ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফর

বেশ কিছু প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে প্রবাসীরা

অখিল পোদ্দার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :

প্রকাশিত : ০৮:৩৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরে বেশ কিছু প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এখানকার প্রবাসী বাঙালিরা। গেল তিনদিন বাঙালিদের অক্সিজেন ব্যাংক হিসেব পরিচিত জ্যাকসনের হাইটসে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তাদের কিছু দাবির কথা।

সিলেট হবিগঞ্জের বাসিন্দা জসীম চৌধুরী গেল ২৩ বছর ধরে বাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে। তাঁর মতোই ঢাকার সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী দাবি করেছেন বাংলাদেশ বিমান পুনরায় চালুকরণের। বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট অনেকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ইতোপূর্বে এ নিয়ে অনেক দাবি জানানো হয়েছে। প্রবাসীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট শুরুর যাবতীয় উদ্যোগ নেয়ার দাবি করেছেন সবাই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের নেতা হিসেবে ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিয়েছিলেন। বিশ্বসভায় দাঁড়িয়ে সদ্য স্বাধীন দেশের নেতার দেওয়া সেই বক্তৃতা আজও আন্তর্জাতিক মহলে সমাদৃত। শেখ হাসিনাও বহুবার জাতিসংঘে এসেছেন। বেশ গুরুত্বের সংগে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় বিষয় তুলে ধরেছেন। তবে যতবারই তিনি এ দেশে এসেছেন প্রবাসীরা দাবি জানিয়েছেন তাদের অনেক চাওয়াপাওয়ার।
দেশে প্রবাসীদের রেখে আসা সম্পদের নিরাপত্তা প্রদানের কথাও বলেছেন বেশ ক’জন। প্রবাসে থাকার কারণে অনেকের সম্পদ দেশে বেদখল হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সম্পদ দখলের চেষ্টা নিয়মিত ঘটনা। এ সব বন্ধ করতে সরকার কঠোর হবে-এমনটা আশা করছেন সবাই। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে হয়রানি কমানোর জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে বসবাসকারী সাংবাদিক জাহিদ রহমান। তবে এখনো পুরোদমে বন্ধ না হওয়ায় মৃদু উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। দেশের বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি, লাগেজ হারিয়ে যাওয়া, অকারণে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় অনেকেই ক্ষুব্ধ। দেশে যাওয়া-আসার পথে বিমানবন্দরে সাধারণ প্রবাসীদের হয়রানি নিয়ে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের দাবি তাদের।
প্রবাসীদের দেখভালের জন্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের এ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছ কোনো ধারণা নেই। প্রবাসীদের নানা ধরনের সেবা দেওয়ার জন্য এই মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি সময়োপযোগী করার দাবিও উঠে এসেছে ব্যবসায়ীদের কথাবার্তায়। 
আমেরিকার বাংলাদেশি অধ্যুষিত নগরীগুলোতে কনস্যুলেট সেবা বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত লোকবলের ব্যবস্থা এখনো হয় নি। নিউইয়র্কের কনস্যুলেট অফিসেও সাধারণ প্রবাসীদের সেবা প্রদানে লোক স্বল্পতার কারণে কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হয়। এই সেবা গ্রহণ দ্রুত ও সহজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি রয়েছে প্রবাসীদের। 
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা যাতে সহজে দেশে বিনিয়োগ ও সঞ্চয় করতে পারে সে ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণাপত্র চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীরা।এ ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে চান তাঁরা। চান বিনিয়োগের নিরাপত্তা। এই কাজের জন্য সরকারকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করার কথা বলেছেন তাঁরা।এতে প্রবাসীরা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারও সমৃদ্ধ হবে বলে মত দিয়েছেন এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী বিশ্বজিত সাহা।
প্রবাসীদের জন্য ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস চালু করার দাবিও উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সাখাওয়াত চনচলের কথায়। প্রবাসের ব্যস্ত জীবন থেকে স্বল্প সময়ের জন্য তাঁরা দেশে যান। দেশে যেকোনো কাজের জন্য তাঁরা দীর্ঘসূত্রতার সম্মুখীন হন। তাঁদের ধারণা, ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস চালু করলে এই সমস্যা দুর হবে।
ফ্লোরিডা স্টেট যুবলীগের সভাপতি সঞ্জয় সাহার অভিমত, সময় এসেছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের জন্য নিজস্ব ভবন নির্মাণের। নিউইয়র্ক এখন বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংখ্যা উল্লেখ করার মতো। তাই সুপরিসর জায়গায় নিজস্ব ভবনে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস হবে, সেখানে প্রবাসীদের জন্য মিলনায়তন, পাঠাগার থাকবে এমনপ্রত্যাশা সবারই।সবমিলে প্রবাসের বাঙালিরা যাতে মিলেমিশে ভালো থাকতে পারেন তেমন দাবি উঠে এসেছে সবার কথাবার্তায়।

এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি