ঢাকা, বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪

বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের শাহাদতবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

আজ ১৪ ডিসেম্বর। বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মহানায়ক ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর যুদ্ধরত অবস্থায় শহীদ হয়েছিলেন।

বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ১৯৪৫ সালের ৬ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে মুলাদী মাহবুদজান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। 

বরিশাল বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন। ওই বছরই তিনি ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সফলভারে প্রশিক্ষণ শেষে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কমিশন লাভ করেন এবং ১৭৩ মূলতান ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নে যোগদান করেন। ছয় মাস পর তাকে রিসালপুর মিলিটারি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ বদলি করা হয়।

১৯৭১ সালে কারা কোরামে কর্মরত থাকাকালীন ১৫ দিন ছুটি নিয়ে রিসালপুরে ফিরে যান। একদিন পর শিয়ালকোট সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মোহদীপুর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে যোগ দেন। তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে যুদ্ধের দায়িত্ব দেয়া হয়।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুক্তিযুদ্ধে ক্রমাগত সফলতায় বিজয়ের মাত্র দুইদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। বরিশালের টগবগে তরুণ সামরিক অফিসার মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সর্বক্ষণ একটাই চিন্তা মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করা। ১৪ ডিসেম্বর সন্মুখ যুদ্ধে তিনি শহীদ হয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রেহাইচরে। তিনি ছিলেন ৭নং সেক্টরের মোহদীপুর সাব সেক্টর কমান্ডার। ওই সময় ৭ নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ ডাক বাংলোয় যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ, কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য সেনা কর্মকর্তারা এক সভায় মিলিত হন। সে সভায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের রণনীতি প্রস্তুত করা হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর তার বাহিনী নিয়ে কয়েকটি নৌকায় করে মহনন্দা নদী পার হয়ে শহরের রেহাইচরে অবস্থান নেন।

মহানন্দা নদীর দক্ষিণ পাশে বর্তমান সেতুর প্রান্ত সীমায় ছিল পাকিস্তান সেনাদের ঘাঁটি। সেখানে সম্মুখ যুদ্ধে পরদিন ১৪ ডিসেম্বর মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর শহীদ হন। পরদিন ১৫ ডিসেম্বর সোনা মসজিদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের আরেক বীরযোদ্ধা শহীদ মেজর নাজমুল হকের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্থানীয় প্রশাসন দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ, কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ মাহফিল, দোয়া, আলোচনা সভা ও গরিবদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ।


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি