ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পদ্মরাগ

প্রকাশিত : ১৬:১০, ২৭ জুন ২০১৯

হঠাৎ তোমায় কেমন যেন নিলাভ পরিবর্তন দেখাচ্ছে,

যেমন করে বর্ষায় মেঘলা আকাশ, শরৎ নীল-সাদা।

তোমার নেত্র তোমার গাত্র তোমার চঞ্চলতা ও দৃষ্টি,

আমি তোমার দিকে তাকাতে পারি না তাই,

চোখ ফিরাই বিস্তীর্ণ নীল আকাশে।

 

তোমার মুখ খানি যেন প্রখর রোদ্রে মুটিয়ে যাওয়া

একটি ডুমুর কোন শিতল জলের স্পর্শে এসে,

সতেজ হয়ে উঠেছে উজ্জ্বল বর্ণে।

 

তোমার ঠোঁট দুটো যেন এলোভেরার মতো টলমলে,

তাতে দুফোঁটা বৃষ্টি কণায় ঠিক যেন মনে হচ্ছে,

 

পদ্মপাতায় দুটো বিন্দু জলের রিনিকঝিনিক।

অজান্তেই যদি দৃষ্টিতে দৃষ্টি পরে যায় তখন যেন

সৃষ্টি হয়, এক অবুজ বালকের মধু মাখা ক্ষণ।

তাই আমি তাকাই না তাকাতে পারি না।

 

মৃত্তিকায় চোখ বুলাই তাকাতে পারি না তোমার লোচনে,

কিন্তু মৃত্তিকা বুকে ঠিক দেখতে পাচ্ছি তোমাকে,

এ যেন তোমার চোখে চোখেই তাকিয়ে।

 

তোমার ওই নির্ভুল নকশা কাটা সুদীর্ঘ অঙ্গে খুজে পাই শৈল্পিকতা,

যেন এক খাজ কাটা শঙ্খ যা পবিত্র স্থানে ধ্বনি তুলে,

দেবীর আরাধনায়।

 

যদিও শিল্প শব্দের মানে জানি না কিন্তু শিল্প খুজে পাই, আমি কোনও শিল্পি নই।

এত পরিবর্তনের মাঝে, হঠাৎ সেদিন তুমি নীল শাড়ি পড়েছিলে।

ঠিক যেন পদ্মবিলে হাজারো পদ্মের মাঝে একটি নীলপদ্ম।

 

নীলাম্বরী রুপে তুমি যেই আসলে সম্মুখে আমার, আমি সব কিছু

ভুলে যাই, নিমিষেই ভেস্তে গেলো আমার সব ভাবনা।

তোমার শৈল্পিক মাধুর্যে।

 

আমি তখন সে তীর্যক সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে গিয়েছিলাম অনুরাগে বলেছিলাম,

তুমি আর কখনও শাড়ি পড়ে বিশেষ করে নীল শাড়ি পড়ে,

আমার সামনে আসবে না বলে দিলাম।

ঘুঙুর ধ্বনিতে বললে, আমি  কাউকে দেখাতে শাড়ি পড়েছি? বয়ে গেছে,

না পারলে আকাশ পানেচাও, আমি ফের বললাম না পদ্ম!

অজান্তেই বেড়িয়ে আসলো নামটা।

 

না তুমি আর নীল শাড়ি পড়ে আসবে না আমার সামনে। তুমি হয়ত কষ্ট পেয়েছিলে

কিংবা অন্য কোনও কারণ! নিঃশব্দে একা একা বাতাসে বলেছিলে।

‘নাহ ভাবছি আর শাড়ি পড়বো না’।

 

আমি অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি কথা রাখনি,

 

ফের সেই শিল্প রুপে দেখা দিলে, পড়নে নীল রঙা শাড়ি।

পূবালী হাওয়ায় ভেসে চলে বিনোদ বেণীর কেশ।

তোমার ওই নকশাকার দেহ আমার কাছে শুধু দেবী, ধ্রুপদি কিংবা কামিনী নয়।

ইন্দ্রে প্রবল ইচ্ছা জাগে শঙ্খয় ফুৎকার ধ্বনি তুলি। আরাধনায় মত্ত হই,

আর তুমি আশীর্বাদ করো।

 

পার্বতীর জন্য অপেক্ষায় নয় এ বাউন্ডুল, সে ধ্যানে মত্ত।

নারী প্রকৃতির অংশ, নারী সৃষ্টি, নারী ধ্বংস, কামনায়।

নারি তুমি সুন্দর তুমি মহা প্রলয়ের ত্রীবন্দর।

 

এ বাউন্ডুল শুধু সুন্দর পূজারী যেখানে কামনা থাকে না।

নারী? সেতো পাঁজর কাঠি, বিকানো বস্তু, কিন্তু সুন্দর?

‘সুন্দর’ স্বয়ং ঈশ্বরের স্বরূপ প্রকাশ।

লেখক: মাস্টার্সের শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ, সিলেট-৩১০০।


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি