ঢাকা, শুক্রবার   ৩০ মে ২০২৫

ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব: তারেক রহমান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১১, ২৯ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা না করায় রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি- জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করুন। ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোনো কিছু নেয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

তারেক রহমান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে দীর্ঘ দেড় দশকে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে বর্তমানে। গণঅভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেয়া এই সরকার হয়তো বৈধ। তবে এই সরকার কোনোভাবেই কিন্তু জবাবদিহিমূলক নয় এবং জনগণের কাছে এই সরকারের জবাবদিহি করার কোনো সুযোগও নেই। 


তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ার কারণেই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে একটি স্থিতিশীল সরকার না থাকায় কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না। ইতোমধ্যে শত শত শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আরও অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সেক্টরে এ ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণ সরাসরি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে প্রস্তুত। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গণতন্ত্রের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব এরই ভেতর দেওয়া হয়েছে। সংস্কারের ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দলের তেমন কোন আপত্তি নেই। তবে সংস্কার নিয়ে অযথা সময়ক্ষেপণে আপত্তি অবশ্যই রয়েছে।

‘শুধু রাজনৈতিক দলের নয়, রাজনৈতিক দলগুলো বাইরেও বিভিন্ন সংগঠনও এ ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। এ কারণেই আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে যদি উদ্দেশ্য সঠিক থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে- তাহলে ডিসেম্বরের ভেতরে নির্বাচন দিন। তবে আমি এটাও মনে করি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে সংস্কার প্রস্তাব শেষ করে (যেসব সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে) ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব।’ 

তারেক রহমান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই জনগণের কোনো যোগাযোগ নেই। জনগণের দুঃখ-দুর্দশা সমস্যার ব্যাপারে অনেক উপদেষ্টা অবগত নয়। তাদের কেউ কেউ অফিসে বসে ফাইলপত্র দেখে, সমস্যা চিহ্নিত করে হয়তো সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছে। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া, প্রশাসননির্ভর হয়ে, ফাইল ওয়ার্ক দিয়ে যদি সব সমস্যার সমাধান করা যেত, তাহলে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল রাজনীতির দরকার হতো না। 

দেশের চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। সরকার বা সরকার প্রধানের চিন্তা-চেতনা জনগণের ওপরে চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা থেকে স্বৈরাচারের জন্ম হয়। রাষ্ট্র ও জনগণের উপর যাতে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা না হয়, সেজন্য রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। জনগণের ভোট ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা করা যায়।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (ভার্চুয়াল), শিক্ষাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ্, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি