ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

গরম পানি কেন খাবেন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫০, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

শীতকাল এলেই আমরা গরম পানি পান শুরু করি। আবার শীত শেষে গরম এলেই অবধারিতভাবে শুরু হয়ে যায় ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানিতে গলা ভেজানো। কিন্তু গরম কিংবা শীত যেকোনো সময়ের জন্য কোনটি ঠিক, গরম পানি পান, নাকি ঠাণ্ডা? চলুন জেনে নিই। 

শীতকাল কিংবা গরমকাল বিষয় নয়। আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে হজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে খেতে পারেন কুসুম গরম পানি। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। 

যারা ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে ভোগেন তাদের জন্য গরম পানি পানই উত্তম। 

এছাড়া পুষ্টিবিদদের মতে, গরম পানি খেলে পেট পরিষ্কার থাকে। আর পেট পরিষ্কার থাকলে শরীরে সহজে রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। 
গরম পানি  শরীর দ্রুত ডিটক্স করে। ব্রণ-ফুসকুড়ির সমস্যা থেকেও সহজেই দূরে থাকা যায়।

এছাড়াও গরম পানি খেলে মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ, হাঁটু, গোড়ালিতে ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা, হুটহাট হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি-হ্রাস, মৃগী রোগ, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, কাশি, পেটের সমস্যাসহ আরও অনেক জটিল রোগের উপশম করে। 

ঠাণ্ডা পানি কেনো খাবেন না? 

মাইগ্রেন জাগিয়ে তুলতে ঠাণ্ডা পানি একটি বড় অনুঘটক। তাই যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তারা ঠাণ্ডা পানি এড়িয়ে চলুন।  

ঠান্ডা পানি পানের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যনালির ওপর শীতল প্রভাব পড়ে। এতে দেহের খাদ্য সরবরাহকে সীমাবদ্ধ ও সংকুচিত করে এতে হজমের বিপত্তি হতে পারে।

ঠান্ডা পানি পানের কারণে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় হার্টের। গরম থেকে এসেই ঠান্ডা পানি পান করলে শরীরের শিরা–উপশিরা সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক রক্তসঞ্চালন ব্যাহত হয়ে হার্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। যা দীর্ঘ মেয়াদে জটিল হৃদ্রোগ দেখা দিতে পারে।

জ্বর হতে পারে: আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কিন্তু ঠান্ডা পানি পান করলে আমাদের রক্ত হঠাৎ করেই শীতল হয়ে যায়। ফলে শরীরে ভেতরের অংশে হঠাৎ করেই অস্বস্তি দেখা দেয়। গলা সংকুচিত হয়ে শরীরে তাপ বৃদ্ধি করে। ফলে জ্বর আসতে পারে। 
ঠান্ডা পানিতে তৃষ্ণা মেটে খুব দ্রুত। ফলে দ্রুতই পানির চাহিদা পূরণ হয়ে গেছে বলে অনুভূত হয়। অথচ প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা মেটে না। এতে পানিশূণ্যতা হতে পারে। 

ঠাণ্ডা পানি থেকে ঠান্ডা লেগে টনসিল ফুলতে পারে। 

ঠান্ডা পানি দাঁতের অ্যানামেলের মারাত্মক ক্ষতি করে। গরম থেকে ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসামাত্রই দাঁতের বহিরাবরণ সংকুচিত হয়। ফলে অ্যানামেলে ফাটল ধরে। এ ছাড়া মাড়িক্ষয়ের অন্যতম একটি কারণও ঠান্ডা পানি।

তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, কোনোকিছুই বেশি বেশি ভালো না। আপনি যদি অতিরিক্ত গরম পানি পান শুরু করেন হাতলে সেটিও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। 

তাই মনে রাখতে হবে শরীরের জন্য কুসুম গরম পানি সবচেয়ে উপযোগী। তবে কুসুম গরম পানি বলতে কতটুকু গরম পানি শরীরের জন্য উপযুক্ত? 

বর্তমানে কিচেন থার্মোমিটার নামে বাজারে এক ধরনের থার্মোমিটার পাওয়া যায়, সেটি ব্যবহার করে সঠিক তাপমাত্রার কুসুম গরম পানি বা ঈষদুষ্ণ গরম পানি তৈরি করে ব্যবহার করতে পারি।

এখন প্রশ্ন হল কুসুম গরম পানির তাপমাত্রা কত? ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর চেয়ে নিচে পানির তাপমাত্রা হলে আমরা ওই পানিকে ঠান্ডা পানি বলি আর ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রার পানি কে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি বলি।

 ৯৯ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট অথবা ৩৭ থেকে ১০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানিকে আমরা কুসুম গরম পানি বলি।

আসুন,  শীতকালে কুসুম গরম পানি আর গরমকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করে আরামদায়ক জীবন যাপন করি। 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি