তিনটি ট্রলারসহ ২১ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
প্রকাশিত : ২১:০৩, ১৬ জুলাই ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে থেকে ফেরার পথে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনের কাছে মেরুল্ল্যা নামক এলাকায় নাফ নদ থেকে তিনটি ট্রলারসহ ২১ জেলে অপহৃত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রলার মালিকদের অভিযোগ, এই অপহরণের সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা জড়িত।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে টেকনাফ ফেরার পথে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।
এ তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিটির পরিচালক সাজেদ আহমেদ সাজেদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ঘাটে মাছ ধরতে যাওয়া তিনটি ট্রলারসহ ২১ মাঝিমাল্লাহকে ধরে নিয়ে গেছে। মূলত মাছ শিকার শেষে ঘাটে ফেরার পথে সেন্টমার্টিনের অদূর থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায় বলে বোট মালিকদের কাছ থেকে জেনেছি। এ ধরনের ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মাঝে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
বোট মালিকরা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার শেষে সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী ঘাট থেকে অর্ধশতাধিক মাছ ধরার বোট সাগরে মাছ শিকারে বের হয়। মাছ শিকার শেষে বুধবার বিকেলে টেকনাফ ঘাটে ফেরার পথে সেন্টমার্টিনের মেরুল্ল্যা এলাকায় সাগরে আয়ুব মাঝি, আবদুল হামিদ মাঝি ও নুরু মাঝিদের ধাওয়া করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি তিনটি বোটসহ ২১ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি (মগরা)। এখন মিয়ানমারের মেরুল্ল্যা খালে আরাকান আর্মির হেফাজতে তাদের বোট নৌঙর করে রাখা হয়েছে।’
মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে তিনটি বোটসহ ২১ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। এতে সাগরে মাছ শিকারে থাকা আরও শতাধিক মাঝিমাল্লারা ভয়ের মধ্য আছেন। এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটলেও স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না। যার কারণে জেলেরা অনিরাপদে রয়েছেন।’
এদিকে সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ১১ জুন। পরদিনই কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কায়ুকখালী ঘাট থেকে সাগরে যাত্রা করে দুটি ট্রলার। ১৫ জন মাঝিমাল্লাকে নিয়ে যাওয়া ট্রলার দুটি ১৪ জুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে ধাওয়া করে ধরে ফেলে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এ ঘটনার পর থেকে আরাকান আর্মির ভয়ে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখে ওই ঘাটের জেলেরা। এই পরিস্থিতিতে আজ বুধবার ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটল।
বিজিবির বলছে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদ সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৩০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অপহৃত হন ১৫১ জন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় কোস্ট গার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
এসএস//
আরও পড়ুন