ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চিম্বুক ভ্রমণ গাইড (ভিডিও)

সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ

প্রকাশিত : ১৮:৪৬, ১৪ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১৯:০২, ১৪ আগস্ট ২০২২

পাহাড় কাকে বলে সেটা দেখতে হলে যেতে হবে তিন পার্বত্য জেলার পর্যটনের প্রাণ বান্দরবান। বান্দরবান শহর থেকে কোনো পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়া মানেই সবার আগে আসতো চিম্বুকের নাম। এক সময় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল উঁচু পাহাড় মানেই চিম্বুক। চিম্বুককে বলা হতো বাংলার দার্জিলিং।

কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষতা, ট্রেকারদের অদম্য মানসিকতা, পর্যটকদের প্রবল আকর্ষণের কাছে এক সময় একেবারেই জৌলুস হারায় এ পাহাড়টি। সব আকর্ষণ টেনে নিয়েছিলো নীলগিরি, নীলাচল, কেওক্রাডং কিংবা সাফা হাফং। চিম্বুকের সেই হারানো যৌবন ফিরেছে, এখন এই পাহাড়ে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখা ছাড়াও ১৮০ ডিগ্রিতে পুরো পাহাড়গুলোকে দেখা যায় খুব ভালোভাবে। 

বাংলার দার্জিলিং নামে খ্যাত বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় (Chimbuk Pahar / Hill) এর পরিচিত অনেক পুরনো। প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কারণে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আজ বিদেশেও পরিচিত চিম্বুক পাহাড়। বাংলাদেশের পাহাড়ী সৌন্দর্যের রানী হিসেবে পরিচিত চিম্বুক পাহাড় দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাহাড়। এ পাহাড় থেকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের দৃশ্য যেকোনো পর্যটককে মুগ্ধ করবে। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী পর্যটন স্পট যা জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং সমুদ্র পৃষ্ট হতে এর প্রায় ২৫০০ ফুট উঁচু।

চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ী দৃশ্য খুবই মনোরম। চিম্বুকে যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদী আপনার ভ্রমণকে আরও বেশি আকর্ষণীয় ও নান্দনিক করে তুলেবে। পাহাড়ের মাঝে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়ার সময় মনে হবে গাড়িতে করে বুঝি চাঁদের বুকে পাড়ি জমাচ্ছেন। ২৫০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরূপ বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে। পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন নিচে ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভেলা। পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার আর চট্টগ্রাম এর বিভিন্ন উপজেলাগুলোকে দেখা যায় এখান থেকে। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয় মেঘের স্বর্গরাজ্য ভাসছে চিম্বুক।

কিভাবে যাবেন
বান্দরবানে পৌঁছানোর বেশকিছু উপায় আছে। ঢাকা থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বাস চলাচল করে। এসব বাসে ভাড়া প্রায় ৭০০/- টাকা। কলাবাগান, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে এসব বাস বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে বান্দরবানে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টায় পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়া ব্যাক্তিগত অথবা ভাড়া গাড়িতেও আপনি বান্দরবানে যেতে পারেন। বান্দরবান থেকে চিম্বুকে জীপ বা চাঁদের গাড়িতে করে যেতে পারেন। এখানে চাঁন্দের গাড়ি/ঝীপ/মাইক্রোবাস/পাবলিক বাস যোগে যাওয়া যায়। রাস্তা বেশ দুর্গম হওয়ায় বাসে যাতায়াত করা ঝুঁকিপূর্ণ। চিম্বুক-থানছি পথে বিকেল ৪ টার পরে কোনো গাড়ি চলাচল করে না। তাই পর্যটকদের ৪ টার মধ্যে ফিরে আসা উচিত।

কি দেখবেন
পাকা সড়ক বেয়ে একেবারে চূড়ায় যে কোনো বাহন উঠে। উঠেই দক্ষিণে সিঁড়ি নেমে গেছে বিশাল এক চত্বরে। চত্বরটির নাম দেওয়া হয়েছে নব চত্বর। শরতে এই ভিউ পয়েন্ট থেকে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বিশাল মেঘের সমুদ্র। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপেও হিম বাতাস গা জুড়িয়ে দেয় এখানে। পাহাড়-আকাশ কত বিশাল তা এই চত্বরে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায়। সিঁড়ির পূর্বে রয়েছে দুই স্তরের দু’টি ছোট ভিউ পয়েন্ট। কেউ যদি নিচে নামতে না চায় তাহলে সেখানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবে সৌন্দর্য। সিঁড়ি যেখানে শেষ সেখানে পশ্চিম পাশে রয়েছে তিনটি কংক্রিটের সুদৃশ্য চেয়ার-টেবিল। গাছের ছায়া পড়ে তাতে। বিকেলের শেষ রোদে বসে আড্ডা দেওয়া কিংবা একান্ত সময় উপভোগ করার জন্য পূর্ব পাশেও রয়েছে বসার ব্যবস্থা।
 
মূল সড়ক বেয়ে উপরে উঠলে সোজা সড়ক ও জনপদের রেস্টহাউস। উত্তর দিক দিয়ে সড়ক চলে গেছে থানচি। পূর্বকোণ বরাবর নীলগিরি। উত্তর দিকেও কয়েক স্তরে নির্মাণ করা হয়েছে মনোরম ভিউ পয়েন্ট। একসঙ্গে হাজার লোক এলেও গোটা চিম্বুক জায়গা দিতে পারবে। চিম্বুকের আরও একটি বিশেষত্ব হলো ঠিক নিচে রাস্তার পাশে বারো মাস মেলে পাহাড়ের ফল। পেঁপে, কলা, আখ, ডাব, শরিফা, কমলা, বরই পাওয়া যায় সিজন অনুযায়ী। তবে কলা-পেঁপে মেলে সারাবছর। সব ফলই টাটকা। সেব ধরনের কেমিক্যাল মুক্ত। পর্যটকরা এসব ফল খেতে পছন্দ করেন সবসময়। চিম্বুকের নিচে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস মারমাদের। এই পাহাড় ঘিরে তাদের অনেকের জীবন-জীবিকা চলে। তারাই মূলত এখানে বিভিন্ন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। কিছু বার্মিজ ও আদিবাসী পণ্যও মেলে এখানে।

বান্দরবান থেকে চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ী দৃশ্য খুবই মনোরম। চারপাশের সবুজ পাহাড় আর বনরাজি দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে। চিম্বুকে যাওয়ার পথের পাশে রয়েছে অসংখ্য উপজাতির আবাসস্থল। ঘরগুলো মাচার মতো উঁচু করে তৈরি। চিম্বুকে যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদী আপনার ভ্রমণকে আরও বেশি আকর্ষণীয় ও নান্দনিক করে তুলেবে। পাহাড়ের মাঝে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়ার সময় মনে হবে গাড়িতে করে বুঝি চাঁদের বুকে পাড়ি জমাচ্ছেন।

পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতেই যে কেউ চমকে উঠবেন পরিপাটি ও পরিকল্পিতভাবে সাজানো এ পাহাড়চূড়া দেখলে। পাকা সড়ক বেয়ে একেবারে চূড়ায় যে কোনো বাহন ওঠে। উঠেই দক্ষিণে সিঁড়ি নেমে গেছে বিশাল এক চত্বরে। চত্বরটির নাম দেওয়া হয়েছে নব চত্বর। শরতে এই ভিউ পয়েন্ট থেকে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বিশাল মেঘের সমুদ্র। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপেও হিম বাতাস গা জুড়িয়ে দেয় এখানে। পাহাড়-আকাশ কত বিশাল তা এই চত্বরে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায়। পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন নিচে ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভেলা। পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার আর চট্টগ্রাম এর বিভিন্ন উপজেলাগুলোকে দেখা যায় এখান থেকে। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয় মেঘের স্বর্গরাজ্য ভাসছে চিম্বুক।

সিঁড়ির পূর্বে রয়েছে দুই স্তরের দু’টি ছোট ভিউ পয়েন্ট। কেউ যদি নিচে নামতে না চায় তাহলে সেখানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবে সৌন্দর্য। সিঁড়ি যেখানে শেষ সেখানে পশ্চিম পাশে রয়েছে তিনটি কংক্রিটের সুদৃশ্য চেয়ার-টেবিল। গাছের ছায়া পড়ে তাতে। বিকেলের শেষ রোদে বসে আড্ডা দেওয়া কিংবা একান্ত সময় উপভোগ করার জন্য পূর্ব পাশেও রয়েছে বসার ব্যবস্থা।

মূল সড়ক বেয়ে উপরে উঠলে সোজা সড়ক ও জনপদের রেস্টহাউস। উত্তর দিক দিয়ে সড়ক চলে গেছে থানচি। পূর্বকোণ বরাবর নীলগিরি। উত্তর দিকেও কয়েক স্তরে নির্মাণ করা হয়েছে মনোরম ভিউ পয়েন্ট। একসঙ্গে হাজার লোক এলেও গোটা চিম্বুক জায়গা দিতে পারবে।

চিম্বুকের আরও একটি বিশেষত্ব হলো ঠিক নিচে রাস্তার পাশে বারো মাস মেলে পাহাড়ের ফল। পেঁপে, কলা, আখ, ডাব, শরিফা, কমলা, বরই পাওয়া যায় সিজন অনুযায়ী। তবে কলা-পেঁপে মেলে সারাবছর। সব ফলই টাটকা। সেসব ধরনের ফল কেমিক্যাল মুক্ত। পর্যটকরা এসব ফল খেতে পছন্দ করেন সবসময়।

চিম্বুকের নিচে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস মারমাদের। এই পাহাড় ঘিরে তাদের অনেকের জীবন-জীবিকা চলে। তারাই মূলত এখানে বিভিন্ন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। কিছু বার্মিজ ও আদিবাসী পণ্যও মেলে এখানে।

কি খাবেন
বান্দরবান শহরে খাবার হোটেলের মান তেমন ভালো নয়। তবে যে হোটেলে আপনি থাকবেন সেগুলোতে রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা আছে কিনা দেখে নিন। পর্যটন এলাকায় খাবারের দাম একটু বেশি থাকাই স্বাভাবিক, বান্দরবান শহরের ট্রাফিক মোড়ের কাছেই কিছু কম দামে খাওয়ার হোটেল আছে। বান্দরবানে রান্নায় মসলার ব্যবহার এবং হলুদের আধিক্য রয়েছে।

কোথায় থাকবেন
কেউ মনোলোভা পরিবেশে এ সড়ক ও জনপদের রেস্টহাউসে থাকতে চাইলে তারও ব্যবস্থা রয়েছে। এনডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে যে কেউ জেলা প্রশাসনের রেস্টহাউসে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। রেস্ট হাউসে রাত্রিযাপন যদি চাঁদনি রাতে হয় তবে তো কথাই নেই। বিশাল ভিউ পয়েন্ট থেকে মুক্ত বাতাসে জোছনা দেখা সত্যি ভাগ্যের। এ রেষ্টে হাউস ছাড়াও বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটেল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন। 

ভ্রমন টিপস
১,বান্দরবান শহর থেকে শুকনো খাবার ও পার্যপ্ত পানি নিতে হবে।
২,পাহাড়ি এলাকা বৃষ্টির সময় পিচ্ছিল হয়ে যায়, তাই শীতে চিম্বুক ভ্রমন করুন।
৩,চিম্বুকে গাড়ি বিকেল ৪টার পর বন্ধ হয়ে যায়, একদিনে ঘুরে আসতে হলে সঠিক সময়ে ফিরে আসুন।
৪,প্লাস্টিক, আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলবেন না।
৫,চিম্বুকের স্মৃতি হিসেবে আদিবাসীদের তৈরি তৈজসপত্র কিনে নিয়ে আসতে পারেন।
৬,আদিবাসীদের অসম্মান হয় এমন আরচণ থেকে বিরত থাকবেন।

সতর্কতা
১, মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া কষ্ট কর, কোন কোম্পানীর নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় আগে থেকে জেনে নিবেন।
২, গাড়ি ভাড়া করার সময় স্টেশনে গিয়ে জেনে বুঝে দরদাম করে ভাড়া ঠিক করুন।
৩, চিম্বুক পাহাড় দুর্গম স্থানে হওয়ায়, সাথে পর্যাপ্ত খাবার ব্যবস্থা রাখা শ্রেয়।
৪, থাকাব ব্যবস্থা আগে থেকে করে না থাকলে, বিকেল -৪টার গাড়িতে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা দিন।
৫, রাস্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে রওনা দিবেন, পাহাড়ি রাস্তায় পথ হারিয়ে ফেললে বিপদে পড়বেন।
৬, গাড়ি চালানোর সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করুন। বৃষ্টির সময় গাড়ি না চালানোই ভালো।

এসইএ/এসি


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি