ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪

বিআইজেএফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৩১, ৪ জুন ২০১৮ | আপডেট: ২৩:৩১, ৪ জুন ২০১৮

তথ্যপ্রযুক্তি বিটে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন সংগঠনটির কয়েকজন সদস্য। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংগঠনটিতে আসলেই দুর্নীতি হয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। তদন্তের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা।

গত মে মাসের ২২ তারিখ এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পরিচালক আবু মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত ঐ বিবৃতিতে অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিআইজেএফের দুই সদস্যের (দৈনিক ডিজিটাল সময় পত্রিকার সম্পাদক খালেদ সাইফুল্যাহ ও অনলাইন পত্রিকা বেস্টনিউজ ডট কম ডট বিডির সম্পাদক খন্দকার হাসান শাহরিয়ার) অভিযোগ আমলে নিয়ে মগবাজারে অবস্থিত বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। সেখানে বলা হয়, “...এর অনিয়ম সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে যা সরেজমিনে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন”।

তদন্ত সম্পর্কিত চিঠি পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এর আগে গত ৬ মে আগারগাঁও –এ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন সংগঠনের ঐ দুই সদস্য। সেখানে অভিযোগ করা হয় যে, নতুন সদস্য নিবন্ধন বিষয়ে সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ধারা-৭ লংঘন করা হয়েছে। এছাড়াও নিয়ম অনুযায়ী, সংগঠনটির সংশোধিত গঠনতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হয়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে। এছাড়াও বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির বৈধতা নিয়েও অভিযোগ জানানো হয় ঐ অভিযোগ পত্রে। বিগত বছরগুলোতে সঠিক নিয়মে অনুমোদিত কোন অডিট রিপোর্ট নেই বলেও দাবি করা হয়। আর সেকারণে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ ও সংশ্লিষ্ট বিধি, ১৯৬২ অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন অভিযোগকারীরা। 

এ বিষয়ে অভিযোগকারী সদস্য খালেদ সাইফুল্যাহ বলেন, ‘গত প্রায় এক দশক ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নানান অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে আসীন রয়েছেন। বিভিন্ন আয়োজনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নামে লাখ লাখ টাকা চাঁদা উঠানো হলেও এর কোনো সঠিক হিসাব-নিকাশ দাখিল করা হয়নি এবং কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তাই ধারণা করছি, গত এক দশকে সংগঠনটিতে বড় ধরনের দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। এদিকে সদস্যপদ প্রদান নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও দীর্ঘদিনের।’

সংগঠনটির সদস্য পদ দেওয়া নিয়েও দুর্নীতি রয়েছে জানিয়ে খালেদ বলেন, ‘যাদের সদস্যপদ পাবার কথা, তারা দীর্ঘদিন ধরে সদস্যপদ পায় না; আবার সদস্য হওয়ার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অনিয়মের মাধ্যমে অনেককে সদস্যপদ প্রদান করা হয়। সর্বশেষ নিয়মবহির্ভূতভাবে ৩১ জনকে সদস্য প্রদান করা হলে বিতর্ক মাথাছাড়া দিয়ে ওঠে, যাকে ঘিরে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকসহ চারজন সদস্যের পদত্যাগের খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।’

অভিযোগকারী অপর সদস্য খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, ‘বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ ও সংশ্লিষ্ট বিধি, ১৯৬২ অনুসারে বিআইজেএফের কোনো প্রকার হিসাবপত্রাদির দলিলপত্র, অডিট রিপোর্ট, নির্বাচন যথানিয়মে সম্পাদন করা হচ্ছে না। এমনকি বিআইজেএফের বর্তমান ইসি কমিটি যেই সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছে, সেই গঠনতন্ত্রটিও সমাজসেবা অধিদফতরে জমা দিয়ে কোনো প্রকার অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ফলে বর্তমানে বিআইজেএফের কোনো অনুমোদিত সংবিধান নাই, অনুমোদিত কার্যনির্বাহী পরিষদ নাই, এমনকি অনুমোদিত কোনো প্রকার অডিট রিপোর্ট নাই।’

এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাতে কেউ কোনো প্রকার কথা বলতে না পারে, সে জন্য বিআইজেএফের ওয়েবসাইট, ফেসবুক গ্রুপ বন্ধ রাখার পাশাপাশি গোপনে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির অপচেষ্টাও করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এই সদস্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি আরাফাত সিদ্দিকী সোহাগ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি আসলে তদন্তাধীন বিষয়। আমি যত দূর জানি, সমাজসেবা অধিদফতর থেকে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। এটি যেহেতু তদন্তাধীন বিষয়, এটি নিয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছি না।’

তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এ বিষয়ে বক্তব্য দেবেন বলেও জানান সংগঠনটির সভাপতি।

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি