবার দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন নেন তিনি।

জামিনের পর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি শুরু করেন।  আত্মপক্ষ সমর্থনে বেলা সোয়া ১২টা থেকে এক ঘণ্টা লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিএনপি নেত্রী।

পরবর্তী সময়ে বাকি বক্তব্য শেষ করার অনুমতি চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করে ২৬ অক্টোবর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন। একই দিনে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলারও শুনানি হওয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এ মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।

আত্মপক্ষ সমর্থনের শুরুতে খালেদা বলেন, জিয়াউর রহমানের নামে এতিমখানার জন্য বিদেশ থেকে যে অনুদান আসে, তা এতিমখানার কল্যাণেই ব্যয় করা হয়েছে। সেই ব্যয়র পর বাকি অংশ ব্যাংকে রাখা হয়েছে। ব্যাংকের সুদ যুক্ত হয়ে সেই গচ্ছিত টাকা এখন অনেক বেড়েছে। একটি টাকাও অপচয় করা হয়নি। নিজেকে নির্দোষ দাবি করার পাশাপাশি ছেলে তারেক রহমানকেও নির্দোষ দাবি করেন তিনি।

পরিবার নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাসহ দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানীর অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, একটি আদালত তারেক রহমানকে মুদ্রা পাচারের বানোয়াট অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছিলেন। সেই বিচারককে শাসক মহল হয়রানির উদ্দেশ্যে এমন তৎপরতা শুরু করে যে তিনি আত্মরক্ষার জন্য বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। সেই বিচারক নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

খালেদা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে শাসক মহলের ‘বিরোধ’ সম্প্রতি প্রায় প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। মনে পড়ছে ফখরুদ্দীন ও মঈনুদ্দিনের অসাংবিধানিক শাসনামলের কথা। তখন দেশের নেতানেত্রীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে কোর্ট কাচারির বাইরে বিশেষ ট্রাইব্যনুালের এজলাস বসেছিল।

জিয়া এতিমখানা ও দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাও কেন আদালত পাড়ার বাইরে বিশেষ এজলাস বসানো হয়েছে- সেই প্রশ্ন তোলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, এটা করা হয়েছে ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যই।

সংবাদপত্রে আসা খবর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এতিমদের টাকা মেরেছেন, আবার আদালতে একদিন আসেন তো দশদিন যান না’তাঁর এই বক্তব্য বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের শামিল।

খালেদার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, আবদুর রেজ্জাক খান, এ জে মোহাম্মদ আলী ও সানাউল্লাহ মিয়া। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

এতিমখানা দুর্নীতি মামলার আসামিদের মধ্যে খালেদা জিয়া, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার জামিন পেয়েছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন লন্ডনে। আর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

আর/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি