ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

জুম’আর দিনের গুরুত্বপূর্ণ করণীয়গুলো জেনে নিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৪, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৯:৩৩, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

জুম’আর দিন মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটি অনেক মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতের। বিশ্বনবি হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সপ্তাহের এ দিনটিকে শ্রেষ্ঠ দিন বলেছেন। তাই কোনো মুসলমানের উচিত নয় জুমআর নামাজ থেকে বিরত থাকা।    

জুম`আর দিনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু করণীয় কাজ রয়েছে। এই কাজগুলো প্রত্যেক মুসলমানের জেনে নেওয়া ও আমল করা উচিত। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-       

◉ জুম’আর দিন গোসল করা। (বুখারীঃ ৮৭৭, ৮৭৮)। পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসাবে সেদিন নখ, চুল, বগলের নিচের ও নাভীর নিচের লোম কাটা একটি ভাল কাজ।
◉ মিস্ওয়াক করা। (বুখারীঃ ৮৮৭, ইঃফাঃ ৮৪৩)  
◉ গায়ে তেল ব্যবহার করা। (বুখারীঃ ৮৮৩)
◉ উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ আদায় করা। (ইবনে মাজাহঃ ১০৯৭)  
◉ জুম’আর সালাতের জন্য কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা। (বুখারীঃ ৮৮০)
◉ মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধুমপান না করা। (বুখারীঃ ৮৫৩) (ধূমপান করা সবসময়ের জন্যই হারাম)
◉ আগে আগে মসজিদে যাওয়া। (বুখারীঃ ৮৮১)  
◉ পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া। (আবু দাউদঃ ৩৪৫)
◉ হাঁটার আদব মেনে মসজিদে গমন করা।
◉ পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফযীলত অন্তরে জাগরূক রাখা।    
◉ মসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দুই রাকাত `তাহিয়্যাতুল মসজিদ` নামায পড়া। (বুখারীঃ ৪৪৪) (যেকোন সময় মসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়তে হয়)
◉ খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে তখনও দু’রাকা’আত ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ সালাত আদায় করা ছাড়া না বসা। (বুখারীঃ ৯৩০)
◉ মুসুল্লীদের ফাঁক করে মসজিদে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া। (বুখারীঃ ৯১০ ও ৮৮৩)
◉ মুসুল্লীদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে আগানোর চেষ্টা না করা। (আবু দাউদঃ ৩৪৩ ও ৩৪৭)
◉ কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা। (বুখারীঃ ৯১১, মুসলিমঃ ২১৭৭ ও ২১৭৮)
◉ মুসুল্লীদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। (তিরমিযীঃ৫০৯, ইবনে মাজাহঃ ১১৩৬)
◉ ইমাম সাহেব মিম্বরে এসে হাজির হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাসবীহ-তাহলীল, তাওবা- ইস্তিগফার ও কুরআন তিলাওয়াতে রত থাকা।    
◉ মনোযোগ সহ খুৎবা শোনা ও চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব। (বুখারীঃ ৯৩৪, মুসলিমঃ ৮৫৭)
◉ ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা বদল করে বসা। (আবু দাউদঃ ১১১৯)
◉ ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা। (আবু দাউদঃ ১১১০, ইবনে মাজাহঃ ১১৩৪)
◉ খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হলেও ইমাম থেকে দূরে উপবেশনকারীরা বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
(আবু দাউদঃ ১১০৮)
◉ খুৎবাহ`র সময় কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। (নাসায়ীঃ ৭১৪, বুখারীঃ ৯৩৪)
◉ খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব দানে শরীক হওয়া জায়েজ।
(বুখারীঃ ১০২৯, মুসলিমঃ ৮৯৭)
◉ জুম’আর দিন ফজরের নামাজে ১ম রাক’আতে সূরা সাজদা (সূরা নং-৩২) আর ২য় রাকা’আতে সূরা ইনসান (দাহর)(সূরা নং-৭৬) পড়া। (বুখারীঃ ৮৯১)
◉ সূরা জুম’আ ও সূরা মুনাফিকুন দিয়ে জুম’আর সালাত আদায় করা। অথবা সূরা আলা ও সূরা গাশিয়া দিয়ে জুম’আ আদায় করা। (মুসলিমঃ ৮৭৭ ও ৮৭৮)
◉ জুম’আর দিন ও জুম’আর রাতে বেশী বেশী দুরুদ পাঠ করা। (আবু দাউদঃ ১০৪৭)
◉ জুম`আর দিন বেশী বেশী দোয়া করা। (বুখারীঃ ৯৩৫)
◉ জুম’আর দিন জুম’আর পূর্বে মসজিদে যিকর বা কোন শিক্ষামুলক হালকা না করা।অর্থাৎ ভাগ ভাগ হয়ে, গোল গোল হয়ে না বসা,যদিও এটা কোন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হোক না কেন। (আবু দাউদঃ ১০৮৯)
◉ জুম’আর দিন সূরা কাহফ পড়া। এতে পাঠকের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেন। (হাকেমঃ ২/৩৬৮, বায়হাকীঃ ৩/২৪৯)
◉ ওজু ভেঙ্গে গেলে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া। অতঃপর আবার ওজু করে মসজিদে প্রবেশ করা।   
(আবু দাউদঃ ১১১৪)
◉ একান্ত উযর না থাকলে দুই পিলারে মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায় সালাত আদায় না করা। (হাকেমঃ ১/১২৮)
◉ সালাতের জন্য কোন একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই সালাত আদায় করা (আবু দাউদঃ৮৬২)। অর্থাৎ আগে থেকেই নামাজের বিছানা বিছিয়ে জায়গা দখল করে না রাখা। বরং যে আগে আসবে সেই আগে বসবে।
◉ কোন নামাজীর সামনে দিয়ে না হাঁটা। (বুখারীঃ৫১০)
◉ এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোন কিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। (আবু দাউদঃ ১৩৩২)  
◉ জুম’আর ফরজ নামাজ আদায়ের পর মসজিদে ৪ রাকা’আত সুন্নাত সালাত আদায় করা। (বুখারীঃ ১৮২, মুসলিমঃ ৮৮১, আবু দাউদঃ ১১৩০)
◉ যেখানে জুম’আর ফরজ আদায় করেছে, উত্তম হল ঐ একই স্থানে সুন্নাত না পড়া। অথবা কোন কথা না বলে এখান থেকে গিয়ে পরবর্তী সুন্নাত সালাত আদায় করা। (মুসলিমঃ ৭১০, বুখারীঃ ৮৪৮)       
◉ হে আল্লাহ, আমাদেরকে সবগুলো আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

পরিশেষে, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত জুমআর দিনের করণীয় কাজগুলো যথাযথ আদায় করা। জুমআর নামাজ গুরুত্বসহকারে আদায় করা। আল্লাহ যেন প্রত্যেক মুসলমানকে জুম’আর নামাজ আদায় করার ও ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় যারা জুমআ থেকে দূরে ছিলেন তাদেরকে নিয়মিত জুমআর নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করেন।          
এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি