ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে নিজেকে সুরক্ষা করবেন যেভাবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ | আপডেট: ১৯:৪২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

শীতকাল আসার আগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু'তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েকটি হাসপাতালে গত কয়েক সপ্তাহে ফ্লু'য়ের উপসর্গ নিয়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর ফ্লু এবং কোভিড-১৯' এর উপসর্গ একই রকম হওয়ায় ফ্লু'য়ের উপসর্গ দেখা দেয়ার পর মানুষের মধ্যে কিছুটা আতঙ্কও দেখা যাচ্ছে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। করোনাভাইরাসের মত এই রোগেও শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ হয়ে থাকে এবং এর উপসর্গও সর্দি-জ্বরের উপসর্গের মতই।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর বিশ্বের জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৯ ভাগ মানুষ ফ্লু'তে আক্রান্ত হয়। অর্থাৎ বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় একশো কোটি মানুষ সংক্রমণের শিকার হয়, যাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৫০ লাখ মানুষের সংক্রমণের মাত্রা তীব্র হয়ে থাকে। আর ফ্লু'তে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর সারাবিশ্বে তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মারা যায়।

ফ্লু'র উপসর্গ
বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালে এবং বর্ষার শেষে ফ্লু'য়ের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সাধারণ সর্দি-জ্বর ও ফ্লু'র উপসর্গ একইরকম হওয়ায় মানুষ অনেক সময় দুটির পার্থক্য করতে পারে না। ফ্লু হলে সাধারণ সর্দি জ্বরের মতই মাথা ব্যাথা, গলা ব্যাথা, মাংসপেশিতে ব্যাথা, হাঁচি, শুকনো কাশি, জ্বর, স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসার মত উপসর্গ দেখা দেয়।

তবে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএস' এর তথ্য অনুযায়ী সাধারণ সর্দি-জ্বর ও ফ্লু'য়ের প্রধান পার্থক্য দু'টি। একটি হলো ফ্লু'য়ের উপসর্গ খুব কম সময়ের মধ্যে দেখা দেয়। অর্থাৎ হঠাৎ করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তীব্র জ্বর আসার মত উপসর্গ দেখা দেয়। অন্যদিকে সর্দি-জ্বরের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ধীরে জ্বর বাড়তে থাকে।

আর ফ্লু'তে আক্রান্ত হলে মানুষ হঠাৎ করে শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করে, যা সাধারণ সর্দি-জ্বরের ক্ষেত্রে হয় না।

ফ্লু থেকে যেভাবে সুরক্ষা পেতে পারেন

ফ্লু'তে আক্রান্ত হলে অধিকাংশ মানুষ কয়েকদিনের মধ্যে নিজ থেকেই সুস্থ হয়ে যায়। তবে অনেকক্ষেত্রেই অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসময় ধরে ফ্লু'তে ভুগতে পারে মানুষ।

ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাঁপানি জনিত সমস্যা বা ক্যান্সারের মত রোগ থাকলে সাধারণ ফ্লু'য়ের সমস্যাও মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক সাদিয়া সিরাজ বলেন, ফ্লু এবং সর্দি জ্বরের ক্ষেত্রে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার পদ্ধতিগুলো প্রায় একইরকম।

"ফ্লু হলে ঠাণ্ডা থেকে দূরে থাকা এবং নিজেকে উষ্ণ আবহাওয়ার মধ্যে রাখা খুবই প্রয়োজন। এছাড়া পরিমিত বিশ্রাম এবং ঘুম ফ্লু থেকে আরোগ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।"

এছাড়া জ্বরের তীব্রতা ও শরীরের ব্যাথা কমানোর উদ্দেশ্যে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএসের ওয়েবসাইটে। পাশাপাশি পরামর্শ দেয়া হয়েছে প্রচুর পরিমাণ পানি ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার।

ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত প্লেট, গ্লাস ব্যবহার করা বা ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকেও ফ্লু সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাই ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে থাকার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

ফ্লু'য়ের ভ্যাকসিন দেয়া হলে সাধারণত ফ্লু'তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এই ভ্যাকসিন প্রতিবছর একবার করে দিতে হয়। হার্টের সমস্যা, ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মত রোগে যারা ভুগছেন, তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে জটিলতা এড়াতে ফ্লু'য়ের ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

এছাড়া করোনাভাইরাসের ঝুঁকি কমাতে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, কোভিড চিকিৎসার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ফ্লু'য়ের ভ্যাকসিন দেয়ার সুপারিশ করেছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএস। সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি