ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

গর্ব অহঙ্কার সম্পর্কে কুরআন ও হাদীস

প্রকাশিত : ১৪:৪৩, ১৬ মে ২০১৯

সবচেয়ে মারাত্মক অসৎ গুণ হচ্ছে গর্ব, অহঙ্কার, আত্মাভিমান ও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের প্রকাশ। এটি একটি শয়তানী কাজ, ইহা একমাত্র আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কিত। বান্দার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব ও অহঙ্কার একটি নির্জলা মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। অহঙ্কারী ব্যক্তি আত্মপূজারী হয়ে থাকে, সে নিজেকে শ্রেষ্ঠ এবং অন্যদেরকে ছোট মনে করে যা সমাজের ফিতনার সৃষ্টি করে।

গর্ব অহঙ্কার সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআন শরীফে বলেন : ‘আর জমিনের উপর গর্বভরে চলো না, আল্লাহ কোন আত্ম-অহঙ্কারী দাম্ভিক মানুষকে ভালোবাসেন না।’ (লোকমান ১৮)

‘নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিক আত্ম-গর্বিত ব্যক্তিকে কখনো পছন্দ করেননি।’ (নিসা ৩৬)

‘তোমাদের সত্যিকার উপাস্য হচ্ছে এক আল্লাহ, কিন্তু যারা পরকালকে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর সত্য-বিমুখ এবং তারা অহঙ্কারী। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের গোপন ও প্রকাশ্য অবস্থা সবই অবগত আছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই লোকদের কখনও ভালবাসেন না যারা আত্ম-অহঙ্কারে নিমজ্জিত।’ (নাহল ২২-২৩)

‘এখন যাও জাহান্নামের দ্বারসমূহে প্রবেশ কর, সেখানেই তোমাদের চিরদিন অবস্থান করতে হবে, বস্তুত ইহা হচ্ছে অহঙ্কারীদের নিকৃষ্ট বাসস্থান।’ (নাহল ২৯)

‘যা তোমাদের হস্তুচ্যুত হয় এতে যেন তোমরা দুঃখিত না হও, আর যা তোমাদের দান করেছেন এতে যেন তোমরা গর্বিত না হও। আল্লাহ কোন অহঙ্কারী গর্বিত লোককে পছন্দ করেন না।’ (হাদীদ ২৩)

‘আমি অপরাধী লোকদের সঙ্গে এরূপই ব্যবহার করে থাকি, তাদেরকে যখন বলা হত আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তখন তারা অহঙ্কারে ফেটে পড়ত।’ (সাফফাত ৩৪-৩৫)

‘আমি কত গ্রামগঞ্জ ও বস্তিই না ধ্বংস করে দিয়েছি যার অধিবাসীরা স্বীয় জীবিকা ও সহায় নিয়ে গর্ব অহঙ্কার করতো। এগুলোই তাদের ঘরবাড়ি, তাদের পরে সেখানে কমসংখ্যক লোক বসবাস করেছে। অবশেষে আমিই চূড়ান্ত মালিক রয়েছি।’ (কাসাস ৫৮)

‘সেই সব লোকের জন্য ধ্বংস ও ক্ষতি অবধারিত যারা অপরের দোষ-ত্র‍ুটি অনুসন্ধান করে আর পরনিন্দা চর্চায় পঞ্চমুখ হয়।’ (হুমাযা ১)

গর্ব অহঙ্কার সম্পর্কে হাদীস : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহঙ্কার থাকবে, সে বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। এক ব্যক্তি বললো হুজুর কেউ যদি তার লেবাস, পোশাক ও জুতা উত্তম হওয়া পছন্দ করে? (তাহলে সেটাও কি অহঙ্কার) রাসূল (সা.) জবাব দিলেন অবশ্যই আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। প্রকৃতপক্ষে অহঙ্কার হল আল্লাহর গোলামী হতে বেপরোয়া হওয়া এবং মানুষকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। (মুসলিম)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা যা ইচ্ছা খাও এবং যা ইচ্ছা তা পরিধান করো এ শর্তে যে অহঙ্কার ও অপব্যয় করবে না। (বুখারী)

হযরত হারেছা ইবনে ওহাব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অহঙ্কারী ও অহঙ্কারের মিথ্যা ভানকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (আবু দাউদ)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি- মুমিনের পরিধেয় বস্ত্র পায়ের নলার মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রলম্বিত থাকে। যদি তার নীচে এবং গিরার উপরে থাকে তাহলেও কোন দোষ নেই। আর যদি গিরার নীচে চলে যায় তাহলে তা হবে জাহান্নামীর কাজ একথা রাসূল (সা.) তিনবার বললেন যাতে সবার কাছে এর গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে যায়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন আল্লাহ সে ব্যক্তির প্রতি কিয়ামতের দিন তাকাবেন না যে অহঙ্কারপূর্বক ভূমি স্পর্শকারী পোশাক পরিধান করে।’ (আবু দাউদ)

(কুরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ)

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি