ঢাকা, বুধবার   ১৪ মে ২০২৫

৫ বছরের কারাদণ্ড

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আদ্যোপান্ত [ভিডিও]

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৬, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২১:২৯, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

দীর্ঘ দশ বছর পর বহুল কাঙ্ক্ষিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ২৩৬ কার্যদিবসের শুনানিতে ৩২ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহন, ১৬ কার্যদিবস যুক্তি খন্ডন, তিনবার আদালত পরিবর্তন ও ৩৪২ ধারায় আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে আজ শেষ হয় বিচারকাজ। এতে খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানা করেছে আদালত।

জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দশবছর আগে সামরিক সরকারের আমলে এই মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলা করে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন মামলার আসামিরা।

দীর্ঘ এক বছর পর ২০০৯ সালের ৫ই আগষ্ট দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশিদ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তবে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়নি। পরে সম্পূরক চার্জশীটে ২০১০ সালে আসামী করা হয় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সাংসদ সালিমুল হক কামাল ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে।

এরপর ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুবেদ রায় এই মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা ও দুদক আইনের৫(২) ধারায় ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন। আলোচিত এ মামলায় দুদক ও আসামিপক্ষ মোট ১৬ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। মোট ২৩৬ কার্যদিবস শুনানির পর মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।

এদিকে মামলার শুরু থেকে খালেদা জিয়ার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক খান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, এ জে মো. আলী, মওদুদ আহমদ খালেদার পক্ষে লড়ে আসছিলেন। সব শুনানিতেই তাঁর মামলটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছিলেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী ছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল। এই আইনজীবী আদালতে বলেন, দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা ও দুদক আইনের ৫এর ২ ধারা প্রমান করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। যার সর্বোচ্চে শাস্তি যাবজ্জীবন ও সমপরিমান অর্থ ফেরত। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে খালেদা জিয়া এ মামলায় ৩৪২ ধারা মতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ছয় দিন বক্তব্য দেন।

এর আগে বিচার প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে বারবার উচ্চ আদালতে গেছেন। তার অনাস্থার কারণে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনবার এ মামলার বিচারক বদল করেছে সরকার। শুনানিতে হাজির না হওয়ায় তিনবার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। এই মামলায় ছয় আসামীর তিন জন্য বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড.কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন। বিএনপির চেয়াারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাঁচ মামলায় এটিই প্রথম রায়।

এই রায়ের ফলে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির রায় হবে। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে রায় হয়েছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক সেনাপ্রধান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের। বিশেষ জজ আদালত -৫এর বিচারক ড. মো আখতারুজ্জামানের আদালত এই দিন নির্ধারন করেছে।

এমজে/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি