ঢাকা, রবিবার   ১১ মে ২০২৫

জ্বর আমাশয়ের চিকিৎসায় আমরুল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৫৮, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:০৮, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

আমরুল একটি ওষুধী গাছ। এর রয়েছে অনেক গুণ। এই গাছ ব্যবহার করে নানাবিধ অসুখ থেকে আরোগ্য লাভ করার সুয়োগ রয়েছে। এই গাছের গুণাবলি তুলে ধরেছেন ড. তপন কুমার দে তার ‘বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় গাছ-গাছড়ার’ বইয়ে। একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-

১) আম দোষ দূর করে বলে এটির এক নাম আমরুক, যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।

২) টাটকা পাতার রস ধুতরার মদকতা নিবারণ করে এবং রক্ত আমাশয় রোগে হিতকর।

৩) আমরুল জ্বর নাশক। জ্বর চিকিৎসায়, আমাশয় এবং স্কার্ভি রোগে ব্যবহৃত ওষুধের অন্যতম ভেষজরুপে আমরুল পরিচিত।

৪) শাক রান্না করে খেলে ক্ষুধা বৃদ্ধি হয়। এটি হজমীকারক।

৫) কোন স্থানে ফোঁড়ায় যন্ত্রণা হলে আমরুলের পাতা বেটে প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা লাঘব হয়। পাতা গরম জলে বেটে ফোঁটায় পুলটিস দিলে ফোঁড়া ফেটে যায়।

৬) বিছা কামড়ালে আমরুলের পাতার পাতার রস যন্তণা লাঘব করে, পাতা হতে রগড়ে নিয়ে বেদনার স্থানে প্রলেপ দিলে প্রদাহ ও যন্ত্রণা কমে যায়।

৭) পুরাতন আমাশয় রোগে মাখন তোলা দুধের সঙ্গে আমরুল পাতা সিদ্ধ করে দিনে দুই থেকে তিন বার খেলে বিশেস উপকার হয়।

৮) মুখের দুর্গন্ধনাশে ও দন্ত শোধনের জন্য আমরুল ব্যবহৃত হয়।

৯) আমরুল পাতার রস অল্প চিনির সঙ্গে মিশিয়ে সরবতের মত খেলে আমাশয় রোগজনিত পিপাসার শান্তি হয়।

১০) শিশুদের বুকে সর্দি বসে গেলে অথবা অল্প কাশিঁ হলে মূলসহ আমরুল পাতার এক চামচ রস গরম করে দিনে একবার বা প্রয়োজনে দুইবার খাওয়ালে জমা সর্দি উঠে যায়। সরিষার তেলের সঙ্গে আমরুলের রস মিশিয়ে গরম করে বুকে পিঠে মালিশ করলে আরও ভাল হয়।

১১) অনেকে টক খেতে ভালবাসেন, কিন্তু খেলে অম্ল হয়। এক্ষেত্রে আমরুল ব্যবহার শ্রেয়। কারণ এতে আছে অম্ল, মধুর ও কষায় এ তিনটি রসের সমন্বয়। তাই আমরুল অম্লপিত্ত রোগ না বাড়িয়ে অতৃপ্ত রুচিকে তৃপ্ত করে।

১২) গায়ে চুলকানি অনেক সময় পাঁচড়া হয়ে যায়। মনে হয় যেন দাদ হয়েছে। এমন ক্ষেত্রে আমরুল পাতার রস গায়ে মাখলে উপশম হয়।

১৩) মূত্রগ্রহ রোগ হলে- অর্থাৎ প্রস্রাবের বেগ হয় কিন্তু হয় না। অনেক ক্ষেত্রে অপারেশনের দরকার হয়। এরুপ ক্ষেত্রে আমরুল পাতার রস দুই চা চামচ করে প্রতিদিন চার বার আধা কাপ পানি মিশিয়ে খেলে ওই অসুবিধা সেরে যায়।

পরিচিতি-

আমরুল ছোট ছোট, সরু লতানো উদ্ভিদ। এটি মাটিতেই প্রসারিত হয়। আম (অপক্ক দ্রব্য), রুক বা রোগ নাশ করে বলে একে কোথাও আমরুক বলে। পাতায় তিনটি করে হৃৎপিন্ড আকারের টক স্বাদের পত্রক থাকে বলে একে চুকাত্রিপতীও বলা হয়। কোথাও কোথাও এটিকে আম্বলীও বলে। সাধারণত এটি বাড়ির আনাচেকানাচে ও পোড়া জমিতে এবং কখনওবা ভাঙ্গাবাড়ির গায়ে দেখা যায়। শিকড় থেকে গুচ্ছাবদ্ধভাবে প্রায়ই চারটি করে সাত থেকে ১০ সেন্টিমিটাপর লম্বা সরু দণ্ডের/বৃন্তের মাথায় তিনটি পত্রক বিশিষ্ট পাতা ছাতার ন্যায় গজায়। ‍বৃন্তের/ডাঁটার গোড়া থেকে গজানো লম্বা দণ্ডের মাথায় ছোট ছোট হলুদ রং এর ফুল হয়। ফল আকারে যবের মত। প্রতিটি ফলের মধ্যে ছোট ছোট অনেক বীজ থাকে। অনেকে একে সূষণী শাক বলে ভুল করে থাকেন। এ দুটি শাকের মধ্যে তফাৎ হলো সুষণী শাকের পাতায় চারটি পত্রক থাকে এবং এটি স্বাদেও টক, অম্ল নয়।

 

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি